০৭ জানুয়ারি ২০২২, ১৮:৫২

আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি রাশেদ, সম্পাদক কাশেম

রাশেদ আহমেদ ও মোহাম্মদ আবুল কাশেম   © সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব (এবিপিসি)-এর নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে রাশেদ আহমেদ (চ্যানেল আই) সভাপতি এবং মোহাম্মদ আবুল কাশেম (বাংলাদেশ প্রতিদিন) সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় এবিপিসির জরুরি সভায় এ কমিটি গঠন করা হয়।

এবিপিসির নির্বাচন ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্যে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। সেই কমিশন সীমাহীন টালবাহানায় নির্দ্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দেওয়ায় নির্বাচন কমিশনের প্রভাবশালী সদস্য পপি চৌধুরী পদত্যাগ করেন।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এই শুন্য পদ পূরণেও কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মিশুক সেলিম তার পছন্দের একটি কমিটি ঘোষণা করেন ১ জানুয়ারি। যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য এবং গঠনতন্ত্র সম্মত হয়নি। এ নিয়ে সাধারণ সদস্যের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেওয়ায় ৩ জানুয়ারি জরুরি এক সভা করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ৬ জানুয়ারি জুম মিটিংয়ে অনুষ্ঠিত জরুরি এ সাধারণ সভায় নতুন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে

সভায় চ্যানেল আই-এর যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি রাশেদ আহমেদকে সভাপতি এবং বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর উত্তর আমেরিকা সংস্করণের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার মোহাম্মদ আবুল কাশেমকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে ১১ সদস্যের একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—সহ-সভাপতি সাংবাদিক তপন চৌধুরী ও সুব্রত চৌধুরী, অর্থ সম্পাদক-জামান তপন (লেখক-সাংবাদিক), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-শাহ ফারুকুর রহমান (বিডিইয়র্ক), সাংগঠনিক সম্পাদক-আজিমউদ্দিন অভি (যমুনা টিভি), প্রচার সম্পাদক লেখক-সাংবাদিক শহিদুল্লাহ কায়সার, নির্বাহী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার (বাংলাদেশ প্রতিদিন), কানু দত্ত (এটিএন বাংলা) এবং লেখক-সাংবাদিক রাজু ভৌমিক।

সভায় সদস্যদের বার্ষিক ফি ১০০ ডলারের পরিবর্তে ৫০ ডলার পুনর্নির্দ্ধারণ করা হয় এবং কর্মরত সাংবাদিকদের যথানিয়মে আবেদনের পরই সদস্য পদ প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। সে আলোকে বিশ্ববাংলা টোয়েন্টিফোর টিভির সিইও আলিম খান আকাশকে পূর্ণাঙ্গ সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: সান্ধ্যকালীনে আগ্রহী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, দ্বিতীয়বার ভর্তিতে না কেন?

সভায় বোস্টন থেকে প্রতাপ চন্দ্রশীল, আটলান্টিক সিটি থেকে সুব্রত চৌধুরীও যোগদান করেন। সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন কানেকটিকাট থেকে পপি চৌধুরী ও তপন চৌধুরী।

শহিদুল্লাহ কায়সার, জামান তপন, আজিমউদ্দিন অভি এবং আলিম খান আকাশসহ বেশ কয়েকজন এবিপিসির গঠনতন্ত্র পরিপন্থিভাবে ঘোষিত কথিত কমিটিকে সম্পূর্ণ বেআইনী হিসেবে অভিহিত করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

নবগঠিত এই কমিটির পরিধি প্রয়োজনে সম্প্রসারণের সিদ্ধান্তও হয়েছে সাধারণ সভার মধ্যদিয়ে। শিগগির নতুন কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে নবনির্বাচিত আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এদিকে, অন্যায়ভাবে আমেরিকা বাংলাদেশ প্রেসক্লাব দখলের চেষ্টাকারীদের প্রতি তীব্র ক্ষোভ ও ঘৃণা প্রকাশ করেছেন নবনির্বাচিত আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের কর্মকর্তাবৃন্দ।

আরও পড়ুন: করোনা শনাক্তের হার বেড়ে ৫.৬৭ শতাংশ

তারা জানান, আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব (এবিপিসি)’র নির্বাচন হওয়ার কথা ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে। গঠনতন্ত্রের ২.১ ধারা মোতাবেক ৩১(৩০)নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার বিধান থাকায় সর্বশেষ সাধারণ সভায় ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ এর মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের ২ সদস্য কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে পদত্যাগী কমিশনারের অজ্ঞাতে উপরোক্ত সিদ্ধান্ত অমান্য করে ৮ জানুয়ারিতে ধার্য করা হয়। অথচ গঠনতন্ত্রের ১.৪.১ ধারা মোতাবেক ৩১ ডিসেম্বরের পরে কোনো সদস্যের মেয়াদ থাকে না। ভোটাধিকারও থাকেনা।

এমন অন্যায়ের প্রতিবাদে নির্বাচন কমিশনের প্রভাবশালী সদস্য পপি চৌধুরী পদত্যাগ করেন। তার পদত্যাগের পরিপ্রেক্ষিতে সেই শুন্য পদে রীতি অনুযায়ী (২.২ ধারা মোতাবেক তিন সদস্যবিশিষ্ট) কাউকে নিয়োগ করা হয়নি।

এ ব্যাপারে বিদায়ী কমিটির সভাপতি লিখিতভাবে এবিপিসির নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করেও কোনো সাড়া পাননি। এমন স্বেচ্ছাচারিতার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছে ‘রাশেদ-কাশেম পরিষদ’। আর সে সুযোগে কথিত দুই সদস্যের নির্বাচন কমিশন পছন্দের কয়েকজনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করে ১ জানুয়ারি। সেই পত্রে নির্বাচন কমিশনের দুই সদস্য মিশুক সেলিম আর জাহেদ শরীফের স্বাক্ষর দেখা গেছে। অথচ ক্লাবের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন সদস্যের পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন কমিশন ব্যতিত নির্বাচনের কোনো কার্যকারিতা থাকতে পারে না।