চবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা সেই যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার
- ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৯:২১
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাসহ বিভিন্ন ঘটনায় আলোচিত হাটহাজারীর জোবরা গ্রামের যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ হানিফ ওরফে হানিফ গংকে গ্রেপ্তার করেছে হাটহাজারী থানা পুলিশ। রবিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাটহাজারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া। তিনি বলেন, রবিবার বিকেল ৫টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জুলাই আন্দোলনে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও ফতেপুর ইউনিয়নের ‘মাফিয়া’ হয়ে ত্রাসের রাজত্ব করে আসছিল এই যুবলীগ। তার অন্যতম সহযোগী ছিলেন তার ছোট ভাই ইকবাল, যিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। মাদক ব্যবসা, গাছ বিক্রি, চাঁদাবাজি, স্থানীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং অবৈধ দখলদারিত্ব করে এলেও দীর্ঘদিন অদৃশ্য কারণে ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। অবশেষে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, হানিফ-ইকবাল চক্র দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা, গাছ চুরি-বিক্রি, চাঁদাবাজি, অবৈধ দখলদারি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের ওপর হামলা চালিয়ে আসছিল। হাটহাজারীসহ বিভিন্ন থানায় ১০টির বেশি মামলা থাকলেও প্রভাব-প্রতিপত্তি ও ‘ম্যানেজমেন্টের’ কারণে তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন।
আরও পড়ুন: সংগ্রহ হতে যাওয়া শূন্য পদের ব্যবহারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়–এনটিআরসিএর ভিন্ন মত
গত বছরের ২১ অক্টোবর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন এলাকায় দোকান দখল নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় হানিফের অনুসারীরা। এতে পাঁচ শিক্ষার্থী আহত হন। চলতি বছরের ৩১ আগস্ট রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ৭০ শিক্ষার্থী আহত হন, যা শুরু হয় একজন ছাত্রীকে মারধরের ঘটনার জেরে। এই হামলার অন্যতম ইন্ধনদাতাও ছিলেন এই হানিফ। ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব ঘটনায় পৃথক মামলা করে, যেখানে তাকে আসামি করা হয়।
স্থানীয়দের মতে, চবি রেলস্টেশন সংলগ্ন রেলওয়ের জায়গায় থাকা অধিকাংশ দোকানের নিয়ন্ত্রণ ছিল হানিফের হাতে। দোকান পরিচালনা করতে নিয়মিত চাঁদা দিতে হতো তাকে। ফতেপুর ইউনিয়ন ও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নতুন কোনো দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করতে হলেও নিতে হতো তার ‘অনুমতি’। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে মারধর, ভাঙচুর ছিল নিয়মিত ঘটনা।