৪র্থ শিল্প বিপ্লবের সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও সম্ভাবনা কাজে লাগাতে গ্রন্থাগারের ভূমিকা

এবারের গ্রন্থাগার দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সুবর্ণজয়ন্তীর অঙ্গীকার, ডিজিটাল গ্রন্থাগার’
এবারের গ্রন্থাগার দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সুবর্ণজয়ন্তীর অঙ্গীকার, ডিজিটাল গ্রন্থাগার’  © টিডিসি ফটো

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বা ডিজিটাল বিপ্লব ও স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে এবারের গ্রন্থাগার দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সুবর্ণজয়ন্তীর অঙ্গীকার, ডিজিটাল গ্রন্থাগার’। স্বাধীনতার ৫০ বছরে অনবদ্য উপহার আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ। 

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব শব্দটি জনপ্রিয়তা পায় ১৮৫২ সালে। যদিও শব্দটি ফ্রান্সের একজন লেখক প্রথম ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু আরনল্ড টয়েনবি নামে  একজন ইংরেজ লেখক (যিনি মূলত অর্থনৈতিক ইতিহাসবিদ হিসেবে পরিচিত) তার লেখা ‘বৃটেনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ১৭৬০ থেকে ১৮৪০’ এর মাধ্যমে শিল্প বিপ্লবের ধারণাটি জনপ্রিয়তা পায়।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব শব্দটিকে খুব সাধারণভাবে বললে বলা যায় যে, ‘কৃষি ও  হস্তশিল্প সংক্রান্ত পণ্যসমূহকে কল-কারখানার মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রস্তুতকরণের প্রক্রিয়াকে বোঝায়’। কিন্তু শব্দটা কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও বর্তমানে এর ধারণা ব্যাপক ও বিস্তৃত। আধুনিক সভ্যতার বলতে গেলে পুরো পরিবর্তন হয়েছে এই বিপ্লবের অবদান এর ফলে। সভ্যতার উন্নয়নের পথরেখা মূলত নির্দেশিত হয়েছে কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে।

শিল্প বিপ্লবের বৈশিষ্ট্য
শিল্প বিপ্লবের বৈশিষ্ট্যসমূহ জানা থাকলে শিল্প বিপ্লব বলতে কী বোঝায় সেটা আরো পরিস্কার হবে। শিল্প বিপ্লবের প্রধান চারটি বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান-  (১) প্রযুক্তিগত পরিবর্তন, (২) আর্থসামাজিক পরিবর্তন, (৩) সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ও (৪) দক্ষতাগত পরিবর্তন। শিল্প বিপ্লবের মূল পরিবর্তন এসেছে মূলত প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের ফলেই। এর ফলে আর্থসামাজিক সাংস্কৃতিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। লোহা ও ইস্পাতের ব্যবহার,  খনিজ সম্পদ আহরণ, বিদ্যুতের ব্যবহার ও বিভিন্ন বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদির আবিষ্কার, যানবাহন ইঞ্জিনের আবিস্কার, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে (বিশেষ করে টেলিযোগাযোগ) ইত্যাদি সম্ভব হয়েছে এই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের ধাপসমূহ
সংক্ষেপে বললে, ১৭৬০ থেকে ১৮৪০ সালে বৃটেনে প্রথম শিল্প বিপ্লব শুরু হয়। প্রথম শিল্পবিপ্লব শুরু হয়  দক্ষ শ্রমিককে কাজে লাগাবার প্রবণতা, টুকিটাকি মেশিনের ব্যবহারের মাধ্যমে। দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লব শুরু হয় উনিশ শতক থেকে বিশ শতকের মধ্যে। এর একটি বৈশিষ্ট্য হলো বিশ শতকের মধ্যভাগে যৌথ বা অংশিদারি  ব্যবসা পরিচালনা, পণ্যসমূহ বিভিন্ন দেশে পাঠানো ইত্যাদি এ অংশের অন্তর্ভুক্ত। তৃতীয় শিল্প বিপ্লব বিভিন্ন আবিষ্কারের ফলে ত্বরান্বিত হয়। ফ্যাক্টরিতে কম্পিউটারের ব্যবহার,  দুর্দান্ত গতিতে আবহাওয়ার পূর্বাভাস, স্যাটেলাইটের ব্যবহার অন্তর্ভুক্ত করা যায় তৃতীয় শিল্প বিপ্লবের মধ্যে।  চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অন্যতম বৈশিষ্ট্য, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইন্টারনেট (AI) , ইন্টারনেট অফ থিংস (IOT) ইন্টারনেট অব সিস্টেমে (IOS)র ব্যবহার।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে গ্রন্থাগারের সম্পৃক্ততা
গ্রন্থাগারে উন্নয়নের ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা সহজেই অনুধাবন করতে পারি, গ্রন্থাগারের উন্নয়ন সাধিত হয়েছে প্রযুক্তির হাত ধরেই। কাগজের আবিষ্কার মুদ্রণ যন্ত্রের আবিষ্কার তথ্য ব্যবস্থাপনার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। 

