আসামের এনআরসি ইস্যুতে উদ্বিগ্ন নয় বাংলাদেশ
আজ প্রকাশ হতে যাচ্ছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের চূড়ান্ত জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)। দেশটির গণমাধ্যম বলছে, আগের তালিকায় প্রায় ৪০ লাখ বাসিন্দা বাদ পড়েছিল। এবারও প্রায় ৪১ লাখ বাসিন্দার নাম তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
ফলে এনআরসি নিয়ে উদ্বিগ্ন আসামের লাখো মানুষ। আসাম সরকার জানায়, ‘অবৈধ বাংলাদেশি’দের চিহ্নিত করে ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যেই এনআরসি চূড়ান্ত করা হচ্ছে।
তবে বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন নয় বাংলাদেশ। এ মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের ঢাকা সফরের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এ বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ড. মোমেন বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আসামের এনআরসির বিষয়টি উত্থাপন করেছিলাম। যেখানে এমনিতেই ১১ লাখ রোহিঙ্গা নিয়ে আমরা খুব কষ্টে আছি, আবার আসামের ৪০ লাখ মানুষের কথা মিডিয়ায় শুনতে পাচ্ছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন আসামের এনআরসি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এটা নিয়ে বাংলাদেশের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। এর প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে না।
উল্লেখ্য, ঢাকা সফরকালে আসামের জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন সংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিষয়টিকে ‘ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. সুব্রানিয়াম জয়শঙ্করও।
তবে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশকে সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন কূটনৈতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকেরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ভারতের আসামে এনআরসি নিয়ে যা হচ্ছে তাতে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বরং ভারতের মানুষেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
‘তবে বাংলাদেশের এক ধরনের দুশ্চিন্তার কারণ অবশ্যই আছে। অতীতে, ১৯৯৮-১৯৯৯ সালের দিকে অবৈধ ঘোষণা দিয়ে অনেককে বাংলাদেশে পাঠানোর চেষ্টা করেছিল ভারত। তাই এবারও বাংলাদেশকে সতর্ক থাকতে হবে,’- বলেন ড. দেলোয়ার।
এদিকে এনআরসি প্রকাশকে কেন্দ্র করে আসামজুড়ে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় শুক্রবার থেকেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত ১৭ হাজার পুলিশ সদস্য।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা স্থানীয়দের বারবার আশ্বস্ত করছেন তালিকায় নাম না থাকাদের এখনই বের করে দেয়া হবে না। সংশোধিত তালিকা থেকে বাদ পড়া আবেদনকারীরা তালিকায় নাম ওঠাতে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আপিল করতে পারবেন।