আগামী নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল ও কালোটাকার খেলা চলবে না: জামায়াত আমির
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘কেউ যদি আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আমলের নির্বাচনের স্বপ্ন দেখে থাকেন, সেই স্বপ্নকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করব। কোনো প্রশাসনিক ক্যু করতে দেওয়া হবে না। আগামী নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল ও কালোটাকার খেলা চলবে না।’
শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেলে জিলা স্কুল মাঠে রংপুর মহানগর ও জেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে দাবি করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কতগুলো মৌলিক সংস্কার অবশ্যই করতে হবে। আমরা সেই সংস্কারগুলো আদায় করে ছাড়ব। বর্তমান অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচনের কল্পনাও করা যায় না। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনও আদায় করে ছাড়ব।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছর তার সাধ্যমতো জনগণের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ঘরে বাইরে লড়াই করছে। স্বৈরাচার সরকার আমাদের সংগঠনের মাথা থেকে শুরু করে ১১ জন নেতাকে আমাদের মধ্যে থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। আমাদের ওই সব নেতা বেঁচে থাকলে বাংলার প্রতিটি প্রান্তরে ঘুরে ঘুরে আশা হারানো জাতিকে আশা দেখাতেন। যারা আমাদের পাকিস্তানি বলে গালি দিয়েছিল, তারা ইন্ডিয়া পালিয়ে গিয়েছে। আমাদের কোনো নেতা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি। আমাদের নেতারা দুনিয়ার কোনো অপশক্তিকে পরোয়া করেনি। হুমকি-ধমকিকে পাত্তা দেয়নি। তারা হাসতে হাসতে ফাঁসির মঞ্চে গিয়েছিল।’
আরও পড়ুন: জুলাই ঘোষণার প্রশ্নে লজ্জায় মাথা নিচু করে থাকলাম, কিছুই বলতে পারলাম না: শিবির সভাপতি
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা এমন একটি সমাজ প্রতিষ্ঠিত করতে চাই, যে সমাজে কোনো বৈষম্য থাকবে না। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব। আমরা সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু মানি না। এটা বলেই তাদের নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা মনে করি, সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। সবাই সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে। ওরা মালিক হয়েছিল রাষ্ট্রের। আমরা সেবক হব জনগণের।’
জনসভার প্রধান বক্তা জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও সদ্য কারামুক্ত জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম বলেন, ফাঁসির মঞ্চ থেকে লক্ষ জনতার মঞ্চে উপস্থিত হয়েছে। মিথ্যা সাক্ষীর মাধ্যমে আমাকে ফাঁসি দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। যে গলায় ফাঁসির দাড়ি পড়ার কথা ছিল, সেখানে ফুলের মালা পরানো হচ্ছে। আমার কারও প্রতি কোনো ক্ষোভ নেই। আবু সাঈদের বুকের তাজা রক্তের মাধ্যমেই আন্দোলনে দেশ উত্তাল হয়ে উঠেছিল। আবু সাঈদের আত্মত্যাগের কারণেই আমি মুক্ত হয়েছি। আমি চাই আবু সাঈদের হত্যার বিচার দ্রুত বাস্তবায়ন করা হোক।’
আরও পড়ুন: প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘মিড ডে মিল’ চালু হচ্ছে সেপ্টেম্বরে
রংপুর মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর আমির এ টি এম আজম খানের সভাপতিত্বে ২০২৪ সালের ছাত্র গণ-আন্দোলনের শহীদ আবু সাঈদের খুনিসহ ফ্যাসিস্টদের বিচারের দাবি, নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ ও রাজনৈতিক সংস্কার, তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং মানবিক বাংলাদেশ গঠনের অঙ্গীকারসহ চার দফা দাবিতে রংপুর মহানগরী ও জেলা জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে এ সময় বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আবদল হালিম, ঢাকা দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান।