‘হাসপাতালে যাব না’ বলে দা নিয়ে তাণ্ডব করোনা রোগীর

  © আনন্দবাজার

কখনও হাতে ধারালো দা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, কখনও উঠে পড়ছেন গাছে। আবার কখনও ছুটে গিয়ে ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে পড়ছেন। করোনা আক্রান্ত এক রোগী রবিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে এভাবেই পুলিশ, স্বাস্থ্যকর্মী এবং গ্রাম পঞ্চায়েত কর্মীদের সঙ্গে লুকোচুরি খেললেন। তাঁকে হাসপাতালে নিতে গিয়ে রীতিমতো হয়রানির শিকার হতে হল তাঁদের।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকের মহাকালগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের স্কুলডাঙ্গা এলাকায় এই ঘটনায় রীতিমতো হইচই পড়ে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একুশ বছর বয়সী ওই যুবক গত ২২ মে মহারাষ্ট্র থেকে বাড়ি ফেরেন। জেলার বীরপাড়া এলাকার কোয়রেন্টিন কেন্দ্রে তাঁকে রাখা হয়। ২৭ মে তাঁদের লালারসের নমুনা নিয়ে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়।

গত ৫ জুন ১৪ দিন হয়ে যাওয়ার পর তাঁকে কোয়রেন্টিন কেন্দ্র থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্ত রবিবার ব্লকের আট জনের সঙ্গে তাঁর রিপোর্টও পজিটিভ আসে। এরপরই তাঁকে কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স আসে। কিন্তু গ্রামে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স এসেছে দেখেই খেপে যান ওই যুবক। স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁকে গাড়িতে উঠতে বললে তিনি যেতে অস্বীকার করেন।

সেসময় পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁকে জোর করতে গেলে ধারালো দা নিয়ে তেড়ে আসেন। এমনকি, পরিবার ও প্রতিবেশীদেরও ওইভাবে তিনি ভয় দেখান। তাঁর সাফ কথা, হাসপাতালে তিনি যাবেন না। বাড়িতেই তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এরপর পুলিশকর্মীরা জোর করতে থাকলে তিনি ছুটে পালিয়ে কখনও ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে পড়েন, কখনও গাছে উঠে পড়েন। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁর এই লুকোচুরি চলতে থাকে।

শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ অনেক বুঝিয়ে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে সক্ষম হন পুলিশ এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। তবে ওই যুবকের শর্ত, তাঁকে নতুন জামা-প্যান্ট দিতে হবে এবং আলাদা ঘরে রেখে চিকিৎসা করাতে হবে। সেই শর্ত মানার পর তিনি হাসপাতালে যেতে রাজি হন। স্বাস্থ্য দফতর সুত্রে জানা গেছে, তাঁকে এ দিন তপসিখাতা কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

শামুকতলার থানার ওসি বিরাজ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘যুবকটি করোনা সংক্রমণ হয়েছে জানতে পেরে মানসিক স্থিতি হারিয়ে ফেলেন। তাঁকে বুঝিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া গিয়েছে।’ আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকের এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, ‘রীতিমত পাঁচঘণ্টা হয়রানি করিয়ে ওই যুবকটি হাসপাতালে গেলেন। ওভাবে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ানোয় আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। তবে পুলিশ থাকায় রক্ষা।’ খবর: আনন্দবাজার।


সর্বশেষ সংবাদ