দাঙ্গা লাগে না, দাঙ্গা লাগানো হয়
হিজাব বিতর্কে ভারতের কর্ণাটকের সকল স্কুল-কলেজ আগামী তিন দিন বন্ধ ঘোষণা করেছেন সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বাসাভারাজ বোম্মাই। শান্তি ও সম্প্রতি রক্ষার জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এমন সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতে বসবাসকারী বাংলাদেশী লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, খুব বড় ইলেকশানের আগে আগেই শুনেছি দাঙ্গা লাগানো হয়। দাঙ্গা মানেই হিন্দু-মুসলমান। কিছুটা হিন্দু-মুসলমান হলে নাকি কিছুটা ভোট মেলে। ধরা যাক, এক পারসেন্ট। দুর্দিনে ওটিই বা কম কী! লোকে বলে।
এদিকে, রাজ্যের কিছু কিছু জায়গায় পাথর নিক্ষেপকারী প্রতিবাদকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই শান্তি ও সৌহার্দ্য বজায় রাখার জন্য আবেদন করেছেন।
আরও পড়ুন: ‘আমি হিজাব পরলে তাদের সমস্যা কোথায়?’
কয়েক সপ্তাহ আগে রাজ্যের কয়েকটি কলেজ হিজাব পরা তাদের ইউনিফর্ম নীতিবিরুদ্ধ বলে ক্লাসের ভেতর হিজাব পরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করলে বিতর্কের সূত্রপাত হয়।
পরে সেই ছাত্রীদের আবার ক্যাম্পসে ঢুকতে দেয়া হলেও তাদেরকে কোন ক্লাসে অংশ না নিয়ে আলাদা একটি কক্ষে বসে থাকতে বলা হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
কর্নাটকের কয়েকটি কলেজ তাদের ক্লাসরুমে হিজাব পরা নিষিদ্ধ করার পর থেকে গত কয়েক দিন ধরেই উত্তেজনা বাড়ছিল।
গত বৃহস্পতিবার একটি ভিডিও বের হয় যাতে দেখা যায়, কর্ণাটকের উদুপি জেলার কুন্ডাপুরে একদল হিজাব-পরা ছাত্রীর মুখের ওপর একটি কলেজের দরজা বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এর একদিন আগে ওই কলেজের ছাত্রদের হিন্দুত্ববাদীদের প্রতীক গেরুয়া রঙের শাল পরে হিজাবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
তসলিমা নাসরিন ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, একদিক দিয়ে ভালো, দাঙ্গা লাগে না। দাঙ্গা যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে লেগে যেত, তাহলে ভয় ছিল। তাহলে ভাবা যেত, হিন্দু-মুসলমান জন্মের শত্রু, এদের আর এক সমাজে বসবাস সম্ভব নয়। আমার তো মনে হয় পার্টিশানের দাঙ্গাও লাগেনি, লাগানো হয়েছিল।