ভিসি হারুনের প্রশংসায় তাঁরই শিক্ষক রওনক জাহান

  © টিডিসি ফটো

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদের নতুন বই প্রকাশ হয়েছে। অন্যপ্রকাশ প্রকাশনী এই গবেষণাধর্মী বইটি প্রকাশ করে। বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে নতুন বইয়ের পাঠ উন্মোচন নিয়ে ভার্চুয়াল প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. রওনক জাহান। এসময় তিনি বলেন, আমার সরাসরি ছাত্র অধ্যাপক হারুন। অনেক ছাত্রই বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছেন। তবে আমার কাছে অবাক লাগে কীভাবে অধ্যাপক হারুন দুইটি দিক সমানভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, অধ্যাপক হারুন বৃহৎ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তাকে প্রশাসন সামলাতে হচ্ছে। একই সঙ্গে তিনি ব্যাপকভাবে গবেষণাও চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা দেখেছি যারা প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত তারা গবেষণা করতে পারেন না। কিন্তু হারুন সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। আমরা সবাই জানি অধ্যাপক হারুন একটি রাজনেতিক আদর্শ ধারণ করেন। কিন্তু তার গবেষণায় তার ছাপ থাকে না। নির্মোহ সত্য তথ্যই গবেষণায় উঠে আসে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক এই অধ্যাপক বলেন, অধ্যাপক হারুনকে আমি ধন্যবাদ জানাই। কারণ তাঁর নতুন বইটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োপযোগী। তিনি এর আগেও অনেক বই লিখেছেন। তবে তার এই বইটি বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ নিয়ে গবেষণা ক্ষেত্রে নতুন দিক উন্মোচন করবে। একটি বইয়ের প্রধান যে বৈশিষ্ট্য, পরিশিষ্ট ও রেফারেন্স সব কিছুই এই বইয়ে অত্যন্ত শক্তিশালী। বইটি প্রকাশে লেখক যে নিরলস পরিশ্রম ও গভীর মনোযোগী ছিলেন বইটি পড়লেই সেটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, বইটি আমি পড়েছি। ইতিহাস ব্যাকগ্রাউন্ডের একজন মানুষ হিসেবে আমি বলবো বইটিতে ঐতিহাসিক বিষয়াবলী সাবলীলভাবে স্থান পেয়েছে। অধ্যাপক হারুন প্রচন্ড চাপের মধ্যেও গবেষণা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

‘৭ই মার্চ থেকে স্বাধীনতা’ শীর্ষক বইয়ের লেখক ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, বইটির প্রকাশনা উৎসবে আমার আসলে বিশেষ কিছু বলার নেই। কারণ বইটি আমি যেভাবেই হোক লিখেছি। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষকরা যদি বইটি পড়েন তাহলে বুঝতে পারবেন কী লিখেছি। এটি

তারাই মূল্যায়ন করবেন। তবে লেখার ক্ষেত্রে আমি মৌলিক কিছু বিষয় মেনে চলি। এই বইটির বেলায়ও তার প্রতিফলন ঘটেছে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান বলেন, বইটিতে ৭ই মার্চের যে বহু মাত্রিকতা সেটি উঠে এসেছে। ভাষণটি যে আকস্মিক ছিল না৷ এর পেছনে ছিল বাঙালির হাজার বছরের আশা আকাঙ্খা। সেই আশা আকাঙ্খার মুক্তি ঘটেছে ৭ই মার্চ। অত্যন্ত বস্তুনিষ্ঠভাবেই লেখক এটি তুলে ধরেছেন।

কথাশিল্পী সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ৭ই মার্চ থেকে স্বাধীনতা- বইয়ের লেখক অধ্যাপক হারুন একজন জ্ঞান সাধক। তিনি যেকোন কাজ অত্যন্ত নিষ্ঠা নিয়ে করেন যাতে কোন ফাঁক না থাকে। তিনি যখন গবেষণা করেন তখন গবেষণালব্ধ তথ্য ঝালিয়ে নেন। তথ্য উপাত্ত যাচাই-বাছাই করেন। এ কারণে তিনি যে বই লিখেন সেটি মৌলিক আকর গ্রন্থ হিসেবে রূপ নেয়। ছাত্র-ছাত্রীরাও পাঠ্যবই হিসেবে বইগুলোকে কাজে লাগাতে পারে। একই সঙ্গে যারা গবেষণা করেন তাদের কাছেও বইগুলো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে।


সর্বশেষ সংবাদ