কেন ‘খান’ পদবী বর্জন করেছিলেন ইরফান?
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২০, ০৭:১৩ PM , আপডেট: ০১ মে ২০২০, ১২:৩৩ PM
বিশিষ্ট ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা ইরফান খান সম্প্রতি মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। দীর্ঘ দু’বছর ধরে একটি বিরল ধরনের ক্যানসারের সঙ্গে তাঁর লড়াই চলছিল। যদিও সুস্থ হয়ে এর আগে আংরেজি মিডিয়াম ছবির মধ্যে দিয়ে কামব্যাক করেছিলেন। দেখে বোঝার উপায় ছিল না যে, কতটা যন্ত্রণা সহ্য করে অভিনয় চালাচ্ছিলেন তিনি। এতটাই ছিল অভিনয়ের প্রতি ভালবাসা।
বলিউডে ‘কাপুর’দের পর বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে ‘খান’ পদবীর অভিনেতারা। এই পদবীগুলোর সঙ্গে বংশ পরম্পরায় স্বজন পোষণের অভিযোগও উঠেছে বহুবার। সম্ভবত এমন তিক্ত গল্প থেকেই একসময় নিজের নামের পাশ থেকে সেই ‘খান’ পদবীই ত্যাগ করেছিলেন ইরফান।
২০১৬ সালে ইন্ডিয়া টুডে-কে দেওয়া এক সাক্ষৎকারে ইরফান জানিয়েছিলেন, ‘আমি আমার নাম থেকে খান পদবী বাদ দিয়ে দিয়েছি। কারণ আমি চাই কাজই আমার পরিচয় হোক। বংশ পরিচয়ে নয়।’ কেন ‘খান’ পদবী বাদ দিয়েছেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে ইরফান বলেছিলেন, আমি যখনই আমার হোমটাউনে যাই তখনই অনেকের মধ্যে আলোচনা শুনি। অনেকেই দেখি বলেন, তাঁদের পূর্বপুরুষরা কী করেছেন। কীভাবে গর্বিত করেছেন। তাঁরা আসলে তাঁদের নিজেদের পছন্দের প্রতি দায়বদ্ধ নন। এটা আমার খুবই খারাপ লাগে। কেন আমরা অতীত নিয়ে বেঁচে থাকবো। আমরা যখন এখনও বেঁচে আছি। তখন আমাদের কাজটাই আমাদের পরিচয়। কাজই আমার জীবন গড়ে দেবে।
তিনি কি জেনে বুঝেই এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ছিলেন? উত্তরে ইরফান বলেছিলেন, হ্যাঁ, আমি ভাবনা চিন্তা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ আমাদের কাজই আমাদের জীবনের গল্প লেখে। পদবী নয়।
স্যোশাল মিডিয়াতেও নিজের নামের সঙ্গে কখনও খান জুড়তেন না ইরফান। আরেক স্বাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘আমি ইরফান। শুধুমাত্রই ইরফান। খান এই শব্দটিকে আমি বর্জন করেছি। ধর্ম দিয়ে আমি পরিচিত হতে চাই না। চাই না, পদবি বা বংশ পরিচয়ের মাধ্যমে মানুষ আমাকে চিনুক।’’
ইরফান বলতেন, ‘‘খ্যাতির লোভ আসলে একটা অসুখ। একদিন এই অসুখ থেকে আমি মুক্তি পেতে চাইব। এই প্রত্যাশা থেকে দূরে সরে যেতে চাইব। যেখানে খ্যাতির কোনও মূল্য নেই। যেখানে এই বেঁচে থাকাটুকুই, জীবনের পথচলার এই অভিজ্ঞতাটুকুই আমার জন্য যথেষ্ট।’’ মিষ্টভাষী ইরফানের বক্তব্য, মুখের ভাষা কোনও মানুষকে অভিজাত বানাতে পারে না। মানুষ আমার মুখ না, অভিনয় দেখতে পছন্দ করেন।