২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৪০

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ শিক্ষার্থী নর্থ সাউথে, কম কোনটিতে?

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী  © টিডিসি সম্পাদিত

দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯২ সালে। দীর্ঘ প্রায় ৩৩ বছরে উচ্চশিক্ষার এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এখন শতাধিক। বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করা একটি বড় অংশের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য অন্যতম ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা এসব উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন ভাড়া বাড়ি থেকে স্থায়ী ক্যাম্পাসে ফিরছে। এতে করে শিক্ষার্থীরাও এসব প্রতিষ্ঠানে আগ্রহী হচ্ছেন।

দেশে বর্তমানে অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১১০টি। এর মধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় থাকা ১০৩টি উচ্চশিক্ষালয়লোতে সব মিলিয়ে শিক্ষার্থী তিন লাখ ৫৮ হাজার ৪১৪ জন। তার মধ্যে ছাত্রী এক লাখ ২৫ হাজার ১০ জন, তার মধ্যে ২ জন তৃতীয় লিঙ্গ এবং বিদেশি শিক্ষার্থী ৮২৬ জন। সম্প্রতি ইউজিসির প্রকাশিত বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) ‘৫০তম বার্ষিক প্রতিবেদন-২০২৩’-এ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গবেষণা, ব্যয়, প্রকাশনা ও শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মূল বিষয়গুলো এখন হয়ে গেছে গৌণ। পাবলিক এখন হয়ে গেছে জাতীয় রাজনীতি, মারামারি, দুষ্ট চিন্তা ও পদ পদবির জন্য নানা ধরনের কূট কৌশলের কেন্দ্র। এগুলো যখন বাবা-মা বা শিক্ষার্থীরা দেখবে, তখন তো তারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে চাইবে, না এটাই স্বাভাবিক। কেউ তো আর চাইবে না, তার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়গুলো অপব্যয় করতে— কামরুল হাসান মামুন, শিক্ষাবিদ ও অধ্যাপক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শিক্ষার্থী সংখ্যায় এবারও এগিয়ে রয়েছে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি। ২০২৩ সালের হিসেব অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ২৩ হাজার ১১৩ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ২১ হাজার ৩০৩, তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ১৭ হাজার ৩২৫ এবং চতুর্থ সর্বোচ্চ ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ১২ হাজার ২২০। এদিকে সর্বনিম্ন ৫৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে ইউনিভার্সিটি অব স্কিল এনরিচমেন্ট এন্ড টেকনোলজি-এ।

ইউজিসির বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী সংখ্যা বেড়েছে। এ বাড়ার হার ৪.৮৩ শতাংশ। ২০২২ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মোট শিক্ষার্থী ছিল ৩ লাখ ৪১ হাজার ৯৮ জন। আর ২০২৩ সালে ১৭ হাজার ৩১৬ জন শিক্ষার্থী বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৫৮ হাজার ৪১৪ জনে। 

আরও পড়ুন: মেরিটাইমে সবোর্চ্চ সোয়া ৫ লাখ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বনিম্ন ৭৯৫, ঢাবি-বুয়েটসহ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে কত?

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী বাড়ার কারণ জানিয়ে শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ার কারণ হচ্ছে- সেখানে ডিসিপ্লেন আছে এবং রাজনীতি নেই। যার কারণে, বাবা-মা নিশ্চিন্ত থাকে সবসময়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সার্টিফিকেট পেয়ে যায়। দেশের অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এখন ভালো করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মূল কাজ পড়াশোনা ও গবেষণা নিয়ে থাকা এবং নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করা। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এগুলো তো বর্তমানে হয়ে উঠছে না। 

তিনি আরও বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মূল বিষয়গুলো এখন হয়ে গেছে গৌণ। পাবলিক এখন হয়ে গেছে জাতীয় রাজনীতি, মারামারি, দুষ্ট চিন্তা ও পদ পদবির জন্য নানা ধরনের কূট কৌশলের কেন্দ্র। এগুলো যখন বাবা-মা বা শিক্ষার্থীরা দেখবে, তখন তো তারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে চাইবে, না এটাই স্বাভাবিক। কেউ তো আর চাইবে না, তার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়গুলো অপব্যয় করতে।