আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করোনা মোকাবেলা করতে কতোটা প্রস্তুত?

  © ফাইল ফটো

ক্যাম্পাসে এক বন্ধু খুব আক্ষেপ করেই বলে উঠলো ‘এদেশে যদি যুদ্ধও বাধে তারপরেও ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টিরা বলবে, এস্যাইনমেন্ট আর প্রেজেন্টেশন দিয়ে যুদ্ধ যেও’।

পুরো পৃথিবীতে এখন আতংকের নাম করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। গত বুধবার পর্যন্ত চীন, ম্যাকাও, হংকং তাদের সমস্থ স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু করে দ্বদশ শ্রেনী পর্যন্ত ২৯০ মিলিয়ন বা ২৯ কোটির বেশী শিক্ষার্থী শীক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসা থেকে বিরত আছে।

স্কুল-কলেজ বন্ধের মিছিলে আবার যোগ দিয়েছে ইতালী ও যুক্তরাষ্ট্র। ইউনেস্কোর তথ্য মতে, করোনাভাইরাসের প্রভাবে তিনটি মহাদেশের ১৮০ মিলিয়ন শিক্ষার্থী প্রভাবিত হতে পারে। ইউনোস্কোর ঘোষনার পর পরই আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, বাহরাইন, উত্তর কোরিয়া, ইরান, ইরাক, জাপান, কুয়েত, লেবানন তাদের প্রশাসনিক অঞ্চলের সমস্ত স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে।

অধিকাংশ স্কুল কলেজ, যেগুলো করোনা ঝুঁকির বাইরে আছে, সেসব স্কুল-কলেজের শীক্ষার্থীদের করোনাভাইরাস থেক দূরে থাকার পদ্ধতি, ঘনিষ্টভাবে একে অপরের সাথে মেশাকে নিরুৎসাহিত, হাত ধোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে পাঠ দান করা হচ্ছে। দূরশিক্ষাকে উৎসাহীত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে ইউরোপের দেশগুলোতে।

সে তুলনায় বহাল তবিয়তে চলছে, আমাদের দেশের সমস্ত স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। অথচ চীনের পর বাংলাদেশই আছে করোনাভাইরাসের সবচেয়ে বড়ো ঝুঁকিতে। শরীরে ক্ষত হবার পর এন্টিক্ষত লাগানোতে পটু আমাদের অন্তত এবার উচিত, ক্ষতটা যেনো না হয় সেব্যবস্থা করা। সেক্ষেত্রে বরাবরই আমরা খুব দেরী করে নিয়ে ফেলী।

শীতের সময় মশা হবে জানার পরেও পুরো বছর মশক নির্মুল না করে, আমরা শীতের সময় মশা মারা উৎসব করি। কিন্তু করোনা এমন একটা ক্ষত, সেখানে এন্টিক্ষত দেওয়ার আগেই শরীরকে নিস্তেজ করে ফেলে।

সেক্ষত্রে আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থাপকদের উচিত এখনি পদক্ষেপ নেওয়া,
১) স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দূর পঠনের ব্যবস্থাকে উন্নত করা, যাতে সেকোনো মুহুর্তে বন্ধ ঘোষনা করা যায়।
২) এন্টি ব্যাক্টেরিয়াল সাবান রাখা প্রতিটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলক করা।
৩) সর্দী, জ্বর, হাচি, কাশি ইত্যাদি সমস্যায় বিদ্যালয়ে আসাকে অনুৎসাহিত করা।
৪) হ্যান্ডশেক কিংবা খাবার ভাগাভাগি করা থেকে বিরত থাকা।
৫) নিয়মিত বিদ্যালয়ের মেঝে, দেওয়াল, বোর্ড ইত্যাদি এন্টি ব্যাক্টেরিয়াল লিকুইড দিয়ে পরিচ্ছন্ন রাখা।
৬)সেমিনার বা অতিরিক্ত ছাত্র-ছাত্রী সমাগম করা বিরত থাকা।

প্রাথমিকভাবে এই ব্যবস্থাগুলো রাখা যেতে পারে। প্রয়োজন হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জ্বর দেখার স্কানারের ব্যবস্থা করা উচিত, যেটা কপালের কাছে লাগালেই গাণিতিকভাবে বোঝা যাবে, করোনাভাইরাসের প্রাথমিক উপস্থিতি। প্রতিটা শিক্ষক থেকে শুরু করে সবাইকে দায়িত্ববান হতে হবে, করোনা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে দায়িত্বশীলতার বিকল্প নেই।

লেখক: শিক্ষার্থী, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ
সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় 


সর্বশেষ সংবাদ