তথ্য সম্পদ উন্নয়ন সংরক্ষণ ও বিতরণ  প্রযুক্তির ব্যবহার সহায়তা ছাড়া সম্ভব নয়। তবে আমরা এখনও অনেকেই বুঝতে পারিনা, শিল্প বিপ্লবের অগ্রগতিতে গ্রন্থাগারের উপর কিভাবে প্রভাব ফেলে? এবং শিল্প বিপ্লবের সাথে গ্রন্থাগারকে এবং গ্রন্থাগারিককে কিভাবে সমন্বয় করা যায়? বিষয়টি নিয়ে গ্রন্থাগার জগতে উল্লেখযোগ্য কোন রিসার্চ করা হয়নি।

এটি বুঝতে হলে আমাদের গত অর্ধশতকে গ্রন্থাগার জগতে  কি কি পরিবর্তন হয়েছে সেই ইতিহাস জানা প্রয়োজন।

লুইসের ( Lewis) তথ্যানুসারে -প্রথমত, গ্রন্থাগার স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেবা দেওয়ার প্রবণতা থেকে মেশিন রিডেবল ক্যাটালগ ( MARC)  এবং অনলাইন পাবলিক একসেস ক্যাটালগ (OPAC) এবং গ্রন্থাগারের ডিজিটাল সামগ্রিক ভিডিও ছবি অডিও ইত্যাদি সংরক্ষণের মাধ্যমে এর উন্নয়ন যাত্রা শুরু হয়।  দ্বিতীয়ত,  ১৯৯০ সালের পরের দিকে গ্রন্থাগারে সিডিরম, ফুল ডাটাবেজ, ইন্টারনেট ওয়েবসাইট ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রন্থাগারের সেবা বিস্তৃত হয়। তৃতীয়ত, প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতির ফলে গ্রন্থাগারের সেবার চিত্রটাই পাল্টে যেতে থাকে। এখন বিবলিওমেট্রিক্স, ডাটা এনালাইসিস, ইত্যাদির মাধ্যমে সেবা দেওয়া হচ্ছে।

এ পর্যায়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে আলোকপাত করব
প্রযুক্তির ব্যবহার যেমন আমাদের জীবনে এনে দিয়েছে নানা স্বাচ্ছন্দ, দিয়েছে গতিময়তা, তথাপি এর রয়েছে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জও।  মোটাদাগে বলতে গেলে এর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করাটাও একটা চ্যালেঞ্জ।  আমরা প্রতিনিয়তই তথ্য চুরির ভয়ে থাকি। সাইবার হামলার ভয়ে থাকি। কিংবা দক্ষ জনশক্তি না থাকলে তথ্যপ্রযুক্তি যপোপযুক্ত ব্যবহার করতে না পারার ভয়ে থাকি। সুতরাং, এসব বিপত্তি মোকাবেলা করাও একধরণের চ্যালেঞ্জ বটে।

শুধু দক্ষ জনশক্তি থাকলেও এর সুফল সব সময় পাওয়া যায় না। কারণ, সে দক্ষজনশক্তিকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করাটাও জরুরি হয়ে পড়ে। কারণ, প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত আপডেট হচ্ছে। আজকাল মানুষের অনেক কর্মক্ষেত্র কেড়ে নিচ্ছে প্রযুক্তি। সুতরাং প্রফেশনাল হওয়া ছাড়া উপায় নেই।  আমরা যদি উপরের আলোচনাসমূহকে  গ্রন্থাগারের সাথে সম্পর্কযুক্ত করি,  তাহলে দেখা যাবে যে, এখন অধিকাংশ গ্রন্থাগারে সেই পুরাতন আমলের ক্যাটালগ কার্ড নেই। এখন গ্রন্থাগারে ব্যবহৃত হচ্ছে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির প্রযুক্তি। ব্যবহার করা হচ্ছে গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যার (কোহা)। আরেকটু বাড়িয়ে বললে বলা যায়, উন্নত বিশ্বে রিসার্চের কাজে গ্রন্থাগারিককে জানতে হয় বিগ ডাটা এনালাইসিস, কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং ইত্যাদি। অর্থাৎ এসব কাজ জানা না থাকলে অদূর ভবিষ্যতে গ্রন্থাগারে চাকরি করা কঠিন হবে যাবে।

