১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৭

ধর্ষণ নয়, ভারতে ৪ আ.লীগ নেতা যে কারণে গ্রেপ্তার

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধান  © সংগৃহীত

সম্প্রতি ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ডাউকি থানার পুলিশ কলকাতা থেকে সিলেটের আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের চার নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান, সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, সহসভাপতি আবদুল লতিফ রিপন এবং সদস্য ইলিয়াস হোসেন জুয়েল।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে যে ধর্ষণের অভিযোগে ওই নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে ধর্ষণের অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার।

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ধর্ষণের অভিযোগ নয়, বরং অবৈধ অনুপ্রবেশ, মারধর এবং ডাকাতিসহ আরও কয়েকটি অভিযোগে সিলেটের আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের চার নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতীয় পুলিশ।

আরও পড়ুন: র‍্যাগিং করায় চুয়েটের ১১ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার

অনুসন্ধানের মাধ্যমে গত ৯ ডিসেম্বর ভারতের মেঘালয় ভিত্তিক পত্রিকা দ্য শিলং টাইমসে এই বিষয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে জানানো হয়, মেঘালয়ের পশ্চিম জয়ন্তিয়া হিলসের ডাউকি এলাকায় গত মাসে ট্রাকচালকদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আওয়ামী লীগের চার নেতা-কর্মীকে কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে পুলিশের বরাতে আরও জানানো হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের রোববার (৮ ডিসেম্বর) রাতেই জোয়াইয়ে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে তারা পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন এবং ডাউকি থানায় এ-সংক্রান্ত একটি মামলা করা হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

অর্থাৎ মেঘালয়ের স্থানীয় পত্রিকা দ্য শিলং টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে গ্রেপ্তার নেতাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগের বিষয়ে কোনো উল্লেখ বা তথ্য পাওয়া যায়নি।

মেঘালয় পুলিশের মহাপরিচালক মিজ নংরাং এ বিষয়ে জানান, ওই চারজনের বিরুদ্ধে ডাউকি থানার একটা মামলা ছিল। কোনো ধর্ষণের অভিযোগ নেই তাদের বিরুদ্ধে। ডাউকি থানায় তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার চারটি ধারা এবং বিদেশি আইনের ১৪ নম্বর ধারায় অভিযোগ ছিল। সেই মামলাতেই কলকাতা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে আনা হয়েছে।

আরও পড়ুন: আসাদের পতনের পরও সিরিয়ায় পাঁচ শতাধিক হামলা ইসরায়েলের

এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে মেঘালয়ের পশ্চিম জৈন্তিয়া পাহাড় জেলার জোওয়াইয়ের পুলিশ সুপার চেমফাং সিরটির সঙ্গে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

তিনি জানান, বিশ্বস্ত সূত্রের ভিত্তিতে ভারতের বিদেশি আইন এবং মারধরের মামলায় ওই বাংলাদেশি নাগরিকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় তাদের অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে মারধরের ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি তদন্তাধীন। আদালতের নির্দেশে তাদের বিচারিক হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ বা যৌন হয়রানির কোনো অভিযোগ নেই।

এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ফেসবুক আইডিতে একই দাবিতে একটি পোস্ট করেন। ১০ ডিসেম্বর কাফরুল দক্ষিণ থানা জামায়াত আয়োজিত সুধী সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানও একই দাবি করেন।

রিউমর স্ক্যানার বলছে, অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ, মারধর ও ডাকাতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া সিলেটের আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের চার নেতাকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে ইন্টারনেটে প্রচারিত দাবিটি বিভ্রান্তিকর।