ব্যর্থতার মধ্য দিয়েও সফলতা অর্জন সম্ভব
- মোহাম্মদ আব্দুল আলিম
- প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১১:০৮ AM , আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১১:২৭ AM
ব্যর্থতার মধ্য দিয়েই সফলতার সোপান রচিত হয়। যেমনিভাবে আমরা প্রতিদিন আকাশে সূর্যের যে ঝলমলে হাসিটা দেখি তার জন্য সূর্যের আলোকে শীতের জমাট কুয়াশা কেটে এবং আরো অনেক বাধা উপেক্ষা করে আসতে হয়। তেমনিভাবে মানুষেরও তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে অনেক দুর্গম পথ পাড়ি দিতে হয় এবং অদম্য চেষ্টায় নিজেকে রত করতে হয়। ব্যর্থতা আছে বলেই সফলতার এত মূল্য। পৃথিবীর বিখ্যাত সব সফল মানুষের সফলতার পেছনে রয়েছে প্রথম দিকের ব্যর্থতার গল্প। কারো কারো জীবনে বড়ো বড়ো ব্যর্থতাই সফলতার কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে। পৃথিবীতে কেউ ব্যর্থ হতে চাই না, সবাই সফল হতে চাই। কিন্তু চাওয়া এবং পাওয়ার মাঝে একটা পাহাড়সম দেয়াল আছে, সেই দেয়াল পেরিয়ে যে বিজয় নিশান উড়িয়ে দিতে পারে সেই সফলতার মুখ দেখে।
জীবনে সফলতার জন্য চেষ্টা করা আর কাদাযুক্ত মাটিতে হাঁটতে চেষ্টা করা সমান। কেননা সকল মানুষ অবগত যে, কাদাযুক্ত মাটিতে হাঁটা এত সহজ কাজ নয়, পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ঠিক তদ্রূপ জীবনে সফলতার দিকে পৌঁছাতে চাইলেও ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়ে যায়। তবে আমরা নিজেরা সচেতন হলে এই ব্যর্থতা থেকে নিজেকে সফলতার চূড়ান্তে পৌঁছানো সম্ভব। যেমন—আমরা যখন কাদামাটিতে হাঁটতে গিয়ে পিছলে পড়ে যাই, তখন পড়ে যাওয়া স্থান থেকে আমাদের উঠতে কষ্ট হয়ে যায় আবার অনেকেই উঠে দাঁড়াতে গিয়ে বার বার একই স্থানে পড়ে যাই, বার বার একই স্থানে পিছলে খাওয়া মানুষটি আস্তে আস্তে তার পিছলে খাওয়ার কারণটি জানতে পারে তখন কারণগুলোকে সে চিহ্নিত করে তারপর সেই ব্যাপারে সতর্ক হয়ে যায় এবং সে কোন কোন জায়গায় পা রাখবে আর কোন কোন জায়গায় পা রাখা থেকে নিজেকে বিরত রাখবে তা শিখতে পারে, যার ফলস্বরূপ কাদামাটিতে উঠে দাঁড়ানোর মতো কঠিন কাজও তার মাধ্যমে সম্ভব হয়। আর কিছু মানুষ কাদামাটিতে উঠতে বার বার ব্যর্থ হওয়ায় সে ঐখানেই স্তিমিত হয়ে যায়, যার কারণে তার দ্বারা জীবনের সফলতা কখনোই সম্ভবপর হয়ে উঠে না। কেননা সফলতার চূড়ায় পৌঁছাতে চাইলে প্রতিবন্ধকতা আসবেই। তখন নিজেকে ব্যর্থতা থেকে এড়িয়ে উত্তরণের পথে আসার অবিরাম প্রচেষ্টায় রত হতে হবে।
আমাদের ব্যর্থতা থেকে সফলতার পাদপ্রদীপে পৌঁছাতে যেসব শিক্ষা নেওয়া দরকার তা হলো—১. অল্পতে দম না হারিয়ে চেষ্টা চালিয়ে রাখা। ২. ব্যর্থতায় কপালের দোহাই না দিয়ে ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধান করা এবং সতর্ক হওয়া। ৩. নিজের ব্যর্থতার জন্য অন্যকে দোষারোপ না করা। ৪. হতাশ না হওয়া। ৫. নিজেকে পূর্বের ভুল থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টায় রত রাখা। ব্যর্থতা থেকে এসব শিক্ষা নিয়ে নিজ লক্ষ্যের দিকে গেলেই সফলতা আসবে। শুধু যে নিজে ব্যর্থ হলে তা থেকে শিক্ষা নেব বা শিক্ষা নিতে হবে বিষয়টা এমন নয়। অন্যের ব্যর্থতা থেকেও শিক্ষা নিতে পারি।
ব্যর্থতা থেকে উত্তরণ করে সফলতার উদাহরণ যারা সৃষ্টি করেছেন তাদের উদাহরণ দিয়ে শেষ করা যাবে না। নিজের জীবনের সফলতা অর্জন করতে চাইলে ব্যর্থতার দিকে না তাকিয়ে লক্ষ্যের দিকে তাকিয়ে নিজেকে অদম্যভাবে এগিয়ে নিয়ে গেলে এক দিন না এক দিন সফলতা দরজায় হানা দিবেই। ব্যর্থতার অন্তরালে সফলতার চাবি রয়েছে, শুধু আমাদের খুঁজতে হবে। যথার্থ সফলতার জন্য আমাদের সকলকে ব্যর্থতাকে জয় করে তার মাঝে আশার প্রদীপ জ্বালাতে হবে এবং এর মাধ্যমে নিজের ও সমাজের এবং দেশের কল্যাণ বয়ে আনতে হবে।
সুত্র: জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাক, প্রতিবেদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী