০৯ আগস্ট ২০২৫, ২২:০৯

চীন-রাশিয়ার দিকে ঝুঁকছে ভারত?

যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের পতাকা  © সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির কারণে ভারতকে চীন ও রাশিয়া থেকে দূরে রাখার দীর্ঘদিনের মার্কিন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতে বসেছে বলে সতর্ক করেছেন তাঁর সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন। এই নীতি উল্টো ভারতকে চীন ও রাশিয়ার কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে রুশ তেল কেনার অভিযোগে ভারতের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপকে তিনি এ ব্যর্থতার অন্যতম বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। (খবর সিএনএন)

সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বোল্টন জানান, চীনের তুলনায় ভারতের ওপর অনেক বেশি কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। যেখানে চীনের সঙ্গে সীমিত সময়ের বাণিজ্য যুদ্ধ চালানোর পর তা শিথিল করা হয়েছে, সেখানে ভারতের ওপর আরোপিত হয়েছে ৫০ শতাংশের বেশি শুল্ক—এর মধ্যে রুশ সমরাস্ত্রে অর্থায়নের অভিযোগে ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্কও রয়েছে।

আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বর থেকে ৫ কোটি শিশুকে দেওয়া হবে টাইফয়েডের টিকা

বোল্টনের মতে, এই শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘সবচেয়ে খারাপ ফল’ বয়ে এনেছে, কারণ ভারত এতে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, বিশেষ করে যখন তারা দেখেছে চীনের ওপর একই ধরনের শুল্ক আরোপ হয়নি। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এই নীতি উল্টো ভারতকে চীন ও রাশিয়ার কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিপরীতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেওয়ার পথ তৈরি করতে পারে।

এর আগে দ্য হিল-এ প্রকাশিত এক মতামত নিবন্ধে বোল্টন সতর্ক করেছিলেন, বেইজিংয়ের প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের নরম মনোভাব মার্কিন কৌশলগত স্বার্থ বিসর্জনের শামিল হতে পারে। তাঁর মতে, যদি হোয়াইট হাউস দিল্লির তুলনায় বেইজিংয়ের প্রতি বেশি সহনশীল আচরণ করে, তবে তা হবে ‘বিরাট ভুল’।

মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞ ও সাবেক বাণিজ্য কর্মকর্তা ক্রিস্টোফার প্যাডিলাও সতর্ক করে বলেন, এই শুল্ক দীর্ঘমেয়াদে ভারত–মার্কিন সম্পর্কের ক্ষতি করতে পারে। তাঁর আশঙ্কা, ভবিষ্যতে ভারত প্রশ্ন তুলতে পারে যুক্তরাষ্ট্র আদৌ নির্ভরযোগ্য অংশীদার কি না, কারণ এই শুল্কের স্মৃতি দীর্ঘদিন ধরে থাকবে।

এদিকে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ ভারতের রুশ তেল আমদানি থামাতে পারেনি। বরং ভারত এই আমদানিকে নিজেদের অধিকার হিসেবে রক্ষা করছে এবং শুল্ককে ‘অন্যায্য ও অযৌক্তিক’ বলেছে। মস্কোও দিল্লিকে সমর্থন জানিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবৈধ বাণিজ্য চাপপ্রয়োগের অভিযোগ তুলেছে। এই ঘটনা ঘটেছে ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকের ঠিক এক সপ্তাহ আগে।

বোল্টনের ধারণা, আসন্ন এই বৈঠক পুতিনকে নিজের কূটনৈতিক এজেন্ডা এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেবে, আর ভারত–শুল্ক ইস্যুও সেই বৃহত্তর কৌশলগত খেলায় পরিণত হতে পারে।