তদন্তের মুখে নিজ মোবাইলের পাসওয়ার্ড ভুলে গেলেন বরিস

যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন
যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন  © সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তার পুরনো আইফোনের পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন। এর ফলে করোনাসংক্রান্ত সরকারি এক তদন্তের জন্য ফোনে থাকা তথ্য সরবরাহ করতে পারছেন না তিনি। বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এসব তথ্য জানিয়েছে।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন জনসন আইফোনটি ব্যবহার করলেও, এখন সেটির পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন। অনেকে বিষয়টিকে বরিসের তথ্য না দেওয়ার পরিকল্পনা বলে দাবি করেছেন। তবে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর এক প্রতিনিধি বলেছেন, বরিস তথ্য হস্তান্তর করতে আগ্রহী।

বরিস জনসনের প্রতিনিধি দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, আগেই বলা হয়েছে, তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবেন জনসন। সরকারি তদন্তের স্বার্থে তিনি যেকোনো প্রাসঙ্গিক তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে রাজি আছেন।

সরকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জনসনের আইনজীবীরা তার হোয়াটসঅ্যাপ বার্তাগুলো পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে তারা বলছেন, আইফোনটিতে বারবার ভুল পাসওয়ার্ড প্রবেশ করালে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সব তথ্য মুছে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

এদিকে, ব্রিটিশ সাইবার সিকিউরিটি কোম্পানি প্রোমনের সিনিয়র টেকনিক্যাল ডিরেক্টর অ্যান্ড্রু হোয়েলি বলছেন, এটি মূলত একটি দারুণ খোঁড়া অজুহাত। বরিসের হোয়াটসঅ্যাপের তথ্য ব্যাকআপ করা থাকলে, সেগুলো পেতে কয়েক মিনিট সময় লাগবে।

‘তার সিম কার্ডটি অন্য আরেকটি মোবাইলফোনে লাগালেই তার ওই হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করা সম্ভব। বরিসের মোবাইলফোন ও সিম কূটনৈতিক হলেও, তার হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধার করা অসম্ভব নয়। তিনি ও তার আইনজীবীরা মূলত তদন্তের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক কিছু বিষয় এড়িয়ে যেতে চাইছেন।’

জনসনের হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে কোভিড সম্পর্কিত যুক্তরাজ্যের নানা নীতির পাশাপাশি ২০২০ সালে আরোপিত লকডাউন নিয়ে নানা আলোচনার তথ্য রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তদন্তকারীরা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিষয়ে অন্যান্য তথ্যও চেয়েছেন। এর মধ্যে আছে, বরিস কীভাবে তার ডাউনিং স্ট্রিট অ্যাপার্টমেন্টের সংস্কারের জন্য ২ হাজার পাউন্ড অর্থায়ন করেছিলেন।

২০২০ সালে করোনাভাইরাস আতঙ্কে বিশ্বের অধিকাংশ দেশে কঠোর লকডাউন আরোপ করা হয়। কিন্তু সেসময় সবাই যখন ঘরবন্দী ছিলেন, ঠিক তখন সব বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করে নিজের সরকারি বাসভবনে কয়েকবার পার্টি করেন বরিস। তার এমন কাণ্ড নিয়ে যুক্তরাজ্য-জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। এরপর বিষয়টির তদন্তে নামে পুলিশ।

অভিযোগ রয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমেই বন্ধুদের পার্টিতে আমন্ত্রণ জানাতেন বরিস। তাই তদন্তের জন্য পুলিশ হোয়াটসঅ্যাপে তার আদান-প্রদান করা বার্তাগুলো দেখতে চান। কিন্তু বরিস জানান, ওই আইফোনটি তিনি এখন আর ব্যবহার করেন না। ২০২১ সালের মে মাসেই সেটির ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। দীর্ঘদিন ব্যবহার না করায় পাসওয়ার্ডও ভুলে গেছেন।


সর্বশেষ সংবাদ