ভূমিকম্পের পর ঢাবির কোন হলের সংস্কার কতটুকু হলো, দেখুন এক নজরে
- ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩:২০
ভূমিকম্প পরবর্তী সময়ে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে ঝুঁকি বিবেচনায় বিভিন্ন হল ও হোস্টেলসহ বিভিন্ন ভবনে সংস্কার ও উন্নয়নমূলক কাজের উদ্যোগ নিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ। সেই সংস্কার কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানিয়েছে প্রশাসন।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালেয়ের প্রশাসনিক ভবনের উপাচার্য কার্যালয় সংলগ্ন প্রফেসর আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) কাজী মো. আক্রাম হোসেন।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ এবং রেজিস্টার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মাদসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২১ ও ২১ নভেম্বর ভূমিকম্প পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলসমূহ পরিদর্শন বিষয়ে গত ২৬ নভেম্বর সেন্ট্রাল কো-অর্ডিনেশন কমিটি গঠন করা হয় এবং ২টি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ৫ সদস্য বিশিষ্ট ৪টি কারিগরি সাব-কমিটি করা হয়। সেগুলোর প্রতি কমিটিতে বিশেষজ্ঞ সদস্য হিসেবে বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের একজন অধ্যাপকসহ ডাকসু মনোনীত একজন প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে আছেন।
গত ৪ ডিসেম্বর আলোচ্য কমিটি ২০টি হল ও ২টি হোস্টেল র্যাপিড ভিজুয়াল পরিদর্শন শেষ করেন। গত ৮ ও ৯ ডিসেম্বর কমিটি রিপোর্ট প্রদান করেন। কমিটির রিপোর্টের আলোকে গত ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রাক্কলন প্রণয়নের কাজ শেষ করা হয়।
সেন্ট্রাল কো-অর্ডিনেশন কমিটির রিপোর্টসমূহ পর্যবেক্ষণপূর্বক ১৯টি মেরামত কাজ জরুরী বিবেচনায় যথাযথ নিয়ম মেনে দ্রুত সম্পন্ন করার সুপারিশ গৃহীত হয়। এ সুপারিশের আলোকে কার্যক্রম চলমান।
সরকারী ক্রয় প্রক্রিয়া স্বচ্ছতা নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে গত ১৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সভায় কোষাধ্যক্ষ, সংশ্লিষ্ট জোনের প্রকৌশলী, পরিচালক, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন এবং হিসাব পরিচালক, ঢাবি. এর উপস্থিতিতে জরুরী বিবেচনায় ওটিএম পদ্ধতিতে ই-জিপির মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান ও অতি জরুরী বিবেচনায় ডিপিএম পদ্ধতিতে শামসুন নাহার হলের ৬টি ব্লকের মধ্যে ১টি ব্লক পূর্ণাঙ্গ মেরামতসহ ৬টি ব্লকের আরসিসি ওভারহেড ট্যাংক খালি করে তদস্থলে প্লাস্টিক ট্যাংক স্থাপন এবং সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে নিরাপত্তার জন্য স্টিল প্রপ স্থাপন কাজ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
উক্ত সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে শামসুন নাহার হলের ১টি বাথরুম ব্লকের মেরামত কাজ শুরুর প্রক্রিয়া চলমান (প্রয়োজনীয় মালামাল যথা স্ক্যাফল্ডিং, সাটার, ইত্যাদি সাইটে আনয়ণ করা হচ্ছে)।
শামসুন নাহার হলের ক্ষতিগ্রস্থ বাথরুম ব্লকের ওভারহেড ওয়াটার ট্যাংক খালি করে জরুরী ভিত্তিতে পানির প্লাস্টিক ট্যাংক স্থাপনের কাজ শেষ পর্যায়ে।
বিশেষজ্ঞ মতামত অনুযায়ী সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ক্ষতিগ্রন্থ স্টিল প্রপ এর কাজ ২/১ দিনের মধ্যে আরম্ভ হবে।
অবশিষ্ট ১৭টি কাজ ই-জিপির মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আশা করা যায় আগামী ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে টেন্ডার ওপেনিং কাজ সম্পন্ন হবে।
কয়েকটি হল ডিটেইল ইঞ্জিনিয়ারিং এসেসমেন্ট (ডিইএ) করার জন্য বিশেষজ্ঞগণ মতামত দেন। তৎপ্রেক্ষিতে পরবর্তী ডিইএ করার বিষয়ে অতি সত্বর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য যে, প্রতিটি হলে ডিইএ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে কমপক্ষে প্রায় ৩ (তিন) মাস সময় লাগবে যা বিশেষজ্ঞগণ মতামত দেন।
ইতোমধ্যে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল, সূর্যসেন হল ও মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের মেরামত ও সংস্কার কাজ চলমান। মেরামত কাজের অগ্রগতি:
হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের মোট ১৭৫টি কক্ষের মধ্যে ১৬৭টি কক্ষের মেরামত কাজ সম্পন্ন হয়েছে; তন্মধ্যে ১৮টি কক্ষের রং করণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তাছাড়া, অন্যান্য কক্ষ, বারান্দার সিলিং, ড্রপ ওয়াল, প্যারাপেট ওয়াল, বাথরুম, মসজিদ, ডাইনিং এর ছাদের উপর ফেরোসিমেন্টের কাজ এবং রিডিং রুমের সিলিং এর কাজসহ নিচতলার বারান্দার সিলিং এর কাজ চলমান। আগামী ২৮ ডিসেম্বরের আগে প্রায় ৮০টি রুমের রং এর কাজ শেষ হবে এবং ছাত্রদের করিডোর, রিডিংরুম মেরামত কাজ শেষ করা যাবে।
আরও পড়ুন: তারেক রহমানকে এসএসএফের নিরাপত্তা দেওয়ার উদ্যোগ
সূর্যসেন হলের ছাত্রদের মোট ১৪১টি কক্ষের মধ্যে ১৪১টি কক্ষের মেরামত কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২য় তলার বাথরুমসহ নিচতলার মসজিদের মেরামত কাজ সম্পন্ন করে রিডিং রুমের কাজ চলমান। ইতিমধ্যে ৩০টি কক্ষের রং করণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে যে, আগামী ২ ডিসেম্বরের আগে প্রায় ৮০ থেকে ১০০টি রুমের রং এর কাজ শেষ হবে।
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ১২১টি কক্ষের মধ্যে ১২১টি কক্ষের মেরামত কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তন্মধ্যে ৩৯টি কক্ষের রং করণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নিচ তলার পশ্চিম পার্শ্বের বাথরুম ও রিডিং রুমে টাইলস এর কাজ আগামী ২/১ দিনের মধ্যে শেষ হবে।
তাছাড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ব্লকের বাহিরের মেরামত কাজ চলমান। আশা করা যাচ্ছে যে, আগামী ২ ডিসেম্বরের আগে প্রায় ১০০টি রুমের রং এর কাজ শেষ হবে।