২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:৩২

মেডিকেলে প্রথম দফায় ভর্তি হতে পারেননি দেবী শেঠি

ডা. দেবী শেঠি  © সংগৃহীত

প্রথম দফায় মেডিকেল কলেজে উত্তীর্ণ হতে পারেননি উপমহাদেশের প্রখ্যাত হার্ট সার্জন দেবী শেঠি। দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় টেনেটুনে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। ছিলেন ব্যাকবেঞ্চার। নিজের শিক্ষাজীবনের বেশ কিছু অজানা তথ্য তিনি তুলে ধরেছেন ২০১৮ সালে ভারতের যুব সম্মেলনে। পাঠকদের জন্য তার অংশ বিশেষ তুলে ধরছি।

দেবী শেঠি বলেন, সব ক্লাসেই কিছু ভালো ছাত্র থাকে। স্যার প্রশ্ন করার সঙ্গে সঙ্গেই উত্তর দেয়। সব পরীক্ষায় প্রথম সারিতে থাকে তারা। যারা ব্যাকবেঞ্চার তারা ভাবে এরাই বোধহয় দেশ চালাবে। পৃথিবী বদলে দিবে। কিন্তু সত্যি বলতে আমরা যা মনে করি, বাস্তবতা তার চেয়ে আলাদা। আদতে পৃথিবীটা ব্যাকবেঞ্চারদের দখলে। আমিও একজন ব্যাকবেঞ্চার।

তিনি বলেন, ক্লাস টুতে ফেল করেছি আমি। শিক্ষক আমার রেজাল্ট দেখে বলেছিলেন, তুমি তো ব্যর্থ। ওই ক্লাসের একমাত্র ফেল করা ছাত্র ছিলাম আমি। মেডিকেল কলেজে ভর্তির বেলায়ও প্রথম দফায় চান্স পাইনি। দ্বিতীয় দফায় কোনোভাবে টেনেটুনে সুযোগ পেয়েছিলাম। ঠিক করেছিলাম, হার্ট সার্জন হব। নিজেকে তখন থেকেই বোঝাতাম, পরীক্ষায় খারাপ করতে পারি, কিন্তু হার্ট সার্জন হিসেবে সেরা হয়েই ক্ষান্ত হব। স্কুল-কলেজের পরীক্ষায় খারাপ করলেও আমি আত্মবিশ্বাসী যে হার্ট সার্জারিতে আমাকে কেউ পেছনে ফেলতে পারবে না। এই একটা কাজই আমি ভালো পারি। তাই এটা নিয়েই আমার সব আত্মবিশ্বাস, পরিশ্রম আর স্বপ্ন দেখা। তোমরাও যে যেটায় ভালো, সেটার চর্চা করে যাও, সেটা নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখো। দেখবে জীবনে যেখানে পৌঁছতে চাও, তোমার অধ্যবসায় তোমাকে সেখানেই নিয়ে যাবে।

আরও পড়ুন- শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসের এক সপ্তাহ পার, হতাশ শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা

ইউরোপ আমেরিকার দিতে তাকিয়ে থেকে লাভ নেই। নিজেদের সমস্যা নিজেদেরই সমাধান করতে হবে। কর্ণাটকে কৃষকরা টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারতেন না। অপারেশন করাতে পারতেন না। আমি উদ্যোগ নেই। প্রতি মাসে মাত্র ৫ রুপি করে প্রিমিয়াম দেওয়ার শর্তে যেকোনো ধরনের অপারেশনের সুবিধা ভোগ করার ব্যবস্থা করে দিই ১৭ লাখ কৃষককে। যশোশ্বনী মাইক্রো হেলথ কেয়ার স্কিম নামে ওই কর্মসূচির আওতায় এখন কর্ণাটকে ৪০০ হাসপাতাল থেকে ৪০ লাখ কৃষক নানা ধরনের অপারেশনের সুবিধা পাচ্ছেন।

আরও পড়ুন- ভর্তি পরীক্ষার সিলেবাস চূড়ান্ত করল বুয়েটের একাডেমিক কাউন্সিল

অনেকেই অনেক কথা বলবে। তুমি ব্যর্থ। তোমাকে দিয়ে কিছু হবে না। এগুলো পুরাতন কথা। বহু বছর ধরে চলে আসছে। শিক্ষকদের একটা অংশ শিক্ষার্থীদের এভাবে বলেন। কিন্তু ভুলেও কখনো হাল ছেড়ো না। তুমি তোমার নিজের গতিতে, নিজের স্বপ্নের পথে এগিয়ে যাও।

সূত্র: লিড ক্যাম্পাস