সনদ বাস্তবায়নের দাবিসহ আ.লীগের অবরোধের জবাবে জুলাই ঐক্যের কর্মসূচি
- ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:৩৯
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে আগামী ১২ নভেম্বর ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেটে বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দিয়েছে ‘জুলাই ঐক্য’ নামে একটি প্লাটফর্ম। সেই সাথে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের অবরোধ কর্মসূচির জবাবে ও প্রশাসনের বিতর্কিত ভূমিকার প্রতিবাদে আগামী ১৩ নভেম্বর দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে তারা।
সোমবার (১১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন জুলাই ঐক্যের প্রধান সমন্বয়ক মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ।
এ সময় তিনি বলেন, আগামী ১২ নভেম্বর খুনি হাসিনার ফাঁসি ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দাবিতে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেটে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া ১৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগের নৈরাজ্য ও প্রশাসনের বিতর্কিত ভূমিকার প্রতিবাদে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হবে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ সারাদেশে অগ্নিসংযোগ, বোমা বিস্ফোরণসহ সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালাচ্ছে। প্রশাসনের নীরব ভূমিকা এসব ঘটনার সহায়তা করছে।
মোসাদ্দেক বলেন, আগামী ১৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে খুনি হাসিনার মামলার রায় ঘোষণার তারিখ ঘিরে রাজধানীতে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আর আগামী জাতীয় নির্বাচন জুলাই সনদের ভিত্তিতেই হতে হবে। এর বাইরে কোনো সমঝোতা ছাত্র-জনতা মেনে নেবে না। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো দ্রুত সিদ্ধান্ত না নিলে রাজপথ থেকেই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা হবে।
এছাড়া, সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জুলাই ঐক্যের সংগঠক প্লাবন তারিক। এসময় তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও তাদের সহযোগীরা অগ্নিসংযোগ, বোমা বিস্ফোরণসহ সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালাচ্ছে। ১৪০০-এর অধিক ছাত্রজনতা শহিদ ও ৩২ হাজার আহত হওয়ার পর স্বৈরাচারী হাসিনার পতন ঘটলেও গণহত্যাকারীদের বিচার প্রক্রিয়া এখনও বিলম্বিত।
আরও পড়ুন: ‘যতবার শেখ হাসিনার নাম মুখে আসে, মনে রাখবেন তা কেবল ঘৃণা থেকে’
জুলাই ঐক্যের নেতারা জানান, আগামী ১৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল খুনি হাসিনার রায়ের তারিখ ঘোষণা করবে। এর আগে প্রশাসনের নীরবতা সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসীরা বাসে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, যে সব পুলিশ ও প্রশাসন কর্মকর্তাদের হাতে শহিদ ভাইবোনদের রক্ত লেগে আছে, যারা গুম-খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল, তারা আজও বহাল পদে রয়েছেন। এটি দেশের জন্য লজ্জাজনক।
নেতারা অভিযোগ করেন, আদালত গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের জামিন দিচ্ছে, অথচ এখনও ১১৪ জনের লাশ গণকবরে অজ্ঞাত অবস্থায় রয়েছে। একই সঙ্গে তারা উল্লেখ করেন, শিক্ষকরা এখনও রাস্তায় পুলিশের হামলার শিকার হচ্ছেন যা বৈষম্যের অবসানের মূল চেতনার পরিপন্থি।
রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে জুলাই ঐক্যের পক্ষ থেকে বলা হয়, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ও সরকারের মধ্যে চরম অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। সরকার আলোচনার জন্য সাত দিনের সময় বেঁধে দিলেও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
জুলাই ঐক্যের দাবি, আগামী জাতীয় নির্বাচন হতে হবে জুলাই সনদের ভিত্তিতে। এর বাহিরে কোনো প্রকার যদি, কিন্তু, অথবা এসব বিষয় ছাত্রজনতা গ্রহণ করবে না। অবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত না নিলে শহিদ পরিবার, আহত এবং জুলাইয়ের ছাত্র জনতাকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথ থেকেই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা হবে। ভারতের তৈরি ৭২-এর মুজিববাদী সংবিধান দিয়ে চব্বিশ পরবর্তী বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।