দুই বছর দুপুরে ভাত খাননি শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  © অফিশিয়াল ছবি

১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর ওই সময় দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল। প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতার গ্রহণের পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন সুবিধা-অসুবিধা জানতে প্রথম দরবার হলে গিয়ে জানতে পেরেছেন তারা দুপুরে রুটির বদলে ভাত খেতে চান। ওই সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা দুপুরে শুধু রুটি খেতেন। কথাটা শোনার পর খুবই মর্মাহত হয়েছেন শেখ হাসিনা।  

তখনই তিনি প্রতিজ্ঞা করেন দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ না করে সেনাবাহিনীর জন্য দুপুরে ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা না করা অবধি তিনিও দুপুরে ভাত খাবেন না। সেনাবাহিনী সদস্যদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে সেদিন দুপুর থেকেই ভাত খাওয়া বন্ধ করে দিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। 

১৯৯৮ সালে তার সরকার দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলে। সেনা সদস্যদের জন্য দুপুরে ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা চালু হয়। পরে ২ বছর পর অবশেষে সেনানিবাসে এসে সেদিন তাদের সঙ্গে বসে দুপুরে ভাত খান শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক জাফর ওয়াজেদ তার ফেসবুক পোস্টে এসব তথ্য জানিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি জানার পর আমি নিজেও বিস্মিত। যে কেউ ইতিহাস দেখলে এসব তথ্যের সত্যতা খুঁজে পাবেন। একটা টকশোতে বর্তমান সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বিষয়টা চমৎকারভাবে তুলে ধরেছিলেন। এমন জেদ, আবেগ আর সাহস ছিল বলেই তিনি পেরেছেন।

নিচে পিআইবি মহাপরিচালকের স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

কখনো উচ্ছল, শান্ত, কখনো দুরন্ত। কখনো ভীষণ একরোখা, প্রচণ্ড জেদি। ভাঙবেন কিন্তু মচকাবেন না। এমন স্বভাবের মানুষটিকে দুই বছর কেউ দুপুরে ভাত খাওয়াতে পারেনি। কারও অনুরোধই শুনেনি। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কথা বলছি।

১৯৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় আসেন, ক্ষমতায় এসেই শেখ হাসিনা প্রথম দরবার হলে গিয়ে জানতে চান সেনাবাহিনীর কী কী সমস্যা আছে। সেনাবাহিনী সদস্যরা তাকে জানায়, তারা দুপুরে ভাত খেতে চান। তখন তারা দুপুরে শুধু রুটি খেতেন। কথাটা বঙ্গবন্ধু কন্যাকে খুবই মর্মাহত করে। 

শেখ হাসিনার সরকার সদ্য ক্ষমতায়। দেশে তখন খাদ্য ঘাটতি। তিনি প্রতিজ্ঞা করলেন দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ না করে, সেনাবাহিনীর জন্য দুপুরে ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত তিনিও দুপুরে ভাত খাবেন না। সেনাবাহিনী সদস্যদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে সেদিন থেকেই দুপুরে ভাত খাওয়া বন্ধ করে দিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। 

দেশ, দেশের মানুষের কল্যাণ স্বার্থে ভীষণ একরোখা, প্রচণ্ড জেদি তিনি। ৯৬ থেকে ৯৮ দুই বছর নেতাকর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষী, আত্মীয় স্বজন কেউ তাকে দুপুরে ভাত খাওয়াতে পারেনি। ১৯৯৮ সালে তার সরকার দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে। সেনা সদস্যদের জন্য দুপুরে ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়। তিনি প্রতিজ্ঞা রাখলেন। অতপর সেনানিবাসে এসে সেদিন তাদের সঙ্গে বসে দুপুরে ভাত খান। এরপর থেকে আবার দুপুরে ভাত খাওয়া শুরু করলেন সূর্যদীপ্ত রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। 

সত্যিই তার তুলনা শুধু তিনিই। শেখ হাসিনাকে বুঝতে হলে শেখ হাসিনাকে জানতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