হার্ভার্ড থেকে ঝরে পড়া বুম এখন মাল্টি-বিলিওনিয়ার

দক্ষিণ কোরিয়ার ই-কমার্স জায়ান্ট কোপাংয়ের প্রতিষ্ঠাতা বুম কিম
দক্ষিণ কোরিয়ার ই-কমার্স জায়ান্ট কোপাংয়ের প্রতিষ্ঠাতা বুম কিম  © সংগৃহীত

সৃজনশীলতা, উদ্যম, উদ্ভাবনী মনোভাব দেখিয়ে সফলদের একজন দক্ষিণ কোরিয়ার ই-কমার্স জায়ান্ট কোপাংয়ের প্রতিষ্ঠাতা বুম কিম। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। তবে সেখানকার গ্র্যাজুয়েট হওয়ার স্বপ্ন তার পূরণ হয়নি। মাঝপথে ঝরে পড়েন। তবে তার উদ্যমী মনোভাব তাকে থামতে দেয়নি। হার্ভার্ডের এমবিএ শেষ করতে না পারলেও সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বুম। এখন তিনি মাল্টি-বিলিয়নেয়ার।

গত বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হয়েছে অনলাইন খুচরা বিক্রেতা কোপাং। প্রথমদিনেই তরতর করে উঠে গেছে শেয়ারদর। এতেই ভাগ্য খুলেছে বুমের। মাল্টি-বিলিয়নেয়ার ক্লাবের সদস্য হিসেবে নিজের নাম লেখাতে পেরেছেন তিনি। তার ব্যবসার শুরুর দিক থেকেই শেয়ারদর বাড়তে থাকে। বর্তমানে মোট শেয়ারের মূল্য ৮৬০ কোটি ডলারেরও বেশি।

২০১৪ সালে যুক্ত হওয়া আলিবাবার পর এশিয়ার বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান হিসেবে কোপাং মার্কিন শেয়ারবাজারে অবস্থান করে নিয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটি এখনো লোকসানে আছে। তবে করোনার কারণে অনলাইনে কেনাকাটা বাড়ায় গত বছর এর রাজস্ব প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। কোপাংয়ের শেয়ারদর বেড়েছে ৪১ শতাংশ। রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান উবারের পরে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বড় আইপিও প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয় বুম কিমের কোপাং। ‘দক্ষিণ কোরিয়ার অ্যামাজন’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে কোপাংকে।

ব্যবসায়িক সমৃদ্ধির কারণে এতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করছেন অনেকে। কোপাংয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী বুম কিম বলেন, ‘আমাদের বড় সৌভাগ্য যে অনেক বড় বড় বিনিয়োগকারী বিনিয়োয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে তাদের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ নেই।

দক্ষিণ কোরিয়ায় জন্মগ্রহণ করা বুম কিম মাধ্যমিকে পড়ার সময় যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরিত হন। পরে সেখানকার নাগরিকত্ব লাভ করেন। তবে হার্ভার্ডের এমবিএ থেকে ঝরে পড়ায় তিনি ফের দক্ষিণ কোরিয়ায় চলে যান। ২০১০ সালে তিনি কোপাং প্রতিষ্ঠা করেন। সংস্থাটি ব্যাপক তৎপরতার সঙ্গে সরবরাহ কার্যক্রম বৃদ্ধি করে।

কোপাংয়ের পণ্য বিতরণ কেন্দ্রগুলো প্রায় সাড়ে ১১ কিলোমিটার অঞ্চলজুড়ে সেবা দিচ্ছে। এর মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ার অন্তত ৭০ শতাংশ মানুষকে সেবার আওতায় নিয়ে এসেছে কোপাং। বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে চাইছে কোপাং। এ লক্ষ্যে খাবার ডেলিভারি ও স্ট্রেমিং সেবায় বিনিয়োগ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

তবে অন্য বড় সংস্থার মতোই কিছু অভিযোগ রয়েছে কোপাংয়ের বিরুদ্ধে। পণ্য সরবরাহকারী কর্মীদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু এবং অতিরিক্ত কাজ করানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে তদন্তের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাদেরকে।


সর্বশেষ সংবাদ