১৩ জুন ২০২২, ১৯:৫৭

স্বামীকে ‘ভাই, বাচ্চা, আমার আব্বুটা’ বলে ডাকা যাবে কি?

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক  © সংগৃহীত

অনেক স্ত্রী অতি আবেগী হয়ে স্বামীকে ‘আদরের বাচ্চা, আমার আব্বুটা’ বলে সম্বোধন করেন। ইসলাম এ বিষয়ে কি বলে সেটি সম্পর্কে ব্যখা দিয়েছেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ। 
 
তিনি বলেন, প্রত্যেকটা জিনিসের মধ্যে একটা সীমা রয়েছে। আল্লাহ বলেছেন, তোমরা সীমা লঙ্ঘন করো না। আল্লাহ সীমা লঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না। আপনার স্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করুন। স্বামীকে বাচ্চা বা আব্বু কীভাবে বলবে, এই ভালোবাসার তো সংগত ভাষা আছে, অনেক শব্দ আছে। আবেগ দিয়ে এ ধরনের ভাষা উচ্চারণের কোনো সুযোগ নেই। ইসলাম এ ধরনের বিষয়কে অনুমোদন দেয় না এবং এটা কোনোভাবেই উচিত নয়। যদি আবেগের কারণে ভুলবশত মুখ থেকে এসে যায়, তাহলে আল্লাহর কাছে তওবা করে নিলেই হবে এবং এ ধরনের কাজ পুনরায় আর করবেন না।

আরও পড়ুন: প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকে মুখ থুবড়ে পড়তে পারে নতুন শিক্ষাক্রম

স্ত্রীকে বোন বলে ডাকার বিধান : স্ত্রীকে বোন বা আপু বলে ডাকা মাকরুহ। হাদিস শরিফে এসেছে, ‌‘‘এক ব্যক্তি নিজ স্ত্রীকে বলল, হে আমার বোন। রাসুল (সা.) তা শুনে জিজ্ঞেস করলেন, ‘সে কি তোমার বোন?’ তিনি তা অপছন্দ করেন এবং তাকে এভাবে ডাকতে নিষেধ করেন। ’’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২২০৪)

একইভাবে স্বামীকে ভাই বলে সম্বোধন করাও অনুচিত। তবে কেউ এমন বলে ফেললে এর কারণে বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হবে না। (ফাতহুল কাদির ৪/৯১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫০৭; রদ্দুল মুহতার ৩/৪৭০)

তবে স্বামী স্ত্রীকে বোন বলে সম্বোধনের মাধ্যমে এমন ইচ্ছা করে যে, আমার বোন যেমন আমার জন্য হারাম, তুমিও তেমনি আমার জন্য হারাম; তাহলে তা ‘জিহার’-এর অন্তর্ভুক্ত হবে। এমতাবস্থায় স্ত্রী-স্বামীর মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক বহাল থাকবে না যতক্ষণ না স্বামী ‘কাফ্ফারা’ আদায় করে। আর জিহারের কাফ্ফারা হলো ধারাবাহিকভাবে দুই মাস রোজা রাখা বা ৬০ জন অসহায় ব্যক্তিকে খাওয়ানো। (সুরা মুজাদালাহ, আয়াত : ৩)

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘‘তোমাদের মধ্যে যারা নিজেদের স্ত্রীদের ‘জিহার’ করে তারা যেন জেনে রাখে যে, তারা তাদের মা নয়, তাদের মা তো তারাই যারা তাদেরকে প্রসব করেছে, তারা তো কেবল অশালীন ও মিথ্যা কথা বলে, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ ক্ষমাশীল ও মার্জনাকারী। ’’ (সুরা মুজাদালাহ, আয়াত : ২)তাই এ ধরনের অহেতুক ঝামেলা এড়াতে স্ত্রীকে বোন সম্বোধন করা থেকে বিরত থাকাই নিরাপদ।

স্বামীর নাম ধরে ডাকা : স্বামীর নাম ধরে ডাকা যাবে কি না—বিষয়টি নির্ভর করে দেশীয় সংস্কৃতি ও রেওয়াজের ওপর। বাংলাদেশে গ্রামাঞ্চলে সাধারণত স্বামীর নাম ধরে ডাকাকে অসম্মানজনক ও বেয়াদবি মনে করা হয়, যদিও আরবদেশে স্বামীর নাম ধরে ডাকার প্রচলন ছিল। এ ক্ষেত্রে ইসলামের নির্দেশনা হলো, রেওয়াজ থাকলে এবং প্রয়োজন হলে যেকোনো সময় স্বামীর নাম উচ্চারণ করা যাবে।