জাককানইবি

পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে উপাচার্যকে চাপ প্রয়োগের অভিযোগ সাবেক দুই ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে

জাককানইবি লোগো ও ছাত্রদল লোগো
জাককানইবি লোগো ও ছাত্রদল লোগো © সংগৃহীত ও সম্পাদিত

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমের সাথে অসদাচারণের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা এবং সাবেক দুই ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে।  বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে উপাচার্যের কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়োগে নির্দিষ্ট এক মতাদর্শের প্রার্থীদের নিয়োগের অভিযোগ এনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমের সাথে অসাদাচরণ এবং নিজেদের প্রার্থীকে নিয়োগের জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। 

আরও পড়ুন: অবশেষে পদোন্নতি পেলেন শিক্ষা ক্যাডারের ১৮৭০ প্রভাষক

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে প্রিন্সিপাল ডেমোনস্ট্রেটর (সফটওয়্যার) প্রকৌশলী মো. আলমগীর হোসেন, সহকারী রেজিস্ট্রার মো. দেলোয়ার হোসেন, সহকারী পরিচালক (অর্থ) এস এম কাউসার আহমেদ, প্রিন্সিপাল ডেমোনস্ট্রেটর (হার্ডওয়্যার) মোস্তাক আহম্মেদ ১০-১২ জন কর্মকর্তাসহ সাবেক দুই ছাত্রদল নেতা ফরহাদ আহমেদ এবং তানভীর আহমেদকে নিয়ে উপাচার্যের কক্ষে প্রবেশ করেন। এ সময় তারা উপাচার্যের কাছে বিভিন্ন ধরণের দাবি-দাওয়া, তদন্ত কমিটি থেকে বিতর্কিত লোকদের অপসারণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়োগে নির্দিষ্ট এক মতাদর্শের প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। 

কথাবলার এক পর্যায়ে তারা উপাচার্যের সাথে উচ্চবাচ্য করেন এবং আগামী ২৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া প্রকিউরমেন্ট অফিসার পদে নিজেদের লোক নিয়োগ দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এই ঘটনার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান, প্রক্টর ড. মো. মাহবুবুর রহমান সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। 

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘একজন উপাচার্যের সাথে যে অ্যাপ্রোচে কথা বলা হয়েছে সেটি কাম্য নয়। সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তা এবং সাবেক ছাত্রদল নেতাদের আরও আন্তরিকতার সাথে কথা বলা উচিত ছিল। ’

তবে রেজিস্ট্রার(ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘সেখানে অসদাচারণের মতো তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি, তবে তাদের ভয়েজ লাউড ছিল। ’ 

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত কর্মকর্তা প্রিন্সিপাল ডেমোনস্ট্রেটর (সফটওয়্যার) প্রকৌশলী মো. আলমগীর হোসেন এবং সহকারী রেজিস্ট্রার মো. দেলোয়ার হোসেনকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তারা কেউ ফোন রিসিভ করেননি। 

আরও পড়ুন: জবির ভর্তি পরীক্ষার নেগেটিভ মার্কিং নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাল বিশ্ববিদ্যালয়

উপাচার্যের সাথে অসদাচারণ এবং নিয়োগের জন্য চাপ প্রয়োগের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাবেক ছাত্রদল নেতারা। সাবেক ছাত্রদল নেতা ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘সেখানে কোনো ধরণের অসদাচারণের ঘটনা ঘটেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কমিটিতে এখনও আওয়ামীপন্থী এবং বিতর্কিতদের রাখা হচ্ছে। তাদেরকে অপসারণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়োগে জামায়াতপন্থীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে সেই বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিলাম।'

সাবেক ছাত্রদল নেতা তানভীর আহমেদ বলেন, ‘আমি এখন সাংবাদিকতা করছি। সাংবাদিকতার প্রয়োজনে বক্তব্য নিতেই আমি উপাচার্য স্যারের রুমে গিয়েছিলাম।’

এ  বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি তখন একটা মিটিংয়ে ছিলাম, পরে দেখলাম বেশ সংখ্যক কর্মকর্তা রুমে ঢুকেছে। সেখানে সাবেক ২ জন শিক্ষার্থীও ছিল। আমাকে বলেছিল যে আমি নাকি পক্ষপাতমূলক নিয়োগ দিচ্ছি। আমি বলেছি আমার একার পক্ষে তো নিয়োগ দেওয়া সম্ভব নয়। আমি নিয়োগ কমিটির সভাপতি একজন সদস্য মাত্র । কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সিন্ডিকেট অনুমোদন দেয়। এর আগে লিখিত পরীক্ষা ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এখানে পক্ষপাতের সুযোগ নেই। ’

আসন্ন নিয়োগে কাউকে নিয়োগের জন্য চাপ প্রয়োগ করেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তেমন একটা কথা ছিল। আমি জানিয়েছি যুক্তিহীনভাবে কাউকে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব না। আজকের ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রশাসনিকভাবে সবার সাথে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ’