আইআইইউসি শিক্ষক-শিক্ষার্থীর নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন

  © টিডিসি ফটো

আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ পরিচয়ে বারবার শিক্ষক-শিক্ষার্থী নির্যাতনের প্রতিবাদে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সামনে মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের উদ্যোগে এ কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় শাখা বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মুনতাসির মাহমুদ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখার যুগ্ম আহবায়ক ইনজামুল হক রামিম, প্রিয়ম আহমেদসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

মানববন্ধনে আইআইইউসি শিক্ষার্থী ও চট্টগ্রাম ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মুনতাসির মাহমুদ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম আমাদের প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনো মারামারি ছিল না, হানাহানি ছিল না, ভার্সিটি এরিয়ায় কেউ সিগারেট পর্যন্ত খেত না। কিন্তু ছাত্রলীগ নামধারী কতিপয় গুন্ডা জোর করে হল দখল করার পর থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা একের পর এক হামলার স্বীকার হচ্ছেন।

তিনি বলেন, ডাইনিং থেকে টাকা ছিনতাই, ছাত্রদের ল্যাপটপ, মোবাইল ছিনতাই চলছে। এমনকি নকল করে পাস করিয়ে দেওয়ার জন্যে শিক্ষকদের উপর চাপ দেওয়া হচ্ছে। যে ভার্সিটি ছিল মাদক মুক্ত শান্তিপূর্ণ, সেই ক্যাম্পাস এখন মাদক আর নেশার আড্ডাখানা। অতি দ্রুত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ছাত্রসমাজ এখন থেকে এদের প্রতিহত করবে৷

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের আহবায়ক ইনজামুল হক রামিম বলেন, প্রাইভেট ভার্সিটিতে বাবা মা তার সন্তানদের নিরাপদ পরিবেশের কথা ভেবেই পাঠায়। সেখানেও আজ এভাবে সন্ত্রাসীদের দ্বারা শিক্ষার্থীরা হামলার শিকার হচ্ছে। এসব মেনে নেওয়া যায় না।

প্রসঙ্গত, গত ২৭ জানুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়টির উসমান (রা.) হলের মো. আদনান নামে শরিয়াহ অনুষদের কুরআনিক সায়েন্স ডিপার্টমেন্টের দ্বিতীয় সেমিস্টারের এক শিক্ষার্থীকে শিবির সন্দেহে মারধর করেন ছাত্রলীগ পরিচয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরে শিক্ষকেরা এসে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান। একইভাবে এর কিছুদিন আগে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ড. মো শামীমুল হক চৌধুরী লাঞ্ছনার শিকার হন।

দীর্ঘদিন যাবৎ এসব হামলা ও মারধরের ঘটনায় গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ব্যানারে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধন থেকে এসব হামলার বিচার দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন চলাকালে ছাত্রলীগ পরিচয়ধারীদের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাকবিতণ্ডা হয়। এসময় দায়িত্বরত শিক্ষকরা এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এসব পরিস্থিতি বিকেল চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়টির নোটিশ বোর্ডে রেজিস্ট্রার কর্নেল (অব.) মো. কাশেম স্বাক্ষরিত দুটি নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশে অনিবার্য কারণ দেখিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