চাকরির বাজারে এগিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

গ্রিন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা
গ্রিন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা  © ফাইল ছবি

দেশের চাকরির বাজারে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তুলনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এগিয়ে রয়েছে। চাকরির বাজার উপযোগী বিষয় নিয়ে আসায় তাদের এই অগ্রগতি বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার বিষয়বস্তুতেও বিষয়টি স্পষ্ট।

ইউজিসি বলছে,  বেশি বেশি চাকরির বাজার উপযোগী সাবজেক্ট চালু করা, ক্লাবগুলোর মাধ্যমে যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধি, নিয়মিত প্রেজেন্টেশন, নিজেকে অন্যের সামনে উপস্থাপন করার দক্ষতার কারণে চাকরির বাজারে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এগিয়ে রয়েছে।

চাকরির বাজারে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এগিয়ে থাকার চিত্র উঠে এসেছে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জরিপেও। প্রতিষ্ঠানটির দেশের পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট ও অধ্যয়নরতদের উপর জরিপের ফল বলছে, চাকরির বাজারে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটরাই অগ্রগামী। যেখানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের কর্মসংস্থানের হার ৩২ শতাংশ, আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তা ৪৪ শতাংশ।

ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে এমন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৯৬টি। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার। এর মধ্যে প্রকৌশল ও টেকনিক্যাল সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পড়ালেখা করছেন ১ লাখ ৩৮ হাজার শিক্ষার্থী, ব্যবসায় প্রশাসনে ৭৮ হাজার, কলা ও মানবিক বিভাগে ৩৫ হাজার, বিজ্ঞানে ২২ হাজার, আইনে ২০ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছেন।

অন্যদিকে দেশের ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে ৩ লাখ ১৪ হাজার। এর মধ্যে প্রকৌশল ও টেকনিক্যাল নিয়ে পড়ছেন ৫৩ হাজার, কলা ও মানবিক বিভাগে ৪৪ হাজার ১৩১, সামাজিক বিজ্ঞানে ৫১ হাজার, বাণিজ্যে ৪৫ হাজার, আইনে ৮ হাজার শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছেন। 

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইউজিসি সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) ড. বিশ্বজিৎ চন্দ গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের দেশের চাকরির বাজারে যেসব বিষয়ের চাহিদা রয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেগুলো চালু করছে। দক্ষ জনবল তৈরিতে যেসব বিষয় কাজে লাগে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেবল সেই বিষয়গুলোর অনুমোদন নিচ্ছে।  এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই এখানকার শিক্ষার্থীরা চাকরির বাজারে এগিয়ে যাবে।

বিআইডিএসের রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট সিবান শাহানা বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের চাকরির বাজারে এগিয়ে থাকার ক্ষেত্রে দুটি কারণ পরিলক্ষিত হয়েছে। একটি হচ্ছে, চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান কিংবা ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে তাদের যোগাযোগ। অন্যটি হলো- বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়ার পরপরই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোনো না কোনো চাকরিতে যোগদান করেন। আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিসিএস বা সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নিতে কয়েক বছর চলে যায়। এটাই চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের এগিয়ে রাখছে।


সর্বশেষ সংবাদ