বিদ্যালয়ের কক্ষে থাকে ছাগলের পাল, ছাদে শুকানো হয় সিদ্ধধান
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২০, ০৬:৩২ PM , আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২০, ০৬:৩২ PM
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ নামার বাজার এলাকার বাতায়ন কিল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে রাখা হয়েছে ধানের বস্তা, অন্য কক্ষে রাতে বাঁধা হয় ছাগলের পাল, ভবনের ছাদে শুকানো হয় সিদ্ধধান। শিক্ষক না থাকায় ছাত্রভর্তি, পড়ালোখা ,পরীক্ষা কিছুই হয় না এ বিদ্যালয়ে। এতে অনেকটা পরিত্যক্ত ভবনে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি আরটিভি অনলাইনের একটি প্রতিবেদনে বিদ্যালয়টির এমন চিত্রই উঠে এসেছে।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত বিদ্যালয়বিহীন এলাকায় ১৫০০ বিদ্যালয় নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে নিঝুমদ্বীপের চার নম্বর ওয়ার্ডে এ বিদ্যালয়টি ২০১৬ সালে স্থাপন করা হয়। স্থাপনের পর থেকে স্থায়ীভাবে কোনও শিক্ষক নিয়োগ না দেওয়ায় আলোর মুখ দেখেনি বিদ্যালয়টি।
স্থাপনের পরে দুজন শিক্ষককে ডিপুটিশনে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নিয়োগের পর পরই তারা বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যায়। বর্তমানে বেসরকারি একটি এনজিওর একজন শিক্ষক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রীকে নিয়ে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছেন। দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা থেকে নিয়োগ নিয়ে বিদ্যালয়ে দুটি শ্রেণিতে ১৫-২০ ছাত্র-ছাত্রীকে পাঠদান দিচ্ছেন ইয়াসমিন আক্তার নামে একজন শিক্ষক।
ইয়াসমিন জানান, শিক্ষক না থাকায় গ্রামের অনেক শিশু এখন পড়ালেখা বাদ দিয়ে অন্য কাজ করছে।
মূলভূখণ্ড থেকে নিঝুমদ্বীপ শিক্ষায় অনেকটা পিছিয়ে তাই কর্তৃপক্ষ নিঝুমদ্বীপে বিদ্যালয়টি স্থাপন করে। নতুন এ বিদ্যালয়কে ঘিরে অনেকে বিদ্যালয়ের পাশে বসবাস গড়ে তোলে। কিন্তু শিক্ষক না দেওয়ায় গ্রামের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষায় কোনও কাজে আসেনি বলে জানান নিঝুমদ্বীপ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছাইফুল ইসলাম।
বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী রুপসী ও রুপবানের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, বর্তমানে বিদ্যালয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ালেখা চললেও তাতে নেয় অনুকূল পরিবেশ।বিদ্যালয় ভবনে এলাকার অনেকে ছাগল বাধা, ধান মজুত করা ও ধান শুকানোর কাজ করায় পড়ালেখা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানান তারা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ হাতিয়া উপজেলা সদরের পাশাপাশি অনেক বিদ্যালয়ে ৬-৭ জন করে শিক্ষক রয়েছে। কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করলে উপজেলা সদর কিংবা পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন থেকে শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয়টি ভালোভাবে চালাতে পারে।
হাতিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ভবরঞ্জন দাস জানান, শিক্ষক সল্পতার কারণে এ বিদ্যালয়টি চালু করা যাচ্ছে না। তবে পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয়ে গিয়ে এখানকার ছাত্র-ছাত্রীরা পড়ালেখা করতে পারে। আমি আশা করছি আগামী জানুয়ারিতে কয়েকজন শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয়টি চালু করবো।