যে বিদ্যালয়ে শিক্ষক মাত্র একজন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৩, ০৯:৫৭ AM , আপডেট: ১০ জুন ২০২৩, ০৯:৫৭ AM
মাত্র একজন শিক্ষক দিয়ে চলছে গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা ইউনিয়নে অবস্থিত জয়নাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তিনি প্রতিদিন দুই পালায় পাঁচটি শ্রেণির ক্লাস নিতে হয়। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলছে এই অবস্থা। বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৫৩।
জানা যায়, পুরো গ্রামে এটিই একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়। এর আগে প্রায় সাড়ে তিন বছর বিদ্যালয়টিতে দুজন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান চলছিল। গ্রামটিতে শিশুদের শিক্ষার ভরসা এই বিদ্যালয়। এর বাইরে কোনো কিন্ডারগার্টেনও নেই।
বিদ্যালয় ভবনটির কক্ষ চারটি। এর মধ্যে শ্রেণিকক্ষ তিনটি, অপর কক্ষটি ব্যবহার করা হচ্ছে অফিস কক্ষ হিসেবে। গ্রামের বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন বলেন, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষকসংকটে আছে। এমন শিক্ষকসংকট চলতে থাকলে শিশুরা সুবিধাবঞ্চিত হবে।
আরও পড়ুন: উপজেলার একমাত্র বিদ্যালয়, ৮০০ শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক ৩ জন
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ বলেন, বিষয়টি তারা শিগগিরই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন। তারা আশা করছেন দ্রুত শিক্ষকসংকটের সমাধান হয়ে যাবে।
২০১২ সালে গ্রামটিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর দুই বছর পর শুরু হয় শিক্ষা কার্যক্রম। তখন এই বিদ্যালয়ে শিক্ষক ছিলেন তিনজন। ২০১৯ সালে অবসরে চলে যান একজন শিক্ষক, একই বছর আরেকজন চাকরি ছেড়ে দেন।
এ অবস্থায় পাশের ভেড়ামতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে আতিকুল ইসলাম নামের একজন শিক্ষককে এই বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়। পরে ২০২০ সাল থেকে আতিকুল আর নাসরিন আক্তার জয়নাতলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
এর মধ্যে ১ জুন থেকে নাসরিন আক্তার মাতৃত্বকালীন ছুটিতে চলে যান। এরপর কেবল আতিকুল ইসলামকে একাই বিদ্যালয়টি পরিচালনা করতে হচ্ছে, তিনি এই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকও।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে ৩৯৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই
বিদ্যালয়ের একমাত্র শিক্ষক আতিকুল ইসলাম বলেন, কষ্ট হলেও বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে যাচ্ছি। আমাদের স্কুলে শিক্ষক দেওয়া অতি জরুরি হয়ে পড়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবেন বলে আশা করি।
বিদ্যালয়টি পরিচালনা কমিটির সভাপতি রহিজ উদ্দিন বলেন, শিক্ষকসংকটের কারণে আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। একজন শিক্ষক দিয়ে এতগুলো শিক্ষার্থীকে পাঠদান কোনোক্রমেই সম্ভব হয় না। শিক্ষক দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অনেকবার যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু সংকটের সমাধান হয়নি।