অভিভাবক ছাড়াই চলছে ৩২ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর লোগো
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর লোগো  © টিডিসি সম্পাদিত

ভিসি (ভাইস-চ্যান্সেলর), প্রো-ভিসি (ভাইস-চ্যান্সেলর) ও ট্রেজারার— যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম সঠিকভাবে চলতে এই তিনটি পদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী, এ তিন পদে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর। কিন্তু ভিসি ছাড়াই কার্যক্রম চলছে বাংলাদেশে এমন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বর্তমানে ৩২টি।

সম্প্রতি উচ্চশিক্ষার তদারক সংস্থা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) থেকে প্রকাশিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগকৃত ভিসি-ট্রেজারারদের সর্বশেষ তালিকা থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়। জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভিসি-প্রোভিসি কিংবা ট্রেজারার না থাকলেও বছরের পর বছর কাউকে নিয়োগ না দিয়ে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চালাচ্ছেন মালিকরা। ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক ড. মো. সুলতান মাহমুদ ভুঁইয়া স্বাক্ষরিত তালিকা থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।

ইউজিসির তালিকাটি দেখুন এখানে

ভিসি এবং ট্রেজারার দুটি পদই শূন্য এমন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা রয়েছে ১২টি। এছাড়া প্রো-ভিসি পদটি শূন্য রয়েছে অন্তত ৮০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ট্রেজারার পদে শূন্যতা রয়েছে অন্তত ২৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভিসি ও ট্রেজারার দুটি পদ শূন্য রয়েছে এমন বিশ্ববিদ্যালয়ে সংখ্যা রয়েছে ১২টি এবং ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি, প্রোভিসি কিংবা ট্রেজারার কোনটিই নেই।

অভিযোগ রয়েছে, একাধিক ইউনিভার্সিটি মালিকরা ভিসি-ট্রেজারার নিয়োগ না দিয়ে কিংবা ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চালাচ্ছেন বছরের পর বছর। আবার প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কোন ভিসি কিংবা ট্রেজারার নিয়োগ হয়নি এমন বিশ্ববিদ্যালয়ের নামও রয়েছে এ তালিকায়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী, ভিসি প্রো-ভিসি এবং ট্রেজারার এ তিনটি পদে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় চ্যান্সেলর। তবে প্রাথমিক কাজটি করে থাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইউজিসির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছ থেকে প্রস্তাব (প্যানেল) আসার পর তারাই সরকারের কাছে এসব পদে নিয়োগের জন্য প্রস্তাব পাঠায়। সেটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে যায়।

আইন অনুযায়ী, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এই তিন পদে নিয়োগ দিতে একেকটি পদের বিপরীতে তিনজন অধ্যাপকের নামের প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। সেগুলোর ইউজিসির মাধ্যমে যাচাই করে সরকারের উচ্চপর্যায়ে পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হিসেবে রাষ্ট্রপতি একজনকে নিয়োগ দেন।

শুধু ভিসি পদ শূন্য আছে ৩২ বিশ্ববিদ্যালয়ে
যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির পদ শূন্য রয়েছে, তারমধ্যে রয়েছে- দি পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, লিডিং ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, প্রাইম ইউনিভার্সিটি, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বরেন্দ্র ইউনিভার্সিটি, হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, খাজা ইউনূস আলি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেল্থ সায়েন্সেস, রাজশাহী সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটি, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, জার্মান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, সিসিএন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি সৈয়দপুর, বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি কাদিরাবাদ, বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি কুমিল্লা, এন পি আই ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজি, সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি, বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব স্কিল এনরিচমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজি এবং বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি খুলনা।

ভিসি ও ট্রেজারার পদ শূন্য যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে
আন্তর্জাতিক ইসলামী ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রাম, দি পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, লিডিং ইউনিভার্সিটি, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা, এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, জার্মান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, এন পি আই ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি এবং বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি খুলনা।

ভিসি ও প্রোভিসি কিংবা ট্রেজারার কোনটিই নেই যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে
দি পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, লিডিং ইউনিভার্সিটি, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা, এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি খুলনা, জার্মান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, এন পি আই ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি।

শিক্ষা কার্যক্রমের অনুমতি দেয়নি ৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে
রুপায়ন এ. কে. এম শামসুজ্জোহা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহ মাখদুম ম্যানেজমেন্ট ইউনিভার্সিটি, মাইক্রোল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্সেস অ্যান্ড টেকনোলজি, লালন বিজ্ঞান ও কলা বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাস্টিস আবু জাফর সিদ্দিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

জানা গেছে, বর্তমানে ১১৫টি বেরসকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এরমধ্যে মামলা চলমান থাকা নাম সর্বস্ব কিংবা বন্ধ হয়ে যাওয়া ৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে ইবাইস ইউনিভার্সিটি, দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা, কুইন্স ইউনিভার্সিটি এবং আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি।


সর্বশেষ সংবাদ