গবিতে বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গণ বিশ্ববিদ্যালয় (গবি)-এ আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সেমিনার কক্ষে উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. মো. আমির হোসেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ এস তাসাদ্দেক আহমেদ। তিনি বলেন, স্বাধীনতা আমাদের অগ্রগতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। স্বাধীন দেশ হওয়ার কারনে আজকে আমাদের দেশের উন্নতি সম্ভব হচ্ছে। এক সময় পাকিস্তানের শোষণের কারনে আমরা পিছিয়ে ছিলাম, আজ আমাদের মুদ্রার মান পাকিস্তানের চেয়ে উপরে।
এই সব কিছুর জন্য আমি শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করছি বঙ্গবন্ধুকে। তিনি নির্যাতন, কারাভোগ করেও এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য কাজ করে গেছেন।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলে প্রথম জরিমানা দিলেন ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী
ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সাইন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জহিরুল ইসলাম খান বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর সৃষ্টি হয় পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান। এর পরেই শুরু হয় পূর্ব পাকিস্তানের উপর পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণ নিপীড়ন যা এই জাতির মধ্যে মুক্তির বীজ বোপনে মূখ্য ভুমিকা পালন করেন। যার ফলে আজকে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র।
ড. মোঃ আমির হোসেন মুক্তিযুদ্ধে নিজের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ছরিলাম ট্রেনিং সেন্টার থেকে মাত্র ১৫ বছর বয়সে যুদ্ধের জন্য প্রশিক্ষণ শুরু করি। পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের গেরিলা বাহিনীতে যোগদান করে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। গেরিলা বাহিনীতে যোগ দেওয়ার পর আমাদের একটাই লক্ষ্য ছিলো যে, যুদ্ধে জয়লাভ করেই আমরা ঘরে ফিরবো এবং এর মধ্যে যদি মরে যাই তবে অন্তত পাঁচ জন পাকবাহিনীকে মেরেই মরবো। একটি সম্মুখ যুদ্ধে আমার সামনেই ৮০ জন সহযোদ্ধারা শহীদ হয়। ভাগ্যক্রমে আমি বেঁচে যাই এবং বেঁচে আছি।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার পরে ধীরে ধীরে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশ কিন্তু বর্তমানে কিছু বাঁধার কারণে এগিয়ে যেতে পারছেনা। এক্ষেত্রে প্রধান কাজ নিজেদেরকে নিজ যায়গা থেকে উন্নয়ন করতে হবে। অন্যায় অবিচার থেকে বিরত থাকতে হবে। তবেই পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করবে ও দেশ উন্নয়ন হবে।
সমাপনী বক্তব্যে উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মোঃ আবুল হোসেন বলেন, গণ বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়েই যাত্রা শুরু করে। গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ্ চৌধুরী একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। আমি আশাহত হইনা, বর্তমানে যেমনই থাকুক একদিন দেখবো আমরা পূর্ণ স্বাধীনতা পেয়ে গেছি।
তিনি শিক্ষার্থীদের দিকনির্দেশনা দিয়ে বলেন, দেশের অনেক বই আছে যেগুলো মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা। সেই বইগুলো বেশি করে পড়বে তাহলেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জেগে উঠবে।
উল্লেখ্য, এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সকল অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধানগণ, সকল বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানের শেষ অংশে জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।