ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান, আতঙ্কে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০১৯, ১০:৫৯ PM , আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৯, ১১:০৫ PM
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের শুকুরহাটি গ্রামে অবস্থিত ১৪ নম্বর শুকুরহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে নেওয়া হচ্ছে পাঠদান। এর ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক এবং শিক্ষকদের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক।
সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৫২ সালে ৫২ শতাংশ জমির উপর স্থাপতি হয় এ বিদ্যালয়টি। এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থী রয়েছে ১৬৫জন। প্রধান শিক্ষকসহ কর্মরত শিক্ষকের সংখ্যা পাঁচ জন।ওই বিদ্যালয়ে তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি পাকা ভবন নির্মাণ করা হয় ১৯৬৭ সালে। সেটি পরিত্যক্ত হওয়ার পর ১৯৯২-১৯৯৩ অর্থ বছরে তিন কক্ষ বিশিষ্ট আরেকটি পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। ওই ভবনটির বর্তমানে বেহাল দশা।ওই ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। পিলারে ফাটল ধরে বের হয়ে গেছে রড। ছাদ থেকে প্লাস্টার খসে খসে পড়ছে। ছাদ দিয়ে পানি পড়ে চেয়ার টেবিল, বেঞ্চ, বই খাতা ভিজে যাচ্ছে। ওই ভবনে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান দেওয়া হচ্ছে।
তবে আতঙ্কিত শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে অপারগতা প্রকাশ করায় মাঝে মাঝে বিদ্যালয়ের মাঠে গাছের তলায় ক্লাস নেওয়া হয়। দুই বছর ধরে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে ভবনের জরাজীর্ণ অবস্থা সম্পর্কে জানালেও কোন কাজ হয়নি। এক বছর আগে টিনের ছাপড়া তুলে ক্লাস নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তীব্র গরমের কারণে শিক্ষার্থীরা টিনের ওই ঘরে ক্লাস করতে রাজি হচ্ছে না।
ওই বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আসিফ মোল্লা জানান, আমাদের ভয়ের মধ্যে ক্লাস করতে হয়। মাঝে মাঝে ছাদ থেকে প্লাস্টার খসে পড়ে। বৃষ্টি হলে পানি পড়ে। আমাদের বই খাতা ভিজে যায়।একই শ্রেণির শিক্ষার্থী জবা বিশ্বাস জানায়, স্কুলের ভবনের খুব খারাপ অবস্থা। কখন কি বিপদ ঘটে সে ভয়ে অস্থির থাকি। পড়াশুনায় মন দিতে পারি না।
শুকুরহাটি গ্রামের বাসিন্দা ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. ওমর আলী বলেন, বাচ্চাকে স্কুলে পাঠিয়ে দুঃশ্চিন্তার মধ্যে থাকি। কখন কি ঘটে যায় কে জানে। অভিভাবক আর্জিনা বেগম বলেন, তার দুই ছেলে ওই বিদ্যালয়ে পড়ে। ছেলেরা ভয়ে স্কুলে যেতে চায় না। বড় বিপদের মধ্যে আছি।
আরেক অভিভাবক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, স্কুল ভবনের যে কন্ডিশন বৃষ্টি হলে কক্ষের মধ্যে ছাতা মাথায় নিয়ে বসতে হয়। শিক্ষকদের এ ব্যাপারে অনেক বলেছি কিন্তু কোন ফল পাচ্ছি না।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আবুল হাসান বলেন, বিদ্যালয় ভবনের দুরবস্থার কথা জানিয়ে বহুবার চিঠি দিয়েছি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের কিন্তু কোন কাজ হয়নি। তিনি বলেন, মাঝে মধ্যে শিক্ষা অফিসের লোকজন এসে ভবনের ছবি তুলে নিয়ে যান, কিন্তু ওই পর্যন্তই কোন রেজাল্ট আমরা পাই না।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, ওই বিদ্যালয়ের ভবনের ব্যাপারে একাধিকবার উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে কিন্তু কাজ হয়নি। তিনি বলেন, উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় ও আমার কার্যালয় থেকেও আবেদন জানানো হয়েছে কিন্তু এ ব্যাপারে আমার কোন উদ্যোগের কথা জানতে পারিনি।