তবে যেখানে চ্যালেঞ্জ থাকে সেখানে সম্ভাবনাও থাকে। প্রযুক্তির আশীর্বাদকে সাদরে গ্রহণ করতে পারলে ও এর সাথে অভিযোজিত হতে পারলে এসব সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যায়।

২০২০ সালে একটা কেস স্টাডিতে দেখা যায়, প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লব সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে-  (১) জটিল সমস্যার সমাধান, (২) ক্রিটিক্যাল থিংকিং, (৩) সৃজনশীল ব্যবস্থাপনা, (৪)  জনসংযোগ, (৫) ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স ব্যবস্থাপনা, (৬) সিদ্ধান্তে আসার ক্ষমতা, (৭) সেবা প্রদানের মানসিকতা ইত্যাদি গুণ থাকলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যাবে।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব কে কাজে লাগাতে ও  প্রযুক্তির লাগাম টেনে ধরতে ও এর সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে প্রযুক্তির পাশাপাশি কৌশলগত অবস্থান নেওয়া জরুরি। অন্যথায় ছিটকে পড়ার সম্ভাবনাই বেশি।

বিভিন্ন গবেষণায় উপর ভিত্তি করে কৌশলগত অবস্থান করে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়। (১) সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠন, (২) নয়া কার্যপদ্ধতি ও কর্মপন্থা অবলম্বন, (৩) কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা ও গতিপথ লক্ষ রাখা এবং (৪) কর্মপদ্ধতির পরিবর্তন ও সংশোধন।

১) সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠনঃ সাংগঠনিক কাঠামোর পুনর্গঠন বলতে বোঝায় একটি গ্রন্থাগারের যে সমস্ত লোকবল রয়েছে তাদের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কর্ম পুনর্বিন্যাস। গ্রন্থাগারের বিভিন্ন সেকশনে বিভিন্ন অভিজ্ঞ লোকজন থাকতে পারে তাদের সমন্বয় করে যারা অধিক জ্ঞানী বা অধিক কম জানা সম্পন্ন তাদের সাথে সমন্বয় করে যৌথভাবে কাজ করা।

২) নয়া কার্যপদ্ধতি ও কর্মপন্থা অবলম্বনঃ তথ্য প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে ও খাপ খাওয়াতে হলে নতুন কার্যপদ্ধতি ও কর্মপন্থা অবলম্বন করা একান্ত প্রয়োজন। এক্ষেত্রে গ্রন্থাগার জগতে কি কি নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে এবং এগুলোর উপযোগিতা বিশ্লেষণপূর্বক এর অভিযোজন ক্ষমতা কেমন সেটা যাচাই করা প্রয়োজন।

৩) কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা ও গতিপথ লক্ষ রাখাঃ প্রযুক্তির উন্নয়ন রাতারাতি হয় না। পূর্বের ব্যবহৃত প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটেই নতুন প্রযুক্তির আবিষ্কার হয়। সুতরাং প্রযুক্তি ধারাবাহিকতায় এর গতিপথ লক্ষ্য রেখে পরিকল্পনা প্রণয়ন জরুরী।

৪) কর্মপদ্ধতির পরিবর্ধন ও সংশোধন: দৈনন্দিন কাজে প্রযুক্তির ব্যবহার করে গতানুগতিক সেবা প্রদানকে বিদায় জানাতে হবে। গ্রন্থাগারে বারকোড টেকনোলজির ব্যবহারের মাধ্যমে সহজেই এখন বইয়ের তথ্য স্টোর করে রাখা যায়। এভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার করে নতুন কর্মপদ্ধতির পরিবর্তন,  পরিবর্ধন  ও প্রযুক্তির নতুন নতুন সংযোজন ঘটাতে হবে।

উল্লিখিত অনুচ্ছেদসমূহে আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনাসমূহ নিয়ে আলোচনা করেছি। উক্ত চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনাসমূহ কাজে লাগাতে গ্রন্থাগারের প্রাসঙ্গিকতা ও ভূমিকা কতটুকু তা জানার চেষ্টা করব।

Michael Buckland তার Redesinging Library Service: A Manifesto ( American Library Association কর্তৃক প্রকাশিত হয় ১৯৯২ সালে) রিসার্চ পেপারে এ সম্পর্কে কিছুটা আলোকপাত করেছেন।

