অনিয়ম ঢাকতে নতুন বই টয়লেটে লুকিয়ে রাখল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ

লুকিয়ে রাখা নতুন বই
মাদ্রাসার টয়লেটে লুকিয়ে রাখা নতুন বই

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে শিক্ষার্থী সংকটে ধুঁকতে থাকা বৈরাটী সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা। নানা অভিযোগের তদন্তে যাওয়ার খবরে হুশ ফিরেছে কর্তৃপক্ষের। শিক্ষার্থীর উপস্থিতি বাড়িয়ে ১৬ জন থেকে ৪০ জন করা হয়েছে। অনিয়ম ঢাকতে নতুন বই লুকিয়ে রাখা হয়েছে পুরোনো টয়লেটে। শনিবার দুপুরে বৈরাটী মাদ্রাসায় গিয়ে সাংবাদিকরা দেখা পেয়েছেন এমন চিত্রের।

গত ১৮ আগস্ট সমকালে বৈরাটী সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা নিয়ে ‘১৬ শিক্ষার্থীর জন্য ৯ জন শিক্ষক' শিরোনামে খবর প্রকাশ হলে পর তোলপাড় শুরু হয়। কাগজে ৫১০ জন শিক্ষার্থী থাকলেও বাস্তবে মাত্র ১৬ জন উপস্থিত পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। শিক্ষক মিলনায়তনে নতুন বই রাখায় তাতে ধুলার আস্তরণ পড়ে গেছে।

বিষয়টি সামনে আসার পর সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিতে শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন ইউএনও হাফিজা জেসমিন। তিনি বলেন, কোন ক্লাসে কতজন শিক্ষার্থী, বাস্তব চিত্রের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

জানা গেছে, আজ রোবাবার তদন্তের জন্য শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মাদ্রাসা পরিদর্শেন যাবেন। বিষয়টি আগেই জেনে যায়  কর্তৃপক্ষ। এরপর মাদ্রাসার নতুন সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। দেয়ালে লেখা নামে নতুন তুলির আঁচড় দেওয়ানো হয়েছে ষষ্ঠ ও আলিমের দুই শিক্ষার্থীকে দিয়ে।

আরো পড়ুন: ‘কক্সবাজার কলেজে পড়তে হলে ছাত্রলীগ করা বাধ্যতামূলক’

শিক্ষক মিলনায়তনে রাখা বইগুলোর স্থান হয়েছে পুরোনো টয়লেটের ভেতরে। শিক্ষা কর্মকর্তার নজর এড়াতে বইগুলো সরিয়ে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। শনিবার দুপুরে মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী পাওয়া যায় ৪০ জন।আলিম শাখায় সাতজন, দশম শ্রেণিতে পাঁচ, নবমে চার, অষ্টমে আট, সপ্তমে চার, ষষ্ঠে ১০ ও পঞ্চম শ্রেণিতে দু'জন ছিল। প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত কোনও শিক্ষার্থী ছিল না।

বৈরাটী সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুলফিডিং ও উপবৃত্তি থাকায় ইবতেদায়ি শিক্ষার্থী কম। তবে অন্য শাখায় শিক্ষার্থীদের ফেরাতে চেষ্টা চলছে। শিক্ষক সংকট বড় সমস্যা।

এ বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মাদ্রাসায় গিয়ে কী কী করা যায় তা নির্ধারণ করা হবে। এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটি চললে তো মুশকিল, বিব্রতকরও। এ জন্য দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে।