লিখতে চাইলে পড়তে হবে: কৌশল জানালেন ড. আতিউর
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০১৮, ১২:২৫ AM , আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৮, ১০:৩৩ AM
২০১৩ সালে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কবি মহাদেব সাহা বলেছিলেন, ‘একটি শব্দের জন্য সারা রাত বসে থেকেছি। জীবনানন্দ দাশ কিংবা সুধীন্দ্রনাথ দত্তের কবিতা পড়েছি উন্মাদের মতো। পড়েছি জন কিটস, রাইনার মারিয়া রিলকে, ডব্লিউ বি ইয়েটস। পড়তে পড়তে লিখতে লিখতে হয়তো কবি হয়ে উঠেছি আমি। সত্যিই কি হতে পেরেছি? জানি না’। জীবন সায়াহ্নে দাঁড়িয়ে হালের অন্যতম সেরা এই কবির লেখক হওয়া নিয়ে সংশয় এটি।
নোবেলজয়ী ভিএস নাইপালের সংশয়টাও কম ভয়ঙ্কর নয়। তার ভাষায়, ‘সত্যিই জানি না কী করে আমি লেখক? লেখক হওয়ার পেছনের গল্পগুলো হয়ত দু-একটা মনে করতে পারি। কিন্তু তারপরও ধোঁয়াশা জিনিসটা থেকেই যায়।’
স্বভাবগত চিন্তায় আসলেই কি দারুন সব চিন্তা-ভাবনা শেষে বসলে লেখা বের হবে? নাকি আরো কিছু করণীয় আছে? হ্যাঁ, সাফ একটা উত্তর আছে। সেটা হলো ‘লিখতে হলে পড়তে হবে’। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক সংঘের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎকালে সে কথাটিই জানালেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। বললেন, লেখার আগে পড়ার টেবিলে বই নিয়ে বসতে হবে। বেশি বেশি বই পড়তে হবে। শুধু তাই নয়, এজন্য শরীর থেকে ঘামও ঝরাতে হবে। তবেই একসময় মানসম্মত লেখক হওয়া যাবে।
লেখকদের সঙ্গে আড্ডায় অধ্যাপক ড. আতিউর প্রায় ২ঘণ্টার দীর্ঘ এক আলোচনায় নিজ জীবনের সংগ্রামের গল্প তুলে ধরার পাশাপাশি লেখক হওয়ার নানা কৌশল তুলে ধরেন। বলেন, তোমরা জীবন নিয়ে লেখ। তোমাদের লেখনীর মাধ্যমে উঠে আসুক গ্রাম জনপদের কথা। উঠে আসুক বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা এবং উত্তরণের উপায়। নতুনভাবে ভাবতে চেষ্টা কর। উদ্যোক্তা হও। তুমি চাকরি কেন খুঁজবে? লোকজনকে চাকরি দেবে তুমি। তবেই না তুমি তরুণ, আগামীর বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক সংঘ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের একটি প্লাটফর্ম। এ সংগঠনের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় লেখালেখি করে আসছে। এ পর্যন্ত সংগঠনের সদস্যদের সহস্রাধিক লেখা বিভিন্ন বাংলা ও ইংরেজি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
২০১৯ শে'র বইমেলার ‘তারুণ্যের ভাবনা’ নামে প্রকাশিত হচ্ছে তরুণ লেখকদের এসব লিখনীর সংকলন। মানসম্মত লেখালিখি, তরুণদের প্রণোদনা, সাংগঠনিক কাঠামো ইত্যাদি বিষয়ে অনুপ্রেরণা, পরামর্শ ও সদুপদেশের জন্য অধ্যাপক ড. আতিউর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করে সংগঠনটির ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদল। সেখানেই উপরোক্ত পরামর্শ দেন তিনি।
সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক সংঘের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহানুর ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নাজমুন আরা শামীমা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সভাপতি মো. জাকারিয়া, সাধারণ সম্পাদক মারজুকা রায়না, জাহানুর ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।