বিদেশে উচ্চশিক্ষা

জেনে নিন বিশ্বের সেরা ৬ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে

বিদেশে পড়াশোনা করতে আগ্রহীরা জেনে নিন বিশ্বসেরা ৬ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে
বিদেশে পড়াশোনা করতে আগ্রহীরা জেনে নিন বিশ্বসেরা ৬ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে © সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় প্রতিযোগিতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও মানবকল্যাণে অবদান রেখে প্রতি বছর কিছু প্রতিষ্ঠান নিজেদের মেলে ধরে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ হিসেবে। আন্তর্জাতিক র‍্যাংকিং সূচকে এবারও যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শীর্ষস্থান দখল করেছে। আজ আমরা টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাংকিং-২০২৬-এর তালিকায় উঠে আসা বিশ্বের সেরা ৬ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জানব। 

১. ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড (University of Oxford)

ব্রিটেনের ঐতিহ্যবাহী এই বিশ্ববিদ্যালয়টি টানা দশমবারের মতো শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। এর সাফল্যের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ অ্যাকাডেমিক ঐতিহ্য, গভীর গবেষণা সংস্কৃতি ও আন্তবিষয়ক সহযোগিতা। বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন ও বায়োমেডিকেল গবেষণায় অক্সফোর্ডের ভূমিকা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। হাজার বছরের প্রাচীন এ প্রতিষ্ঠান এখনো আধুনিক গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছে।

পৃথিবীর সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়। ৩১টি কলেজ নিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়ে থাকে। উচ্চাকাঙ্ক্ষী মানুষদের কাছে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি এক স্বপ্নের নাম।

আরও পড়ুন: বিদেশে উচ্চশিক্ষা: জেনে নিন যুক্তরাষ্ট্রের ফুল-ফ্রি ১৬ স্কলারশিপ সম্পর্কে

২. ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)

প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের নাম উচ্চারিত হলেই যুক্তরাষ্ট্রের এমআইটির নাম আসে সবার আগে। কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, জেনারেটিভ এআই ও রোবোটিকস—এই তিন ক্ষেত্রেই প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বসেরা অবস্থান ধরে রেখেছে।

এ বছর এমআইটি গবেষণায় অক্সফোর্ডের কাছাকাছি স্কোর অর্জন করেছে এবং শিল্প খাত থেকে ১.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার গবেষণা তহবিল সংগ্রহ করে রেকর্ড গড়েছে। ১৮৬১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে শিল্পায়ন বৃদ্ধির সময় প্রতিষ্ঠিত হয় এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। 

৩. ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ

বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ও মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় এবারও শীর্ষ সারিতে। ইংরেজি ভাষাভাষী বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি পৃথিবীর দ্বিতীয় প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়। পৃথিবীর সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এটি তৃতীয় প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়। ইউনিভার্সিটি অব ক্যামব্রিজ প্রতিষ্ঠিত হয় মূলত ১২০৯ সালে।

এর ঐতিহ্যবাহী কলেজভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা, গবেষণায় উদ্ভাবন এবং একাডেমিক উৎকর্ষ প্রতিষ্ঠানটিকে অনন্য করেছে।

মানবস্বাস্থ্য, জেনেটিকস ও পরিবেশবিজ্ঞান–এই তিন খাতে কেমব্রিজের অবদান এখন বৈপ্লবিক পর্যায়ে পৌঁছেছে।

৪. প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি

গবেষণার মান, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং একাডেমিক অবদানের জন্য প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় এ বছর তার ইতিহাসে সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠেছে। নোবেলজয়ী অধ্যাপক ও বিশ্বব্যাপী অংশীদারত্বের কারণে প্রতিষ্ঠানটির প্রভাব আরও বেড়েছে।রেটিং স্কোরে প্রিন্সটন ও কেমব্রিজ যৌথভাবে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির প্রিন্সটনে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি অবস্থিত। এ বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৭৪৬ সালে কলেজ অব নিউ জার্সি নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। আমেরিকান বিপ্লবের আগে প্রতিষ্ঠিত কলোনিয়াল ৯টি কলেজের মধ্যে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় একটি। 

আরও পড়ুন: জেনে নিন বিশ্বসেরা ১০ ফুল-ফ্রি স্কলারশিপ সম্পর্কে

৫. হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়

উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রাচীন প্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষা, গবেষণা ও নীতি-নির্ধারণে হার্ভার্ডের প্রভাব বিশ্বের প্রায় সবখানেই অনুভূত হয়। প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে প্রভাবশালী এই বিশ্ববিদ্যালয় এ বছরও শিক্ষাদান ও উদ্ধৃতি সূচকে উচ্চ অবস্থান ধরে রেখেছে। জননীতি, ব্যবসা, অর্থনীতি ও সামাজিক বিজ্ঞানে হার্ভার্ডের অবদান এককথায় অসাধারণ। রেটিং অনুযায়ী হার্ভার্ড ও স্ট্যানফোর্ড যৌথভাবে পঞ্চম স্থানে রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৬৩৬ সালে। পৃথিবীর অনেক জ্ঞানীগুণী মানুষের জন্ম হয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। নোবেল বিজয়ী থেকে শুরু করে পৃথিবীর বড় বড় সব পুরষ্কার বিজয়ীদের অনেকেই লেখাপড়া করেছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে।  

৬. স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়

উদ্ভাবন ও গবেষণার প্রতীক স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়োমেডিকেল ও সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছে। সিলিকন ভ্যালির হৃদয়ে অবস্থিত হওয়ায় শিল্পখাতের সঙ্গে এর সংযোগ গভীর, যা শিক্ষার্থীদের বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনে সহায়তা করে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও গবেষণার বৈচিত্র্য স্ট্যানফোর্ডকে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৮৫ সালে। ১৮৯১ সালের ১ অক্টোবর ৫৫৫ জন ছাত্র নিয়ে এ প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। ১৯০৫ সালে এক ঘূর্ণিঝড়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরবর্তীতে ১৯০৬ সালে তা পুনরায় প্রতিষ্ঠা করা হয়।