জলবায়ু পরিবর্তনে ২০৫০ সালের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ হবে লাখো মানুষ

‘কালচার অ্যান্ড এডুকেশন ফর ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন’ শীর্ষক সেমিনার
‘কালচার অ্যান্ড এডুকেশন ফর ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন’ শীর্ষক সেমিনার  © ফাইল ছবি

জলবায়ু পরিবর্তনে ২০৫০ সালের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে লাখো মানুষ। এখনই কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত ‘কালচার অ্যান্ড এডুকেশন ফর ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তাদের আলোচনায় থেকে এই তথ্য জানা গেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ আর্কিটেকচার অ্যান্ড ডিজাইনের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামস ইন ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট (পিপিডিএম) এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইউনিভার্সিটি অডিটরিয়ামে যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে। এতে বক্তারা  বাংলাদেশে দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমনে উচ্চ শিক্ষা এবং উন্নত গবেষণার সুযোগ বিষয়ে আলোচনা করেন।  

আরো পড়ুনঃ এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও মানবিক সহায়তায় বাংলাদেশের সাফল্য তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস বিষয়ক দফতর এর সেন্ডাই ফ্রেমওয়ার্ক এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে কাজ করছে বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় যা দুর্যোগ ঝুঁকির তিনটি মাত্রা মোকাবেলার ওপর গুরুত্বারোপ করে। 

জাতিসংঘ মহাসচিবের দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি এবং জাতিসংঘের দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস বিষয়ক দফতরের (ইউএনডিআরআর) প্রধান মামি মিজুতোরি অনুষ্ঠানে মূল বক্তার আলোচনায় বলেন, ‘দুর্যোগের ঝুঁকিসমূহকে আমাদের আরো ভালোভাবে জানতে হবে, ঝুঁকি সম্পর্কিত সিদ্ধান্তগুলো সম্পর্কেও নিশ্চিত হতে হবে, দুর্যোগ সম্পর্কিত সবগুলো ডিসিপ্লিনকে এক ছাতার নিচে আনতে হবে যাতে করে ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পাওয়ার ক্ষেত্রে দুর্যোগ  কোনো বাধা হয়ে দাড়াতে না পারে।’

বিশ্ববিদ্যলয়ের উপ-উপাচার্য এবং ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ , পিএইচডি তার বক্তব্যে জাতীয় ও বৈশ্বিক পরিমন্ডলে দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অ্যাকাডেমিক প্রোগ্রাম এবং গবেষণা কার্যক্রমসমূহের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, ‘ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি চলমান দুর্যোগ সম্পর্কিত সমস্যাসমূহ এবং তাদের বৈচিত্র্যের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার পাশাপাশি দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং দুর্যোগ প্রশমনের গুরুত্বপূর্ণ সমসাময়িক ধারণাগুলির সাথে পরিচিত হতে বিশেষায়িত অ্যাকাডেমিক প্রোগ্রাম প্রস্তুত করেছে।’

এতে ইউনিভার্সিটির পিপিডিএম এর কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ ফেরদৌস তার আলোচনায় বলেন, ‘আমরা জেনেছি যে, যদি এখনই কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করা করা হয় তাহলে কীভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে আরো লাখো মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। তাই এই সেমিনার ছিল তথ্যসমৃদ্ধ এবং একই সাথে এটি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতেও আমাদের সহায়তা করবে। এই সেমিনারে বক্তারা বাংলাদেশে চলমান পরিবর্তন এবং প্রতিরোধ প্রক্রিয়ার পাশাপাশি আকাঙ্খার বিষয়েও আমাদের পথ দেখিয়েছেন। সন্দেহ নেই, এই পথে জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা অর্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

অনুষ্ঠান শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ আর্কিটেকচার অ্যান্ড ডিজাইন এর ডিন প্রফেসর ফুয়াদ হাসান মল্লিক। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ছাড়াও দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমনে শিক্ষার সুযোগ বাড়াতে জাতিসংঘের দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস বিষয়ক দফতর এর সহযোগিতার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন পিপিডিএম এর অ্যাসিসটেন্ট প্রফেসর ড. ইমন চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে আরো অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহুপাক্ষিক অর্থনৈতিক বিষয়াবলীর ডিরেক্টর জেনারেল ফাইয়াজ মুরশিদ কাজী, ব্র্যাকের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কেএএম মোর্শেদ, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার প্রফেসর মাহবুব রহমান, রেজিস্ট্রার ড. ডেভিড ড্যাউল্যান্ড, ইউনেস্কো বাংলাদেশের অফিসার-ইন-চার্জ প্রধান সু ভাইজ, পিএইচডি এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস।  

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়াও বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন কুটনৈতিক মিশন, সরকারি সংস্থা, জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা, বেসরকারি সংস্থা এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কমকর্তাবৃন্দ এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন।     

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামস ইন ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করে। এই প্রোগ্রামটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বাস্তবমুখী ক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছে। এই প্রোগ্রামে মাস্টার্স, ডিপ্লোমা এবং সার্টিফিকেট ডিগ্রি প্রদান করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