শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যখনই খুলুক, সিলেবাস সংক্ষিপ্ত হবে: প্রতিমন্ত্রী

  © প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন

দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খুললে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে সমাপনী পরীক্ষাসহ শিক্ষার্থীদের ক্লাসভিত্তিক মূল্যায়নের পরিকল্পনা করছে সরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যখনই খুলুক, এবার প্রাথমিকের সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যালয় খোলার পর কতটুক সিলেবাসের উপর পরীক্ষা নেওয়া হবে সেই পরিকল্পনা করা হচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমিকে (নেপ) সংশোধিত সিলেবাস তৈরি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয় সেপ্টেম্বরে যদি খোলে, কিংবা না খুললে কীভাবে পরীক্ষা নেওয়া যায় সে বিষয়ে সংশোধিত সিলেবাস প্রণয়নে আমরা কাজ হাতে নিয়েছি। যদি খোলা হয়, তাহলে এক ধরনের প্রস্তুতি আমাদের আছে, না হলে আরেক ধরনের প্রস্তুতি আমাদের নিতে হবে।

প্রাথমিক সমাপনীসহ ক্লাসভিত্তিক পরীক্ষা কীভাবে নেওয়া যায়, জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি তা নিয়ে কাজ করছে জানিয়ে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বন্ধের কোনো পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই। বরং এ পরীক্ষা আরও যুগপযোগী করতে একটি বোর্ড গঠনের চিন্তাভাবনা চলছে।

এডুকেশন রিপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইরাব) আয়োজিত ‘করোনায় প্রাথমিক শিক্ষায় চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক অনলাইন সেমিনারে সোমবার প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনা সংক্রমণের মধ্যে মার্চের মাঝামাঝি থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘ এ বন্ধে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনলাইন ও সংসদ টিভিকে ক্লাস নেয়া হচ্ছে। তবে আমরা সবাইকে এখানে অর্ন্তভূক্ত করতে পারিনি। এ বিষয়ে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।

তিনি বলেন, আগামী ৬ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কোন সিদ্ধান্ত এখনও নেয়া হয়নি। আর কবে খুলছে তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোনা যাচ্ছে ঈদের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলা হচ্ছে, এটা সর্ম্পূণ গুজব। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলার সিদ্ধান্ত হলে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে কিংবা তা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হবে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, করোনার কারণে চলতি শিক্ষাবর্ষ বাড়িয়ে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষ কমিয়ে আনারও পরিকল্পনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে বর্তমান শিক্ষাবর্ষ আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টেনে নেয়া যেতে পারে। আর সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলা হলে ডিসেম্বরের মধ্যে শিক্ষাবর্ষ শেষ করারও পরিকল্পনা রয়েছে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির ওপর।

এর আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন জানিয়েছিলেন, দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খুললে কতটুকু সিলেবাস পড়িয়ে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে সে বিষয়ে পরিকল্পনা করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি। আগামী সেপ্টম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে বা না খুললে কীভাবে পরীক্ষা নেয়া যায়— সেটি সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের জন্য সংশোধিত সিলেবাস প্রণয়ন করা হচ্ছে।

দেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব পর গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ এ সময়ের শিক্ষার ক্ষতি পোষাতে অনলাইনে ও সংসদ টিভির মাধ্যমে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সেখানেও অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থী পাঠের বাইরে। অন্যদিকে, সেপ্টেম্বরের আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ভাবছে না সরকার।


সর্বশেষ সংবাদ