আমাদের নিজস্বতা বলে কি কিছু নেই?

  © টিডিসি ফটো

আমেরিকা বলল হাইড্রক্সিক্লোরকুইন রোগীদের দেহে কার্যকর। আমরা ছুটলাম, ফার্মাসিউটিক্যালস্ দ্রুত শুরু করে দিলো প্রোডাক্ট বানানো উর্ধমুখী অথরিটির নির্দেশে। তৈরী করে জমা দেওয়া হল ট্রায়ালের জন্য।

জাপান বলল এভিগান কার্যকর শুনে সবাই দিলো দৌঁড়। বানানো হল এভিগান এবং জমা দেওয়া হল সরকারের নিকট ট্রায়ালের জন্য। তার পরে আর জানিনা এভিগানের ভবিষ্যত নিয়ে। জানবো কি করে কারণ New Drugs আরও একটা চলে এসেছে।

আমেরিকা FDA approved করেছে রেমডাসেভির এবং বলা হচ্ছে এটা কার্যকর। আবার সেই আমাদের দৌড় শুরু। রেমডাসেভির বানানো হবে। বর্তমানে ছয়টা ফার্মাসিউটিক্যালস্ কাজ করছে ঔষধটা নিয়ে।

আমার প্রশ্ন হল, তাহলে আমাদের নিজস্বতা বলে কি কিছু নেই? এদেশ ওদেশ যা বলবে আমরা তাই নিয়ে কেন এত ব্যস্ত হয়ে পরবো। কেন আমাদের কোন নতুন ঔষধ আবিস্কার নিয়ে সারা বিশ্ব ব্যস্ত হয়ে পরেনা। সারা পৃথিবী যেখানে ব্যস্ত নতুন কোন ঔষধ বের করে মানুষকে বাঁচানোর জন্য সেখানে আমাদের বাংলাদেশের অজস্র মেধা থাকা সত্ত্বেও নতুন কোন ঔষধের নাম এখন পর্যন্ত উথ্বাপান করা হলনা যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কোন গবেষণা বা কাজের উদ্যোগকে সর্বদা স্বাগত জানান। কোন প্রকার অবহেলা করেননা।

যদি হসপিটালের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং রেজি: গ্রাজুয়েট ফামাসিস্ট মিলে কয়েক দফা মিটিং করে যত এন্টিভাইরাল ড্রাগস্ আছে সবগুলো গ্রেড অনুসারে সারিবদ্ধ করে সম্ভাব্য কোন কোনটি কোভিড নিরাময় করতে পারে সেই অনুযায়ী ট্রায়াল চালানো হতো অবশ্যই কোননা কোন পথ মিলত আমাদের দেশে। ঔষধের কার্যকারী প্রভাবের সাথে পরিবেশের তাপমাত্রা, আর্দ্রতা রোগীর অবস্থা অতপ্রতভাবে জরিত। তাই ট্রায়াল দেবার আগে এগুলো দেখে নিতে হবে।

এবার আসুন মূলকথা। Clinical Trial বিষয়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং এই ট্রায়াল যিনি দেন তিনি একজন প্রথম শ্রেণীর রেজি গ্রাজুয়েট হসপিটাল ফার্মাসিস্ট। Clinical Trial কখনো সরাসরি মানুষের ওপর দেয়া হয়না। এটা প্রথমে কোন গিনিপিগ বা খরগোশ বা ব্যাঙ বা কোন প্রাণীর শরীরে করা হয়ে থাকে এবং নোট করতে হবে প্রাণীটির দেহে ঔষধের কার্যকারীতা। এইভাবে সিরিয়ালি সকল ঔষধগুলো এক এক করে ট্রায়াল দিতে হবে। আর আমাদের দেশের তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা অনুযায়ী কোন না কোন একটা এন্টিভাইরাল ঔষধ ঠিক কার্যকর হত।

কিন্ত এগুলো করেন হসপিটালে নিযুক্ত থাকা গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্ট এবং তার টিম। আজ অবধি আমাদের দেশে হসপিটাল ফার্মাসিস্ট নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

তাহলে স্বাভাবিক যে আমরা অন্য দেশের দিকেই তাকিয়ে থাকবো আর যখন যে ঔষধের কথা উঠবে সেই ঔষধ ফার্মাসিস্টের সহযোগিতা নিয়ে বানিয়ে আনবো। তাহলে মেধাতো সেই ফার্মাসিস্টের কাছেই যারা না দিলে ঔষধের ভান্ডার A big zero.

তাই ফার্মাসিস্ট নিয়োগ অতিব জরুরি আমাদের হাসপাতালগুলোতে এবং সেইটা যদি কালকেই হয় আরও ভালো। দেশ এবং দশের কথা চিন্তা করে অবশ্যই হসপিটাল ফার্মাসিস্ট নিয়োগ জরুরি।

লেখক: বি. ফার্ম. এবং এম. ফার্ম.


সর্বশেষ সংবাদ