প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন, বাস্তবায়ন হবে ৮ সিদ্ধান্ত
- শিউলি রহমান
- প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২০, ০৮:১৭ AM , আপডেট: ০২ জুলাই ২০২০, ০৮:১৭ AM
করোনাকালে প্রাথমিক শিক্ষায় বড় পরিবর্তন আসছে। সে আলোকে নতুন আটটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কাজ শুরুও করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এরমধ্যে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য ‘হ্যালো টিচার’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপস তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা এই অ্যাপস দিয়ে শিক্ষার্থীরা পছন্দের শিক্ষক বাছাই করে পরামর্শ নিতে পারবে।
জানা গেছে, সংসদ টেলিভিশনে প্রচারিত ক্লাসের মাধ্যমে ৫৯ থেকে ৫২ শতাংশ শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে। আর বেতারে শুরু হলে আরও ২০ থেকে ২৫ শতাংশের কাছে পৌঁছানো যাবে। তবে জরিপ মতে, ৯৮ শতাংশের বেশি মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে।
সেক্ষেত্রে অভিভাবকদের ফোন ব্যবহার করে হ্যালো টিচার অ্যাপসের মাধ্যমে শিশুরা তাদের প্রশ্নের উত্তর জানতে পারবে। গণিত, ইংরেজি, বাংলা, বিজ্ঞানসহ নির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়ের শিক্ষক বাছাই করতে পারবে তারা। টেলিভিশন ও রেডিওতে ক্লাস প্রচারের পর মোবাইল অ্যাপস তৈরি করে শিক্ষার্থীদের আরও কাছে পৌঁছানোর চেষ্টায় রয়েছে মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠে মনোযোগী করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। গুগল প্লে-স্টোর থেকে শিক্ষার্থীরা অ্যাপস ডাউনলোড করে তা ব্যবহার করতে পারবে। অভিভাবকরাও ব্যবহার করতে পারবেন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ বলেন, সরকারের আইসিটি বিভাগ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্প থেকে অ্যাপস তৈরিতে অধিদপ্তরকে সহায়তা করা হচ্ছে। শিগগিরই অ্যাপসটি চালু করা যাবে বলে আশা করেন তিনি।
অ্যাপস ছাড়াও প্রাথমিকে নতুন আরও সাতটি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সে মোতাবেক এখন থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাইনবোর্ডে বাংলায় নাম লিখতে হবে। নামের আগে ‘.....নং’ কথাটি ব্যবহার করতে পারবে না। গত সোমবার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বিষয়ে সংশ্নিষ্ট সবাইকে চিঠির মাধ্যমে নির্দেশ দেন। একেক স্থানে একেকভাবে বিদ্যালয়ের নাম লেখায় তা দৃষ্টিকটূ এবং বোঝাও কঠিন হওয়ায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গত ২৩ মে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম আল হোসেন এবং ডিপিই মহাপরিচালক ফসিউল্লাহ প্রাথমিক শিক্ষার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং শিক্ষকদের সাঙ্গে অনলাইনে সভায় মিলিত হন। এতেও নতুন সিদ্ধান্তের বিষয়ে সবাইকে অবহিত করা হয়।
নতুন সিদ্ধান্তের মধ্যে আরও রয়েছে, জুম অ্যাপস ব্যবহার করে প্রধান শিক্ষকরা সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের সাঙ্গে সভা করবেন; টেলিভিশনে ‘ঘরে বসে শিখি’ কার্যক্রমে বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থী যেন যুক্ত করতে অভিভাবকদের সঙ্গে শিক্ষকরা যোগাযোগ করবেন; সময়সূচি স্থানীয় মসজিদের মাইকের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে হবে।
স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের শিক্ষকরা প্রশ্নপত্র তৈরি করে স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে কিংবা ফোনে শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছে দিয়ে তা মূল্যায়নের ব্যবস্থা করবেন। এছাড়া ঈদুল আজহার আগেই প্রাথমিক শিক্ষার্থীদেরকে ‘কিডস অ্যালাউন্স’ দেওয়া হবে। বিধি অনুযায়ী একই রংয়ের শার্ট, স্কাট, প্যান্ট, টাই ও জুতা কেনার ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কর্মকর্তারা ‘রিকভারি অ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরি করে অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে পাঠাবেন।
এ ছাড়া প্রত্যেক বিদ্যালয়ের নামে ফেসবুক আইডি খুলতে হবে। শিক্ষকরা পাঠদান ভিডিও করে ফেসবুকে আপলোড দেবেন। বিদ্যালয়ের ভবনে ‘বাস্তবায়নে এলজিইডি’ না লিখে ‘বাস্তবায়নে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর’ লিখতে হবে। বিদ্যালয়ের সব ধরনের মেরামত ও স্লিপের কার্যাবলি যথাসময়ে শেষ করে প্রধান শিক্ষকদের নির্ধারিত তারিখে বিল ভাউচার দাখিল করতে হবে।