কুকুরকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন দিলেন অ্যাঞ্জেলা

অন্য প্রাঙ্গণ
পোষা কুকুরের সঙ্গে অ্যাঞ্জেলা।

টোঙ্গায় সুনামি চলাকালে পোষা কুকুরকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন বিলিয়ে দিলেন দ্বীপটিতে বসবাসরত যুক্তরাজ্যের এক নারী। সুনামিতে ভেসে যাওয়া ওই নারীর নাম অ্যাঞ্জেলা গ্লোভার। যুক্তরাজ্যের ব্রাইটনে জন্ম নেওয়া ৫০ বছর বয়সী অ্যাঞ্জেলা ও তার স্বামী জেমস টোঙ্গা ছো্ট্ট এই দ্বীপদেশটির লোকজনদের খুব পছন্দ করতেন। বিবাহের পর থেকে সেখানে তারা দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন।

সোমবার (১৭ জানুয়ারি) অ্যাঞ্জেলার লাশের খোঁজ পাওয়া যায়। এ খবরটি নিশ্চিত করেছেন তারই ভাই নিক এলেনি।

আরও পড়ুন: মহামারিতে শীর্ষ ১০ ধনীর সম্পদ দ্বিগুণ হয়েছে!

নিক এলেনি বিবিসিকে জানিয়েছেন, ওই সুনামিতে টোঙ্গার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর তার মা অ্যাঞ্জেলার খোঁজ খবর জানার জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তিনি আরও জানান, তার বোনের মৃতদেহ তারই স্বামী জেমস খুঁজে পেয়েছেন। তার বোন জামাই আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে সৃষ্ট ওই সুনামি বিপর্যয়ের সময় একটি গাছকে আঁকড়ে ধরে নিজের জীবন রক্ষা করেছিলেন।

তার মা জানান, অ্যাঞ্জেলা এবং জেমস দুজনেই টোঙ্গার জীবনকে ভীষণ ভালবাসতেন এবং টোঙ্গার লোকদেরকে ভালোবাসতেন। বিশেষ করে, তারা সেখানকার টোঙ্গা সংস্কৃতির লোকজনদের ভালোবাসায় সিক্ত ছিলেন। তার মা আরও জানান, ছোটবেলা থেকে তিমির সঙ্গে সাঁতার কাটার স্বপ্ন ছিল অ্যাঞ্জেলার। আর এই দ্বীপ টোঙ্গাই তাকে ওই স্বপ্ন পূরণের সুযোগ করে দেয়।

আরও পড়ুন: ফুল নেবে নাকি অস্ত্র নেবে?

এদিকে, তার ভাই নিক জানান, ‘হ্যাপি সেইলর’ নামক একটি ট্যাটু পার্লার চালাতেন অ্যাঞ্জেলা। পার্লারটি টোঙ্গার স্থানীয় লোকজনদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। পাশাপাশি তিনি কুকুরের প্রতি ভালবাসা থেকে ‘টোঙ্গা বন্য-প্রাণী কল্যাণ সোসাইটি’ নামক একটি সোসাইটিও প্রতিষ্ঠা করেন।

অ্যাঞ্জেলার কুকুরের প্রতি গভীর ভালবাসা ছিল। তার প্রতিষ্ঠিত সংগঠনটি বিপথগামী প্রাণীদের আশ্রয় এবং পুনর্বাসন করতো।

কিন্তু ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! অ্যাঞ্জেলা গ্লোভার নামক ওই নারী তার পোষা কুকুরকে উদ্ধার করতে গিয়েই মারা গেছেন। এ ঘটনায় পরিবারটিতে এখন শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

উল্লেখ্য, গত শনিবার টোঙ্গার রাজধানী নুকু'আলোফা থেকে প্রায় ৪০ মাইল (৬৫ কিমি) উত্তরে হুঙ্গা টোঙ্গা-হুঙ্গা হা'পাই আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সৃষ্ট বিপর্যয়ে সেখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্দিষ্ট করে জানা যায়নি।