নবায়নযোগ্য জ্বালানির আলোকবর্তিকা অধ্যাপক শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী
বাংলাদেশে বিগত দেড় দশক আগেও বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় ছিল মাত্র ৪৫শতাংশ মানুষ। সরকারি ও বেসরকারি নানামুখী উদ্যোগে সেটি বর্তমানে শতভাগে পৌঁছেছে। দেশের শতভাগ মানুষকে আলোকিত করতে পাশ কাটিয়ে আসতে হয়েছে নানা আর্থ-সামাজিক প্রতিবন্ধকতাও। প্রচলিত ধারার জীবাশ্ম জ্বালানিসহ পুরোনো ধারণার নানা উদ্যোগের পাশাপাশি সরকারের নব এ উদ্যোগে আলোক যাত্রায় সারথি হয়েছে দেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত। আর শুরু থেকেই সরকারের এসব প্রকল্পে যারা নীতি-নির্ধারণী, পরামর্শক, সম্ভাব্যতা যাচাই ও প্রযুক্তিগত নকশায় অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম একজন বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চের (সিইআর) পরিচালক অধ্যাপক শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী এবং তার গবেষণাগার সিইআর।
অধ্যাপক শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস কৌশলে (ইইই) স্নাতক শেষে প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন সরকারের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে (পিডিবি)। চাকরিতে থাকা অবস্থায় ২০০৪ সালে তিনি স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে যান জার্মানিতে। সেখানে সর্বোচ্চ ফলাফল নিয়ে উত্তীর্ণ এবং তার অন্যান্য আবিষ্কারে খ্যাতির পাশাপাশি সুযোগ করে দেয় সেখানে স্থায়ী হওয়ারও। তবে দেশ মাতৃকার তরে অসীম প্রীতি বিদেশে কোনো সুযোগ-সুবিধাই আটকাতে পারেনি এই গবেষককে। দেশে ফিরে হাত উঁচিয়ে ধরেছেন দেশের জ্বালানি খাতের, আলোর মশাল নিয়ে এগিয়েছেন নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের উজ্জ্বল দিশারী হয়ে।
শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী যখন দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে কাজ শুরু করেন তখন দেশে এ নিয়ে জানাশোনা ছিল খুব কম মানুষেরই। তার মতে, আমি যখন ২০০৭ এর দিকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি বা সৌর শক্তি নিয়ে কথা বলি তখন এটি খুব বেশি গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। তবে সময়ের সাথে সাথে দেশের এ পরিস্থিতি বদলেছে। এখন সবাই নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিষয়ে সচেতন এবং এটি নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী।
শুরু থেকেই নানা চ্যালেঞ্জ ছিল এবং সামনেও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে জানিয়ে এই গবেষকের অভিমত—দেশের জ্বালানি ব্যবস্থাকে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব করতে পাড়ি দিতে হবে আরও বন্ধুর পথ। বর্তমানে বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য এবং টেকসই শক্তির ক্ষেত্রে অধিকতর গবেষণা, এর ব্যবহার, দক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং গবেষণা ও উন্নয়নে দিনরাত সমান করে কাজ করছেন এই স্বপ্নদ্রষ্ট্রা, আলোর পথযাত্রী।
আরও পড়ুন: ভবিষ্যৎ পৃথিবীর জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে টেকসই কাজ করতে হবে
