ফার্মেসিতে ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের যৌথ হামলা, ১০ লাখ টাকা লুট
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২০, ০৭:১২ PM , আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২০, ০৯:৫৮ PM
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকার একটি ওষুধের দোকানে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা যৌথভাবে হামলা চালিয়েছে। এ সময় লাজ ফার্মা নামক ওই ফার্মেসির ভল্ট ভেঙে নগদ ১০ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির অংশীদার ডা. মো. আরিফুল হাসান।
গত সোমবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ থানা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন কোতওয়াল ও শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবু সায়েম খানের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়। এদিকে, এ ঘটনার তিনটি সিসিটিভি ফুটেজের ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে ওই হামলার দৃশ্য উঠে এসেছে।
জানা গেছে, এ ঘটনায় ফৌজদারী আইনে মামলা দায়ের করেছেন হামলার শিকার ডা. মো. আরিফুল হাসান। হামলার সময় ফার্মেসির ভল্ট ভেঙে ১০ লাখ টাকা নগদ দেড় লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান ডা. আরিফুল হাসান।
এছাড়াও আল মাহবুব তমাল ও খন্দকার মেহেদি নামের দুজন ব্যক্তির উপর হামলা চালানো হয়। এরা সকলেই ব্যবসায়িক অংশীদার। ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বর সুযোগ নিয়ে ওই ফার্মেসিটি দখলে নিতে এমন হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ডা. আরিফুল হাসান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার দিন বিকেল পৌনে ছয়টায় লাজ ফার্মার ভেতর থেকে তিনজন ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাদের উপর উপর্যুপরী হামলা করা হয়। হামলার পর কালো রঙের একটি গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। তারা জানান, ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত জাকির হোসেন কোতওয়ালের বিরুদ্ধে এর আগেও চাঁদাবাজি ও হামলার অভিযোগ রয়েছে।
এদকে, ডা. আরিফুল হাসানের করা মামলার এজহারে উল্লেখ করা ঘটনার সাথে অভিযুক্তরা হলেন, শাহনেওয়াজ খান, এম সাখাওয়াত হোসেন বিপ্লব, সায়েম খান, শাহনেওয়াজের ভাগ্নে প্রান্ত, ইনজামুল জামাল খান বাপ্পী, জাকির হোসেন কোতওয়াল, তরিকুল ইসলাম মিরাজ, আল মামুন সর্দার, তাইফুর রহমান শুভ, আরিফুর রহমান, ইমতিয়াজ জামান পারভেজ।
এ ব্যাপারে ডা. মো. আরিফুল হাসান বলেন, শাহনেওয়াজ খানের (হামলার সাথে জড়িত) সাথে আমাদের ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে৷ এছাড়াও সে খান ট্রেডার্স নামক একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত। করোনা মহামারির শুরুর দিকে মাস্ক সরবরাহের একটি সরকারি টেন্ডার পায় সে৷ এসময় বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে লাজ ফার্মার নাম দিয়ে আড়াই থেকে তিন কোটি টাকা ধার নেয়৷ কিন্তু জুলাইয়ের শেষ দিকে নকল মাস্ক সরবরাহের অভিযোগে র্যাবের হাতে ধরা পড়ে। এ ঘটনায় দীর্ঘ আড়াই মাস জেলে থাকতে হয়েছে তাকে।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে ধার করা টাকা শোধ না করায় টাকা পাওনাদাররা আমাদেরকে এসে ধরে। তিনি যেহেতু লাজ ফার্মার নাম ব্যবহার করে এ কাজ করেছেন সেহেতু মানুষজন আমাদের কাছ থেকে টাকা ফেরত চান। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য গত সোমবার তাকে ডাকা হলে তিনি বুধবার মিটিং করবেন বলে জানান। কিন্তু আমরা আলোচনা করে বের হলেই আগে থেকেই তার ভাড়া করা গুন্ডারা আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
এ ব্যাপারে শাহনেওয়াজ খান বলেন, আমার ব্যবসায়িক পার্টনারদের সাথে একটু ঝামেলা হয়েছিল। তারা আমাকে আমার ব্যবসা থেকে বের করে দেয়ার পরিকল্পনা করলে আমি তাদের সাথে মিটিংয়ে বসার চেষ্টা করি। মিটিং শেষে লাজ ফার্মা থেকে বের হয়ে দেখি জাকির হোসেন কোতওয়াল ছাত্রদলের কয়েকজন ছেলেকে মারধর করছে।
সিসিটিভি ফুটেজে জাকির হোসেন কোতওয়াল ও ছাত্রদলের ভেদরগঞ্জ উপজেলা সভাপতি একযোগে তিনজনের উপরে হামলা করছিলো এমনটি দেখা গেছে বললে তিনি বলেন, লাজ ফার্মার সাথে যুক্ত ডা. মো. আরিফুল হাসান ও ডা. আল মাহবুব তমাল ছাত্রদলের সাথে যুক্ত বলে তিনি অভিযোগ করে।
খান ট্রেডার্সের নামে নকল মাস্ক সরবরাহ করতে গিয়ে আড়াই মাস জেলে ছিলেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আড়াই মাস না, ২৫ দিন জেলে ছিলাম। লাইসেন্স আমার নামে হওয়ায় শুধু আমাকে জেলে নেয়া হয়েছিল।