প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের ফল নিয়ে সর্বশেষ যা জানা গেল

শ্রেণি শিক্ষক ও লোগো
শ্রেণি শিক্ষক ও লোগো  © ফাইল ছবি

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল কবে নাগাদ প্রকাশ হতে পারে সে বিষয়ে কোন সুস্পষ্ট মন্তব্য করতে পারছেন না প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। ইতোমধ্যে এ ধাপের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ধাপের লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠলেও তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে কর্মকর্তারা। এ পরীক্ষার ফল প্রকাশের অনুমোদন চেয়ে পাঠানো ফাইল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। 

জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আইএমডি শাখার পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মহিউদ্দীন আহমেদ তালুকদার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, তৃতীয় ধাপের ফল কবে নাগাদ প্রকাশ করা হবে এ বিষয়ে বলতে পারছি না। ওই ফল প্রকাশের মতামত সংক্রান্ত ফাইলটি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। 

এদিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের পদ সংখ্যা বাড়ছে। জুন-২০২৪ পর্যন্ত শূন্য পদের হিসাব ধরে পদের সংখ্যা আরো ৩ থেকে ৪শ বাড়ানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন : প্রাথমিকে তৃতীয় ধাপের পদসংখ্যা বাড়ছে

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ‌ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, চলতি বছরের মে পর্যন্ত শূন্যপদের হিসাব ধরে নিয়োগ দিতে চেয়েছিলাম। তবে ফল প্রকাশে বিলম্ব হওয়ায় এখন জুন পর্যন্ত পদের সংখ্যা হিসাব করা হচ্ছে। ফলে পদের সংখ্যা আরো ৩০০ থেকে ৪০০ বাড়বে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, নতুন করে ৩০০ থেকে ৪০০ পদ বাড়ছে। এটি প্রায় চূড়ান্ত। ফল প্রকাশে আরও দেরি হলে পদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বিষয়টি নির্ভর করছে কতদিনের মধ্যে ফল প্রকাশ হবে সেটির ওপর।

জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ নিয়ে দুই ধরনের জটিলতা তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে। মতামত পাওয়ার পর এ ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে।

এ বিষয়ে প্রাথমিকের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করেছি। তদন্ত কমিটিতে সিআইডি, ডিবির প্রতিনিধিরা ছিলেন। তবে তারা প্রশ্নফাঁসের কোনো প্রমাণ পাননি। আমরা বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছি। তবে এখনো কোনো মতামত পাওয়া যায়নি। এটি না পাওয়া পর্যন্ত ফল প্রকাশ করা যাবে না।

আরও পড়ুন : প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ নিয়ে দুই জটিলতা

প্রাথমিকের সচিব আরও বলেন, দ্বিতীয়ত তৃতীয় ধাপের ফল আমাদের বিধিমালা অনুযায়ী প্রকাশ করা হবে নাকি কোটার নতুন প্রজ্ঞাপন অনুসরণ করা হবে সে বিষয়েও মতামত চাওয়া হয়েছে। এ মতামত না পাওয়া পর্যন্ত তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে না।

জানা গেছে, তৃতীয় ধাপে ৩টি পার্বত্য জেলা ছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২১টি জেলার পরীক্ষা গত ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছে। লিখিত পরীক্ষার সংশোধিত ফল গত ২২ এপ্রিল প্রকাশিত হয়। এতে ৪৬ হাজার ১৯৯ জন প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়। 

২০২৩ সালের ১৪ জুন এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ২৯ মার্চ এই দুই বিভাগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের লিখিত (এমসিকিউ) পরীক্ষার ফল গত ২১ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার তৃতীয় ধাপের (৩টি পার্বত্য জেলা ছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২১টি জেলা) লিখিত পরীক্ষার সংশোধিত ফল পরের দিন প্রকাশ করা হয়। 

‘মাদারীপুরে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন ঢাকায় সমাধান: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা (তৃতীয় ধাপ)’ শিরোনামে গত ২৫ এপ্রিল একটি দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগপ্রত্যাশী ১৬ জন প্রার্থী একটি রিট করেছিলেন। পরে আদালত অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশনা দেন। 


সর্বশেষ সংবাদ