ছাত্রদলের পরীক্ষিত নেতা শ্রাবণকে সরিয়ে দেওয়ার নেপথ্যে কী?

কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ
কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ © ফাইল ছবি

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ এবার দলীয় মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েছেন। দীর্ঘদিন ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় ও পরীক্ষিত এই নেতার বাদ পড়াকে কেন্দ্র করে দলীয় তরুণ নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

বুধবার রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে যশোর-৬ আসনে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেনকে মনোনয়নের টিকেট দেওয়া হয়েছে। টিকেটে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্বাক্ষর রয়েছে।

জানা যায়, ছাত্রদল করার কারণে পরিবার থেকে ত্যাজ্য হয়েছিলেন কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ। রাজনৈতিক জীবনে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও তিনি ছাত্রদলের নেতৃত্ব দিয়ে আসেন এবং সংগঠনকে শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তার এই ত্যাগ ও দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার পরও মনোনয়ন না পাওয়ায় শ্রাবণের অনুসারীরা হতাশা প্রকাশ করেছেন।

এর আগে এ আসনে দলের প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছিলেন শ্রাবণ। এর পর গত দেড় মাস ধরে তিনি এলাকায় ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন। তবে শেষ মুহূর্তে দলীয় সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে শ্রাবণের পরিবর্তে আবুল হোসেন আজাদকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়।

মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ার পর কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন।

শ্রাবণকে বাদ দেওয়ার পেছনের কারণ খতিয়ে দেখা গেলে জানা যায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় একাধিক নেতা শ্রাবণের পক্ষে ছিলেন না। তাদের প্রচেষ্টায়ই তরুণ এ রাজনীতিবিদ দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলেন। শ্রাবণ প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়ার পর অনেক নেতা প্রকাশ্যে ও গোপনে এর বিরোধীতাও করেছেন। 

আরও পড়ুন: দেশের পথে তারেক রহমান

পাশাপাশি নতুন করে মনোনয়ন পাওয়া আবুল হোসেন আজাদ দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে কেশবপুর বিএনপির দুঃসময়ে একজন পরীক্ষিত ও নির্ভরযোগ্য সংগঠক হিসেবে নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন। রাজনৈতিক হামলা-মামলার কঠিন সময়েও তিনি নির্যাতিত নেতাকর্মীদের জন্য সাহসী আশ্রয় ও সহায়তার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন।

রাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রেও আবুল হোসেন আজাদ একটি ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। নিজস্ব অর্থায়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও দলীয় কার্যালয় নির্মাণের পাশাপাশি নিজের জমিতে বিনামূল্যে দোকানঘর বরাদ্দ দিয়ে বহু অসহায় পরিবারের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন।

এসব মানবিক ও সমাজকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে কেশবপুরবাসীর কাছে তিনি ব্যাপক প্রশংসা ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছেন। এজন্য কেন্দ্রীয় বিএনপি আবুল হোসেনের ওপরই আস্থা রেখেছে।