চীনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাশিয়াকে যুদ্ধে সাহায্য করছে ভারত!
প্রতিবেশী চীনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে রাশিয়াকে সহযোগিতা করছে ভারত। এমনটাই অভিযোগ তুলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ও হোয়াইট হাউসের ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ স্টিফেন মিলার। এর আগে রাশিয়া সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য নিয়ে একাধিকবার নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। রাশিয়া থেকে অস্ত্র ও খনিজ তেল আমদানি করার বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন ভারতকে জরিমানা গুনতে হবে। এবার সেই ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢেলে হোয়াইট হাউজের এই কর্মকর্তা বলেছেন, নয়াদিল্লি ও বেইজিং এর একসঙ্গে মস্কোকে সহযোগিতা করে যাওয়ার বিষয়টি ‘আশ্চর্যজনক সত্য’।
সোমবার (৪ আগস্ট) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দ বাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো মধ্য বাংলাদেশ,পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার থেকে ভারতের পণ্যের উপর মার্কিন শুল্কের পরিমাণ বেশি-যার পরিমাণ ২৫ শতাংশ। রাশিয়াকে সুবিধা দেয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ্য করে ট্রাম্প দিল্লিকে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে নয়াদিল্লির সামরিক ও তেল বাণিজ্যকে তিনি ভালো ভাবে গ্রহণ করছেন না। মস্কোর সঙ্গে ভারতে অবশ্যই তাদের বাণিজ্য কমিয়ে নিয়ে আসতে হবে।
মার্কিন এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ট্রাম্প খুব স্পষ্ট করেই বলেছেন, এটা মেনে নেওয়া যায় না। রাশিয়া থেকে তেল ক্রয় করে যাচ্ছে ভারত। এর মাধ্যমে নয়াদিল্লি রাশিয়াকে যুদ্ধে প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান দিচ্ছে। মানুষ এটা শুনে অবাক হবেন যে, ভারত আসলে চীনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে রাশিয়া থেকে তেল ক্রয় করছেন। এটা একটা আশ্চর্যজনক সত্য ‘।
আরও পড়ুন: জাপান সাগরে যৌথ মহড়া শুরু চীন-রাশিয়ার, যুক্তরাষ্ট্রকে বার্তা?
স্টিফেন বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারত ও নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে অসাধারণ এক সম্পর্ক তৈরি করতে চান। কিন্তু রাশিয়াকে যুদ্ধের অর্থ জোগান দাতা হিসেবে ভারতের বিষয়ে আমাদের আরও বাস্তবসম্মত হতে হবে। ইউক্রেনে শান্তি ফেরাতে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিকসহ সব ধরনের পথ খোলা রেখেছেন ট্রাম্প।
২০২২ সালের ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ এখনও চলমান রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই রাশিয়ার উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যার বেশির ভাগই বাণিজ্যের ওপর। তবে রাশিয়া নিজের অর্থনীতির চাপ সামলাতে তেলের বাজারে দর কমিয়ে দেয়। যে কারণে ভারত হয়ে ওঠে মস্কোর অন্যতম আমদানিকারক রাষ্ট্র। রাশিয়ার তেলের বাজারে ক্রেতা হিসেবে চীনের পরে ভারতে অবস্থান। তেলের দাম কম হওয়ায় রাশিয়া থেকে নয়াদিল্লি এই মুহূর্তে ৩৫ শতাংশ তেল আমদানি করছেন। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে মার্কিন-পশ্চিমা মিত্ররা চীনকে রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে বললেও বেইজিং কোন ধরনের পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করেছে গত কয়েক বছরে।
এদিকে নয়াদিল্লি স্পষ্টভাবে জানিয়েছে,নিজেদের জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক বাজারের দাম বিবেচনা করে তেল আমদানি করবে ভারত। আপাতত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করে দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই নয়াদিল্লির।