জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে আইনি নোটিশ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় © টিডিসি সম্পাদিত

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ভাইস-চ্যান্সেলর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও রেজিস্ট্রারের বরাবর লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মিঠুন সাহা। রবিবার (১৬ নভেম্বর) তিনি দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

নোটিশে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৩য় বর্ষের ফলাফল প্রকাশের পর একাধিক শিক্ষার্থী সন্তোষজনক ফলাফল না পাওয়ায় যথাযথ ফি দিয়ে পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেছেন। কিন্তু পুনঃনিরীক্ষণের ফলাফল ও মূল ফলাফলের মধ্যে বিরাট অমিল দেখা গেছে। এতে একাধিক শিক্ষার্থীর খাতা মূল্যায়নে অনিয়ম, ত্রুটি ও অবহেলা সংঘটিত হয়েছে। নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পুনঃনিরীক্ষণের ফলাফল এমনকি অবাস্তব ও অকল্পনীয়, যা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ও শিক্ষাজীবনের উপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে। 

মিঠুন সাহা বলেন, ‘এই ধরনের অনিয়ম শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে পারে এবং সঠিক মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে স্বচ্ছ তদন্ত করতে হবে।’

নোটিশে দুটি শিক্ষার্থীর উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে। প্রথম শিক্ষার্থী মো. মেহেদী হাসান (রাজশাহী, দাউকান্দি কলেজ, রেজিঃ ২০২২০১৪১৫৮৬) মূল ফলাফলে চারটি বিষয়ে ফেল করেছেন। কিন্তু পুনঃনিরীক্ষণে তিনটি বিষয়ে C+ এবং একটিতে C পেয়েছেন, অর্থাৎ চারটি বিষয়েই উত্তীর্ণ হয়েছেন। দ্বিতীয় শিক্ষার্থী মিতু আক্তার (ফরিদপুর, রাজেন্দ্র কলেজ, রেজিঃ ২০২৩৭৩৩৭২৮২) একটি বিষয়ে ফেল করেছেন, পুনঃনিরীক্ষণে সেই একই বিষয়ে A+ পেয়ে মূল ফলাফলকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। এ ধরনের ফলাফল মূল মূল্যায়নের যথার্থতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে তীব্র সন্দেহ সৃষ্টি করছে।

আরও পড়ুন: অনার্স ৪র্থ বর্ষের উত্তরপত্র পুনঃর্মূল্যায়নের আবেদনের সুযোগ, প্রতিপত্র ফি ১২০০

পুনঃনিরীক্ষণের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি বিষয়ে ১,২০০ টাকা ফি দিতে হয়। অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম না হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী পুনঃনিরীক্ষণের সুযোগ পান না। নোটিশে বলা হয়েছে, এভাবে অর্থনৈতিক সামর্থ্যভিত্তিক পুনঃনিরীক্ষা শিক্ষার্থীদের জন্য বৈষম্যমূলক ও অযৌক্তিক।

অ্যাডভোকেট মিঠুন সাহা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ নোটিশে লেখেন, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে উত্তরপত্র মূল্যায়নে অসঙ্গতি, অনিয়ম ও অবহেলা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। তিনি জানান, যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, শিক্ষার্থীরা দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবেন।

এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট মিঠুন সাহা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খাতা পুনঃনিরীক্ষণের জন্য অতিরিক্ত অর্থ দিতে হচ্ছে এবং পুনঃনিরীক্ষণের পর ফলাফল পরিবর্তিত হওয়ায় মূল মূল্যায়নের স্বচ্ছতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। 

তিনি বলেন, এটি শিক্ষার্থীদের প্রতি যথাযথ মূল্যায়ন নয়। তাই শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো আমার নৈতিক দায়িত্ব। 

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং যারা পুনঃনিরীক্ষণের সুযোগ পাচ্ছেন না, তারা ফলাফলের সঠিকতা জানার ক্ষেত্রে দুর্ভোগের মুখে পড়ছেন। 

মিঠুন সাহা জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় যদি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয় এবং শিক্ষার্থীরা চায়, তবে পরবর্তীতে তিনি হাইকোর্টে রিট করবেন।