ইসরায়েলের কাছে এখনো অস্ত্র বিক্রি করছে যেসব দেশ

গত সপ্তাহে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আন্তর্জাতিক ত্রাণ সরবরাহকারী সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের সাতকর্মী নিহত হওয়ার ঘটনার পর ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করতে মিত্র দেশগুলোর ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বেড়েছে।

তবে সেই চাপ উপেক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশ এখনো ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ করে যাচ্ছে। সম্প্রতি ইরানের যেকোনো সময় হামলার খবর প্রকাশ করে ইসরায়েলের পক্ষে থাকারও ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।

যদিও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইসরায়েল গাজায় বেসামরিক নাগরিক হত্যা বন্ধ না করলে অস্ত্র সরবরাহে শর্ত আরোপ করা হবে। মার্কিন অনেক আইন প্রণেতা বাইডেনের এই অবস্থানকে সমর্থন করেছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থান কতক্ষণ টিকবে তা বলা মুশকিল। 

ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় মদদদাতা যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সহমর্মিতা অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি। ফলে স্বাভাবিকভাবে অনুমানই করা যায়, যুক্তরাষ্ট্রই ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় অস্ত্রের জোগানদাতা। 

ইসরায়েল যে পরিমাণ বিদেশি অস্ত্র আমদানি করে তার ৬৮ শতাংশ অস্ত্রের জোগান দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলকে অস্ত্রের জোগানদাতার তালিকায় জার্মানির অবস্থান দ্বিতীয়। দেশটি ইসরায়েলকে মোট চাহিদার ৩০ শতাংশ জোগান দেয় জার্মানি। 

অন্য দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্য, ইতালি ও অস্ট্রেলিয়া ইসরায়েলের অন্যতম শীর্ষ অস্ত্র জোগানদাতা। তবে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং সম্প্রতি দাবি করেছেন, তার দেশ গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইসরায়েলকে কোনো অস্ত্র দেয়নি। 

কানাডা, নেদারল্যান্ডস, জাপান, স্পেন ও বেলজিয়াম ঘোষণা দিয়েছে, তারা আর ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি করবে না। এই তালিকায় যুক্ত হতে পারে ইউরোপের আরেক দেশ ডেনমার্কের নাম। দেশটির আদালতে এ-সংক্রান্ত একটি মামলা চলমান। 

ডেনমার্কের আদালতে চলমান মামলার বিষয়বস্তু হলো—ডেনমার্ক সরকার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এফ-৩৫ সিরিজের যুদ্ধবিমানের যন্ত্রাংশ বিক্রি করবে না। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র সেসব যন্ত্রাংশের সহায়তায় যুদ্ধবিমান তৈরি করে তা ইসরায়েলে সরবরাহ করে। 

মজার ব্যাপার হলো, ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্র এতটাই সরাসরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছে যে দেশটি নিজেই এখন অস্ত্র ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জামের অন্যতম বড় রপ্তানিকারক। ২০১৯ সালে খোদ যুক্তরাষ্ট্রই ইসরায়েলের কাছ থেকে ১৫০ কোটি ডলারের অস্ত্র বা সামরিক সরঞ্জাম কিনেছে। 

তবে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের কাছ থেকে কিনলেও দেশটি এখনো এককভাবে তেল আবিবের সবচেয়ে বড় নির্ভরতার জায়গায়। কারণ, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে, দেশটি কয়েক দফায় তেল আবিবকে অস্ত্র সহায়তা দিয়েছে। এসব অস্ত্রের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের বোমা থেকে শুরু করে আগ্নেয়াস্ত্র এমনকি যুদ্ধবিমান পর্যন্ত আছে। [সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান]

 

সর্বশেষ সংবাদ