বেগম রোকেয়া দিবস আজ

বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন
বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন  © ফাইল ফটো

নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের ১৩৬তম জন্ম ও ৮৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। প্রতিবছর দিনটি বেগম রোকেয়া দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আজকের এই দিনটিতে তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন। এ ছাড়া দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে দেশব্যাপী জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

এ উপলক্ষে প্রকাশ করা হচ্ছে বিশেষ ক্রোড়পত্র, পোস্টার, বুকলেট ও স্যুভেনির। করোনা মহামারীর এই সময়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে। এবার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখায় দেশের পাঁচজন নারী পাচ্ছেন ‘রোকেয়া পদক’।

আজ ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া পদক -২০২১ প্রাপ্তরা রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার কাছ থেকে সম্মাননা পদক গ্রহণ করবেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

মনোনীতরা হলেন- নারী শিক্ষায় অবদানের ক্ষেত্রে কুমিল্লা জেলার প্রফেসর হাসিনা জাকারিয়া বেলা। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় যশোর জেলার অর্চনা বিশ্বাস, নারীর আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখায় কুমিল্লার শামসুন্নাহার রহমান পরাণ (মরোণোত্তর), পল্লী উন্নয়নে অবদান রাখায় মনোনীত হয়েছেন কুষ্টিয়া জেলার গবেষক ড. সারিয়া সুলতানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও রোকেয়া হলের প্রভোস্ট ড. জিনাত হুদা সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণের ক্ষেত্রে অবদান রাখায় মনোনীত হয়েছেন। তার নিজ জেলা মুন্সীগঞ্জ।

নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়ার কর্ম ও আদর্শকে সামনে রেখে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের অনন্য অর্জনের জন্য প্রতি বছর ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া পদক প্রদান করা হয়।

বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সে সময় মুসলিম সমাজে মেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর কোনো চল ছিল না। তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও পরিবারের সবার অগোচরে তার বড় ভাইয়ের কাছে উর্দু, বাংলা, আরবি ও ফার্সি পড়তে এবং লিখতে শেখেন। তার জীবনে শিক্ষালাভ ও মূল্যবোধ গঠনে তার ভাই ও বড় বোন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলেন। পরে বিহারের ভাগলপুরে সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সাথে বিয়ে হয়। স্বামীর উৎসাহে ও নিজের আগ্রহে তিনি লেখাপড়ার প্রসার ঘটান। বেগম রোকেয়া ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর মারা যান।

বেগম রোকেয়া ২০০৪ সালে বিবিসি বাংলার ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি’ জরিপে ষষ্ঠ নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক হিসেবে পরিচিত। তার উল্লেখযোগ্য রচনা হলো- মতিচূর, সুলতানার স্বপ্ন, পদ্মরাগ, অবরোধ-বাসিনী। এই দিবসটি সরকারিভাবে পালিত একটি জাতীয় দিবস।

বেগম রোকেয়ার ৮৯তম মৃত্যবার্ষিকী পালন উপলক্ষে রংপুর জেলা প্রশাসন ও মিঠাপুকুর উপজেলা প্রশাসন যৌথভাবে দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। সকাল ১০টায় বেগম স্মৃতি স্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন, স্বেচ্ছায় রক্তদান, ফ্রি চিকিৎসা, আলোচনা সভা অনুষ্ঠান, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি, মুক্ত আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পুরস্কার বিতরণ রোকেয়া পদক প্রদান, জয়িতা পুরস্কারসহ দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠান মালার আয়োজন করা হয়েছে। ওমিক্রন ও করোনাভাইরাসের কারণে শুধু দিনব্যাপী সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা।

বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং রূহের মাগফিরাত কামনা করে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।


সর্বশেষ সংবাদ