যুবদল নেতাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা, যা বলছে পুলিশ

গুলি করে হত্যার সিসিটিভি ফুটেজ
গুলি করে হত্যার সিসিটিভি ফুটেজ © ভিডিও থেকে নেওয়া

রাজধানীর মিরপুরের পল্লবীতে প্রকাশ্যে গুলি করে যুবদল নেতা গোলাম কিবরিয়াকে হত্যার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় রিকশাচালককেও গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। দলীয় কোন্দল নাকি অন্য কোনো কারণে এ হত্যাকাণ্ড—পুলিশ বলছে, সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে পল্লবী সেকশন-১২-এর ব্লক-সি এলাকার ‘বিক্রমপুর হার্ডওয়্যার অ্যান্ড স্যানিটারি’ দোকানে বসে ছিলেন গোলাম কিবরিয়া। 

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, হেলমেট পরা তিনজন মোটরসাইকেলে এসে সরাসরি দোকানে ঢোকে। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা কিবরিয়াকে লক্ষ করে খুব কাছ থেকে মাথা, বুক ও পিঠে উপর্যুপরি সাত রাউন্ড গুলি ছোড়ে। গুলিবিদ্ধ কিবরিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। দুর্বৃত্তরা দ্রুত মোটরসাইকেলে পালানোর সময় আশপাশের লোকজন একজনকে আটক করতে সক্ষম হয়।

গুরুতর আহত অবস্থায় কিবরিয়াকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে ভিড় করেন যুবদল ও বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, এটি রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে সংঘটিত পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের বিচার করতে হবে।

আরও পড়ুন: প্রকাশ্যে ফিল্মি স্টাইলে গুলি করে যুবদল নেতাকে হত্যা, যা দেখা গেল সিসি ক্যামেরায়

পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল থেকে সাত রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। আটক দুর্বৃত্তকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এখনো কোনো মামলা হয়নি, তবে নিহতের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

পল্লবী থানার ওসি মো. মফিজুর রহমান বলেন, ‘জনগণের সহায়তায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার মাধ্যমে অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ঘটনা দলীয় কোন্দল নাকি অন্য কিছু—তদন্তে সব বেরিয়ে আসবে।’

এ ঘটনার সময় দুর্বৃত্তদের পালানোর জন্য ভাড়া করা রিকশাচালক আরিফ (২০) দ্রুত রিকশা না চালাতে পারায় তিনিও গুলিবিদ্ধ হন। তাকে উদ্ধার করে ঢামেকে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত আরিফকে হাসপাতালে নিয়ে আসা পথচারী মো. পিয়ারুল ইসলাম জানান, পল্লবী সাড়ে ১১ নম্বর এলাকার ঢালে রিকশার পাশে পড়ে থাকা অবস্থায় আরিফকে তিনি দেখতে পান। কেউ হাসপাতালে নিচ্ছিল না—তাই তিনিই ইসলামী হাসপাতালে নিয়ে যান এবং পরে সেখান থেকে ঢামেকে আনা হয়।

আরিফ তাকে জানান, দুই হেলমেটধারী তার রিকশায় ওঠে দ্রুত চালাতে বলে। কিন্তু ব্যাটারির চার্জ কম থাকায় রিকশা দ্রুত না চলায় ক্ষিপ্ত হয়ে তারা তার কোমরে গুলি করে পালিয়ে যায়।

পল্লবী থানার এসআই রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তদন্ত শুরু করেছি এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। নিহতের মরদেহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।’

এদিকে হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে স্থানীয় বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা পল্লবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।