২০ অক্টোবর ২০২২, ১৪:৪১

নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি চলছে বিদ্যালয় ভবনে

বিদ্যালয় ভবনে চলছে নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির কার্যক্রম  © সংগৃহীত

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঘড়িসার ইউনিয়নের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে চলছে নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির কার্যক্রম। নড়িয়া উপজেলার ঘড়িসার ইউনিয়নের উত্তর হালইসার গোয়ালবাথান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের দোতলায় প্রায় ২০ বছর ধরে চলছে নৌ-পুলিশের এ কার্যক্রম। ফলে বিদ্যালয়ের পাঠদান ও দাপ্তরিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

নদীভাঙনে সুরেশ্বর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ভবনটি নদীগর্ভে বিলীন হয় প্রায় ২১ বছর আগে। পরবর্তীতে সেখানে আর কোনো নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ভবন নির্মিত না হওয়ায় ঘড়িসার ইউনিয়নে ফাঁড়িটি স্থানান্তর করা হয় বিদ্যালয়টিতে। বর্তমানে ১১১ নম্বর উত্তর হালইসার গোয়ালবাথান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের দোতলায় চারটি কক্ষে চলছে নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি হিসেবে।

কিন্তু, বর্তমানে বিদ্যালয় ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দেওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে ভবনটি। ২০০৩ সাল থেকে ওই বিদ্যালয়ের পাকা ভবনটির দোতলা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে একদিকে শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো ক্লাস করতে পারছে না, অন্যদিকে পুলিশ সদস্যরাও পড়ছেন নানা দুর্ভোগে। বিদ্যালয়ের ভবনের ফাঁড়ির ১২ পুলিশ সদস্য গাদাগাদি করে থাকছেন। এছাড়া আটক আসামিদের ফাঁড়ির ইনচার্জের রুমে গাদাগাদি করে রাখতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা।

অন্যদিকে, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, আমাদের বিদ্যালয়ে নৌ-পুলিশরা থাকেন। তাই শ্রেণীকক্ষ কম হওয়ায় ক্লাস করতে সমস্যা হয়। এছাড়া পুলিশের ভয়ে মাঝে মধ্যে ক্লাসও করা হয় না বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন: ইচ্ছামতো গ্রেড দিচ্ছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো

এ বিষয়ে সুরেশ্বর ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. আবু আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা আশ্রয়কেন্দ্রের মতো এখানে থেকে কার্যক্রম চালাচ্ছি। ভবনটিও জরাজীর্ণ, জায়গাও কম এখানে। ফলে ঝুঁকি নিয়ে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে জায়গা দেখছি। সেখানে ভবন হলে ফাঁড়ির কার্যক্রম স্থানান্তর করা হবে।

আর বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বাবু বলেন, আমাদের বিদ্যালয়টি দোতলা ভবন, মোট আটটি কক্ষ আছে। দোতলা ব্যবহার করে নৌ-পুলিশ। প্রাক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছয়টি ক্লাস। তাই বিদ্যালয়ে কক্ষ সংকটে ভুগছি। সে কারণে, স্কুলে পাঠদান ও দাপ্তরিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে। নৌ-পুলিশ তাদের কার্যক্রম অন্য যায়গায় সরিয়ে নিলে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা সহজ হবে। স্কুলে পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী রয়েছে। শ্রেণীকক্ষে নৌ-পুলিশ থাকার কারণে তাদের ভয়ে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে আসে না বলেও জানান তিনি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম আবুল হোসেন বলেন, বর্তমানে চার কক্ষের নিচতলায় দুই সময়ে স্কুলের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এরমধ্যে একটি কক্ষে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা গাদাগাদি করে থাকি। আমার কোনো কক্ষ নেই। এখানে ১৪৪ জন শিক্ষার্থী ও চারজন শিক্ষক আছেন। স্কুল ভবন থেকে পুলিশ ফাঁড়ি সরিয়ে নিতে পুলিশ প্রশাসনসহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে অনেক বার বলা হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এরশাদ উদ্দিন বলেন, আমি একমাস হলো শরীয়তপুরে যোগদান করেছি। স্কুলটির বিষয় জানলাম। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।