জাতীয় পর্যায়েও এথিকাল বোর্ড গঠন করা হোক
- সালাউদ্দিন সোহাগ
- প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৩:৪১ PM , আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৪:২৩ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের যে বৈঠকে ‘র্যাগ ডে’ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সে বৈঠকেই প্রতিটি বিভাগে গবেষণা কাজ অনুমোদনের জন্য ‘এথিকাল রিভিউ কমিটি’ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সাবেক ভিসি আরেফিন সিদ্দিক স্যারের আমলে এ সংক্রান্ত আলোচনা শুরু হয়। যা অবশেষে হলেও বাস্তবায়িত হলো।
ধন্যবাদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ ধরণের একটি যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য। তবে এ সিদ্ধান্তটি অনেক আগেই নেয়া উচিত ছিল দেশের সবচেয়ে প্রাচীন এই বিশ্ববিদ্যালয়টির।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে গবেষণা কর্মকর্তা হিসেবে একটা আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থায় যোগ দিয়েছিলাম। ম্যাটার্নিটি হেলথ নিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে গিয়ে আমার প্রথমবারের মত এথিকাল রিভিউ কমিটির সাথে পরিচয় ঘটে।
বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি) নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি দেশের মেডিকেল সংক্রান্ত গবেষণার অনুমোদন দিয়ে থাকে। ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়েরও এ ধরণের একটা এথিকাল বোর্ডের কথা শুনেছিলাম। এরপর এ ব্যাপারে ঘাটাঘাটি করতে গিয়ে দেখলাম উন্নত বিশ্বে শুধু মেডিকেলের ক্ষেত্রে নয় সব ধরনের গবেষণার ক্ষেত্রেই এই ধরণের এথিকাল বোর্ড রয়েছে।
যেহেতু আমি শিক্ষা নিয়ে কাজ করি তাই শিক্ষা গবেষণা নিয়েই কয়েকটি কথা বলবো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগের ন্যায় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটও (আইইআর) এ ধরণের একটি এথিকাল বোর্ড তৈরি করুক। যার আদলে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআরগুলোও এ ধরণের বোর্ড তৈরি করবে।
তবে আমি চাই জাতীয় পর্যায়ে এমন একটা এথিকাল বোর্ড থাকুক যারা দেশের শিক্ষা উন্নয়নের গবেষণাগুলো তদারকি করুক। শিশুদের কথা বিবেচনা করে মাল্টিপল ডিসিপ্লিনের সমন্বয়ে প্রায়োগিক গবেষণা হোক। গবেষণার ফলাফল ব্যতিরেকে শিক্ষায় নতুন নতুন ইন্টারভেনশন বন্ধ হোক। শিশুরা স্বপ্নে পাওয়া আইডিয়ার গিনিপিগ হওয়া থেকে রক্ষা পাক।
আশা করছি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষাবিদগণ এসব বিষয় নিয়ে কথা বলবেন। তাদের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান না হয়ে শিক্ষা-গবেষণার হাব হয়ে উঠুক। তরুণ প্রজন্মকে গবেষণায় আগ্রহী করে তুলুক। আসলে একটি দেশ এগিয়ে যেতে শুধু প্রশাসক নয় গবেষকও প্রয়োজন। আমি একজন গবেষকই হতে চেয়েছি এবং চাই...
লেখক: শিক্ষা গবেষক