জার্মানির ওল্ডেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে উচ্চতর শিক্ষাগ্রহণ শেষে বাংলাদেশে ফিরে বেসরকারি উচ্চশিক্ষালয় ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ইউআইইউ) যোগদান করেন ২০০৭ সালে। তবে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে ফিরতে গুণী এই গবেষকের দুটি শর্তের মধ্যে ছিল—নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিষয়ে কাজ করা সম্ভব এমন একটি গবেষণাগার প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা। এর বাইরে তিনি সক্রিয় উদ্যমে কাজ করেছেন নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিষয়ে আন্তর্জাতিক সেমিনার ও কনফারেন্স আয়োজন নিয়েও। তার আগে রাজধানীর নটর ডেম কলেজ, বিজ্ঞান কলেজ এবং তেজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সম্পন্ন হয় এই গুণী মানুষের পূর্ববর্তী শিক্ষাস্তর।
দেশপ্রেমে ব্রতী হওয়া অদম্য এ গবেষকের এসব অর্জনের পেছনে ত্যাগও কম নয়। ছয় ভাইবোনের মধ্যে পাঁচজনই যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এবং নিজের সুযোগ ছিল জার্মানি, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যে স্থায়ী হয়ে একটি সুন্দর জীবন কাটিয়ে দেওয়ার। কিন্তু দেশ মাতৃকার তরে এক স্বাপ্নিক এবং সময়ের সাহসী যোদ্ধার লড়ে যাওয়ার যে প্রত্যয় তাকে আর মোহিত করে কে—তিনি দৃঢ় প্রত্যয়ে লড়ে যান দেশের তরে। অধ্যাপক শাহরিয়ার বলেন, আমার সুযোগ ছিল এবং এখনও সুযোগ আছে— কিন্তু আমি দেশকে নিয়েই কাজ করতে চাই।
শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী যখন দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে কাজ শুরু করেন তখন দেশে এ নিয়ে জানাশোনা ছিল খুব কম মানুষেরই। তার মতে, আমি যখন ২০০৭ এর দিকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে কথা বলি তখন এটি খুব বেশি গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। তবে সময়ের সাথে সাথে দেশের এ পরিস্থিতি বদলেছে। এখন সবাই নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিষয়ে সচেতন।
ইউআইইউতে যোগদানের আগে তার সুযোগ হয়েছিল দেশের প্রথম সারির অন্য আরো কয়েকটি উচ্চশিক্ষালয়ে যোগদান করার। তাতে যোগদানের জন্য প্রস্তুতির অংশ হিসেবে পরামর্শ নিতে যান ইউআইইউ’র তৎকালীন উপাচার্য এবং বুয়েটে থাকাকালীন নিজের শিক্ষক অধ্যাপক ড. এম রিজওয়ান খানের কাছে। তখন অধ্যাপক ড. এম রিজওয়ানের পরামর্শেই অধ্যাপক শাহরিয়ার যুক্ত হন ইউআইইউতে। শিক্ষকতার পাশাপাশি পুরোদস্তুর এ গবেষকের আজকের এ অবস্থানে আসতে ত্যাগও কম নয়। যে ল্যাব নিজের হাতে প্রতিষ্ঠা করেছেন, সেখানে কাজ করতে করতে প্রায়ই অধ্যাপক শাহরিয়ারকে শেষ করতে হয়েছে অসংখ্য রাত।
ইউআইইউতে যোগদানের পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি অধ্যাপক শাহরিয়ারকে। ২০১০ সালে ইউআইউর তৎকালীন ধানমন্ডির ক্যাম্পাসে নিজের নকশায় প্রতিষ্ঠা করেন সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ, তখন এ প্রকল্পে অর্থায়ন করে বিশ্বব্যাংক। ইউআইইউ’র তৎকালীন ধানমন্ডির ক্যাম্পাসে চালু হওয়া সম্পূর্ণ সৌর জ্বালানিনির্ভর এ ল্যাবটিতে দেশের জ্বালানি ব্যবস্থাপনা, নীতিমালা গঠন এবং এর যথাযোগ্য ব্যবহারের উপায় নিয়ে গবেষণায় অর্থায়ন করে এ আর্থিক সহায়তা প্রতিষ্ঠানটি।
আরও পড়ুন: নবায়নযোগ্য জ্বালানি গবেষণার বাতিঘর ইউআইইউ’র সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ
এখন পর্যন্ত সিইআর নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং টেকসই পরিবেশবান্ধব জ্বালানি সরবরাহে মোট ২০০টির উপরে প্রকল্প বাস্তবায়নে কারিগরি সহযোগিতা করেছে তাদের নিজেদের গবেষণা কেন্দ্রের মাধ্যমে। এছাড়াও সিইআরের হাত ধরে সরকারি ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার সহায়তায় এখানে প্রশিক্ষণ পেয়েছেন ২ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী ও প্রকৌশলী।