তিনি বলেছেন, গ্রন্থাগারিককে ইলেকট্রনিক ডকুমেন্টস এর বিভিন্ন ভাগ ও এতে অনুপ্রবেশ, পরিবর্তন, ও বিতরণ সম্পর্কে জানতে হবে। যেহেতু প্রতিদিনই আমরা নতুন নতুন তথ্যের সন্ধান পাচ্ছি এবং এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া তাই আমাদের প্রায়োগিক দিকটার প্রতি বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

তিনি দেখিয়েছেন যে- গ্রন্থাগারকে নতুন প্রযুক্তির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে নিম্নোক্ত বিষয় সম্পর্কে ধারণা থাকা আবশ্যক।

১) উপাত্ত বিশ্লেষণ ক্ষমতা, ২) দূর থেকে ফাইলে প্রবেশ করা (রিমোট অ্যাক্সেস), ৩) নথিপত্রের সাথে ফাইলিং এন্ড কোম্বাইনিং, ৪) একই টার্মিনাল থেকে বিভিন্ন ফাইল অ্যাক্সেস করার ক্ষমতা,  ৫) টেকনোলজি সম্পর্কে ধারণা রাখা, ৬) আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সম্পর্কে ধারণা রাখা ইত্যাদি।

যেহেতু তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতির ফলে তথ্যের বিস্তৃতি বাড়ছে ফলে আমরাও তথ্যের বিচ্ছিন্নতাকে লক্ষ্য করছি। অর্থাৎ আমরা সব তথ্য এক জায়গায় পাইনা। তাই গ্রন্থাগারকে একত্রে তথ্যের টার্মিনাল হিসেবে কাজ করতে হবে। সমজাতীয় তথ্যকে এক জায়গায় করে সেগুলোকে সেবাগ্রহীতাকে প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে গ্রন্থাগারিককে নেটওয়ার্কিং ও সার্ভার ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে জ্ঞান থাকা আবশ্যক। আমরা এখন ঘরে বসে বিভিন্ন ডিজিটাল ফরমেটে তথ্য পেয়ে থাকি। আমরা  চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এর কারণে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যেকোন তথ্য হাতের নাগালেই পেয়ে থাকি। ওয়েবমেট্রিক্স এর মাধ্যমে সেবাগ্রহীতাকে সেবা প্রদান করা যাতে পারে। রেফারেন্স সার্ভিস প্রদানের মাধ্যমে তথ্যের বিশুদ্ধতা নির্ধারণে গ্রন্থাগার ভূমিকা রাখতে পারে। ডিজিটাল সিস্টেম ব্যবহার করে গ্রন্থাগারিক গ্রন্থাগারের  সার্ভিসকে আরো গতিশীল করে তুলতে পারে৷ বিবলিওগ্রাফিক্যাল কন্ট্রোল ব্যবহার করে তথ্যের গতি প্রকৃতি ও তথ্যের উৎস নির্ধারণ করতে গ্রন্থাগার ভূমিকা রাখতে পারে। আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির যুগে সবকিছুতে স্বয়ংক্রিয় সার্ভারের বিকল্প নেই। সুতরাং সার্ভিসকেও সেভাবে দক্ষ জনবল নিয়োগ ও কর্মপরিকল্পনায় ঢেলে সাজাতে হবে।

উপসংহারে আমরা বলতে পারি, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এর ছোঁয়া সবখানে লেগে গেছে। গ্রন্থাগার এর বাইরে নয়। আধুনিক সুবিধা সম্বলিত স্মার্ট সেবা প্রদান করা আধুনিক গ্রন্থাগারের মূল উদ্দেশ্য হোক। তবেই গ্রন্থাগার এর গ্রহণযোগ্যতা সর্বস্তরে বৃদ্ধি পাবে। বাড়বে  গ্রন্থাগারের সেবার পরিধি। টেকনোলজিক্যাল চেঞ্জের সাথে টেকনোলজিক্যাল এডাপটেশনের বিকল্প নেই। সুতরাং শিল্প বিপ্লবের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে গ্রন্থাগারসমূহ সবার আগে এগিয়ে আসবে আমরা গ্রন্থাগার দিবসে এটাই প্রত্যাশা করি।

লেখক: প্রকাশনা কর্মকর্তা, বিআইআইএসএস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সাবেক সহকারী গ্রন্থাগারিক দৈনিক বণিকবার্তা


সর্বশেষ সংবাদ