মিসরে ব্রাদারহুডের ১১ নেতার মৃত্যুদণ্ড বহাল, যেকোনো সময় কার্যকর
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২১, ১০:২১ AM , আপডেট: ২৬ জুন ২০২১, ১০:২১ AM
মিসরে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে উৎখাতের আগে ক্ষমতায় ছিল মুসলিম ব্রাদারহুড। তখনকার যুবমন্ত্রী ওসামা ইয়াসিন ও ব্রাদারহুডের সাবেক মিডিয়া মুখপাত্র আহমেদ আরেফসহ মিসরে গত ১৪ জুন দেশটির সর্বোচ্চ আপিল আদালতে আরও ১১ সরকার বিরোধীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা বহাল রাখা হয়েছে।
মিসরের ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে, আদালতের রায় ঘোষণার ১৪ দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্টের ক্ষমা ঘোষণা না আসলে ফাঁসি দেওয়া হবে। এতে যে কোনো সময় তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। ২০১৫ সালে শুরু হওয়া গণবিচার শেষ হয়েছে আদালতের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে।
এদিকে, মৃত্যুদণ্ডের অপেক্ষায় থাকা পার্লামেন্টের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ আল-বেলতাজির স্ত্রী সানা আবদেল গাওয়াদ বলেন, 'আমরা ক্রমাগত আতঙ্কের মধ্যে বাস করছি। মৃতুদণ্ডের সাজা বহাল থাকায় যে কোনো মুহূর্তে তা কার্যকর হতে পারে।'
এছাড়াও মুসলিম ব্রাদারহুডের রাজনীতিবিদদের পরিবার বলছে, 'জুনের শেষ দিকে প্রেসিডেন্টের ক্ষমা না আসলে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হতে পারে।' মৃত্যুদণ্ডের অপেক্ষায় থাকা ব্রাদারহুড নেতাদের মধ্যে ২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তিরাও রয়েছেন।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, শুরু থেকেই যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই এই বিচার হয়েছে। হিউম্যান রাইটসের ভাষায়, এটি বিচারের নামে মশকরা। আর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, মিসরের সর্বোচ্চ আপিল আদালতের জন্য এই বিচার কলঙ্ক হয়ে থাকবে।
যা দেশটির পুরো বিচার ব্যবস্থায় কালো ছায়া ফেলবে। কারণ রাবা চত্বরে ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিচারের আওতায় নিয়ে আনা হয়নি। ২০১৩ সালে রাবা চত্বরে সেনাঅভ্যুত্থানবিরোধী অবস্থান বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ৭৩৯ জনের বিচার শুরু হয়েছিল।
ওই বছরের ১৪ আগস্টে সেনাবিক্ষোভে ৮০০ প্রতিবাদকারীকে হত্যা করা হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ভাষায়, আধুনিক ইতিহাসে এটিই একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষকে হত্যার ঘটনা। যা এর আগে কখনো ঘটেনি।
এরপর ২০১৯ সালের জুনে আদালতের অধিবেশন চলাকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান মোহাম্মদ মুরসি। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে অবস্থায় মুসলিম ব্রাদারহুড নেতাকে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছিল, তাতে সরাসরি তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনাকে রাষ্ট্রীয় অনুমোদিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
সূত্র: লন্ডনভিত্তিক মিডল ইস্ট
আরও দেখুন: সেই পুলিশ কর্মকর্তার সাড়ে ২২ বছর কারাদণ্ড