এছাড়া বর্তমান সরকারের নবায়নযোগ্য শক্তি বিষয়ক বেশকিছু নীতিমালা প্রণয়নেও যুক্ত ছিল অধ্যাপক শাহরিয়ার ও তার সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ। ল্যাবটির হাত ধরেই ২০১৭ সালে সূর্যের আলো থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ প্রথমবারের মতো যুক্ত হয় বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডে। এ প্রকল্পটি জামালপুর জেলার সরিষাবাড়িতে পিডিবি প্রাঙ্গণে আট একর জায়গার ওপর গড়ে ওঠে। সূর্যের আলো থাকলে বর্তমানে এ প্ল্যান্ট থেকে ৩ দশমিক ২৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হয় জাতীয় গ্রিডে। বিশাল এ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ডিজাইন করেছেন অধ্যাপক শাহরিয়ার।
অধ্যাপক শাহরিয়ার ও তার সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ ল্যাবের হাত ধরেই বাস্তব রূপ পায় বাংলাদেশের প্রায় বেশিরভাগ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এর মধ্যে বাংলাদেশের প্রায় সকল মিনি-গ্রিড সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র, কাপ্তাই সোলার প্যানেলভিত্তিক প্রকল্প অন্যতম। সংশ্লিষ্টদের মত, নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে কাজের ধারা শুধু দেশেই সীমাবদ্ধ রাখেনি সিইআর, দেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানির এই ‘পাওয়ার হাউস’ আলো জ্বালিয়েছে নাইজেরিয়া, কেনিয়াসহ কয়েকটি দেশের সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রেও। কাজ করছে তাদের পরামর্শক হিসেবে।
গুণী এ অধ্যাপক ও তার সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ ল্যাবের অর্জনের পাল্লাও কম ভারি নয়। দেশে এবং দেশের বাইরে নানা সময়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে কাজের বিষয়ে স্বীকৃতি হিসেবে দেশি-বিদেশি সম্মানজনক পুরস্কার অর্জন করেছে সিইআরের উদ্ভাবনী গবেষণা প্রকল্প । এর মধ্যে ‘পিয়ার-টু-পিয়ার স্মার্ট ভিলেজ গ্রিড’ প্রকল্পটি ২০১৬ সালে জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায়। মরক্কোতে সংস্থাটির ২২তম জলবায়ু সম্মেলনে ‘ইউএন মোমেন্টাম ফর চেঞ্জ’ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে। সাধারণত ভবিষ্যৎ পৃথিবীর জন্য যে-সব প্রযুক্তিকে আলোকবর্তিকা হিসেবে বিবেচনা করা হয় বৈশ্বিক প্রেক্ষিতে তাদেরই এমন পুরস্কারে ভূষিত করে জাতিসংঘ।
আরও পড়ুন: ‘উপাচার্য মহোদয়কে দুটি শর্ত দিয়ে ইউআইইউতে যোগ দিয়েছিলাম’
এছাড়াও একই বছরে ‘পিয়ার-টু-পিয়ার স্মার্ট ভিলেজ গ্রিড’ প্রকল্পটি ‘ইন্টারসোলার অ্যাওয়ার্ড ২০১৬’ জয় করার মধ্য দিয়ে জার্মানির মিউনিখ থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সবচেয়ে সম্মানজনক অর্জন ঘরে তোলে । একই বছরে বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘অদম্য বাংলাদেশ পুরস্কার আসে সিইআরের ‘স্মার্ট সোলার ইরিগেশন সিস্টেম’—শীর্ষক প্রকল্পে। ছোট বড় সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ১৩টি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছে সিইআর। আর এ সকল প্রকল্পের প্রধান গবেষক হিসেবে ছিলেন অধ্যাপক শাহরিয়ার
