বঙ্গবন্ধুকে শান্তিতে মরণোত্তর নোবেল দেয়ার আহবান

  © সংগৃহীত

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শান্তিতে মরণোত্তর নোবেল প্রাইজ দেয়ার আহবান জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের সরকার ও বিরোধীদলীয় সদস্যরা। বঙ্গবন্ধুর কর্মময় ও বর্ণাঢ্য জীবনের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য আমীর হোসেন আমু ও বিরোধীদল জাতীয় পার্টির সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এ আহবান জানান।

বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এই আলোচনায় আরও অংশ নেন ডা. আ ফ ম রুহুল হক, রমেশ চন্দ্র সেন, উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ, হুইপ মো. ইকবালুর রহিম, আ ক ম বাহাউদ্দিন ও সুবর্ণা মোস্তফা এবং বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা, বিএনপির মো. হারুনুর রশীদ, গণফোরামের মোকাব্বির খান প্রমুখ।

আলোচনায় অংশ নিয়ে আমীর হোসেন আমু বলেন, স্বাধীনতা হঠাৎ করে আসেনি। বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায়ই স্বাধীনতা এসেছে। বঙ্গবন্ধু যখন যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রী ছিলেন তখন এই বাংলাদেশে শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আওয়ামী লীগের ওই সরকারের আমলে বিচার বিভাগ প্রশাসন থেকে মুক্ত হয়। ২১ ফেব্রুয়ারিকে সরকারি ছুটি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। আওয়ামী লীগের ওই সরকারের সময়ই চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক তৈরি হয় এবং চীনের নেতা চো এন লাই বাংলাদেশে আসেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়েছেন, সোনার বাংলা গড়ার কাঠামো তৈরি করে গিয়েছিলেন। তার যোগ্যকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সেই স্বপ্নের সাধ পাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু আজ নেই, কিন্তু তার প্রতিচ্ছবি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা বিশ্বে উন্নয়নের মডেল হিসেবে সফলতা লাভ করছি।

আমির হোসেন আমু বলেন, পাকিস্তানিরা চিরদিনই এদেশের মানুষদের নিয়ে খেলেছে, বাঙালিদের সব সময় পদানত করে রাখার চেষ্টা করেছে। এটা উপলব্ধি করতে পেরেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। ১৯৬১ সালেই বঙ্গবন্ধু আমাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন পাকিস্তানিদের অত্যাচার-নির্যাতনের চিত্র জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে। তিনি ৬ দফা প্রস্তাব দিয়ে তার সমর্থনে যেখানেই সভা করেছেন সেখানেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হাইকার্ট থেকে জামিন নিয়ে তিনি আবার সভা করেছেন। এরপর তাকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নিয়ে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলানোর ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সেই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়। আর তার কন্যার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, বিশ্বের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সমগ্র জাতিকে এতিম করা হয়েছে। খুনিদের বিচার হলেও নেপথ্যে ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার হয়নি। ওই ঘটনায় যারা নীরব ছিলেন তাদেরও বিচার হওয়া দরকার। সেই সময়ের রাষ্ট্রীয় ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বে যারা ছিলেন, তাদের বিচার করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকারদের বাংলাদেশের মাটিতে ঠাঁই নেই। এই সংসদে যাতে তারা আর কখনই ফিরতে না পারে সেজন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল। সেখানে জাতীয় পার্টির একটু হলেও অবদান ছিল। এরপর ২০০৮ সাল থেকে আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছি। মন্ত্রিসভাতেও ছিলাম। দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছি। এই সরকারের উন্নয়নে আমরা অবিভূত। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা বাস্তবায়নের আহবান জানিয়ে হুইপ ইকবালু রহিম বলেন, সংসদে ও সংসদের বাইরে বঙ্গবন্ধু কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন। দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর ও চোরদের হাত থেকে দেশকে রক্ষার আহবান জানিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশকে রক্ষায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা উন্নত দেশ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।


সর্বশেষ সংবাদ