বর্তমানে ‘ডিমান্ড রেসপন্স অ্যানাবলড স্মার্ট গ্রিড’—নামে একটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছেন সিইআরের গবেষকরা। তাদের এ উদ্ভাবনী প্রকল্প স্বয়ংক্রিয়ভাবে জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুতের লোড ব্যবস্থাপনা এবং বিদ্যুৎ চুরির বার্তা সেবাদাতার কাছে পাঠাতে পারবে। মোবাইলের মাধ্যমে গ্রাহকের বৈদ্যুতিক সেবার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে এমন ধারণার এ প্রযুক্তিভিত্তিক এ প্রকল্প গবেষণার জন্য প্রথমবারের মতো প্রায় ৪ কোটি টাকার গবেষণা অনুদান পেয়েছে বাংলাদেশ সরকারের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কেন্দ্র থেকে ।
অধ্যাপক শাহরিয়ার ও তার উদ্ভাবনী গবেষণা প্রকল্পসমূহ অনেকগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—২০১৬ সালে জাতিসংঘের মোমেন্টাম ফর চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড (জাতিসংঘের ২২ তম জলবায়ু সম্মেলন ২০১৬ মারাক্কেশ, মরক্কো), ইন্টারসোলার অ্যাওয়ার্ড ২০১৬ ( মিউনিখ, জার্মানি), এডুকেশন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড ২০১৮ (মুম্বাই, ভারত), এশিয়ান ফটোভোলটাইক ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ (সাংহাই, চায়না), স্মার্টার ইউরোপ অ্যাওয়ার্ড ২০২২ (মিউনিখ, জার্মানি), ওয়ার্ল্ড সোসাইটি অফ সাসটেইনঅ্যাবল এনার্জি টেকনোলজিস-এর ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড ২০২২ ( ইস্তাম্বুল, তুরস্ক), এনার্জি গ্লোব অ্যাওয়ার্ড ২০২২ (অস্ট্রিয়া)। এছাড়াও তার উদ্ভাবন ও গবেষণা কাজের জন্য তিনি ২০১৬ এবং ২০১৮ সালে জাতীয় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সপ্তাহে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড এবং ২০২০ সালে বেসিস ন্যাশনাল আইসিটি অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
দেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে কাজ শুরুর বিষয়ে অধ্যাপক শাহরিয়ারের অভিমত, পিডিবিতে থাকার সময় উপলব্ধি করেছিলাম, প্রাকৃতিক গ্যাস ছাড়া আমাদের নিজস্ব অন্য কোনো উত্তোলনযোগ্য জীবাশ্ম জ্বালানির সম্ভার না থাকায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে কাজ শুরু বলে জানান শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী। তার মতে—আমাদের প্রাকৃতিক গ্যাসের ভান্ডারও ক্রমশ কমতির পথে। ফলে নবায়নযোগ্য শক্তিই যে আমাদের ভবিষ্যৎ হতে যাচ্ছে—তা নিয়ে সন্দেহ নেই। তাছাড়া জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ালে কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং অন্যান্য গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরিত হয়, যেগুলো বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য দায়ী। পৃথিবীর তাপমাত্রা নিরাপদ মাত্রায় রাখতে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে রেখে যেতে হলে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার ছাড়া উপায় নেই।
আগামীর পরিকল্পনা এবং তারুণ্যের প্রতি অধ্যাপক শাহরিয়ারের রয়েছে একগুচ্ছ পরামর্শ। তার মতে—সাফল্যের জন্য থাকতে হবে লেগে থাকার মানসিকতা। এর বাইরে ছোট ছোট ত্যাগ ও নিয়মিত পরিশ্রমই আনবে তারুণ্যের সাফল্য। গুণী এই অধ্যাপক এবং গবেষক জোর দিয়েই তারুণ্যের প্রতি আহ্বান করছেন হতাশ না হওয়ার জন্য। আর নিজের চলমান কাজগুলো নিরবে-নিভৃতে এগিয়ে নিয়ে দেশকে একটি স্বয়ংসম্পূর্ন এবং পরিবেশবান্ধব জ্বালানি কাঠামোয় দেখার ইচ্ছেও জানিয়েছেন তিনি।